সতর্কতা জরুরি
- ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০৫
দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে। ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমপরিমাণ রিজার্ভ থাকা জরুরি হলেও বাংলাদেশের রিজার্ভ সেই ঝুঁকিমুক্ত সীমার নিচে নেমে গেছে। পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক সেটি স্পষ্ট হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য থেকে। গত সোমবার রাতে প্রকাশিত সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন বাংলাদেশের মোট যা রিজার্ভ আছে তা দিয়ে দুই মাস তিন সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। আর নিট রিজার্ভ দিয়ে মেটানো যাবে দুই মাসেরও কম সময়ের আমদানি ব্যয়। সংস্থাটি বলছে, প্রকৃত বা নিট রিজার্ভ তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান করতে হলে বাংলাদেশকে দীর্ঘ তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য এসব হিসাব মানতে নারাজ। তবে অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে স্পষ্ট, পরিস্থিতি সত্যি উদ্বেগের। যদিও সম্প্রতি রিজার্ভ সামান্য বৃদ্ধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তা সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার মতো নয়। দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের প্রধান দু’টি খাত রেমিট্যান্স ও রফতানির মাধ্যমে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ হচ্ছে তা চলতি আমদানি দায় শোধ করতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে আছে দেশী-বিদেশী বিপুল বকেয়া। এখন প্রতি মাসে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। আগামী মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিংয়ের দায় পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধের তাগিদ রক্ষা করতে না পারায় কোম্পানিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বকেয়া বৈদেশিক দেনা থাকায় রিজার্ভ বাড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। লেনদেন ভারসাম্যের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত সত্ত্বেও আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি বেড়ে ১৩০ কোটি ৩০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
আইএমএফের কাছ থেকে আগামী ডিসেম্বরের কিস্তি ছাড়ে রিজার্ভ বাড়াতে হবে। ডলারের দাম পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করতে হবে। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাজারে টাকার প্রবাহ আরো কমাতে হবে। এসব শর্ত পূরণ করতে গেলে কী প্রভাব পড়বে সেটি উদ্বেগের কারণ। রিজার্ভ বৃদ্ধির খাতগুলো ভালো করছে না। রফতানিতে প্রবৃদ্ধি সামান্য। রেমিট্যান্সেও একই অবস্থা। এখন ভরসা আইএমএফের তৃতীয় কিস্তিতে ১১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাওয়ার সম্ভাবনা। এ অর্থ রিজার্ভে যুক্ত হবে।
সরকারের তরফে যতই বলা হোক চিন্তার কিছু নেই, বাস্তবের চিত্র কিন্তু মহা দুশ্চিন্তার আভাস দেয়।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়টি আমাদের অর্থনীতিতে বড় ফ্যাক্টর। বিষয়গুলো প্রকাশে এবং ঘরোয়া আলোচনায় উঠে আসছে সব স্তরের মানুষের মধ্যে। সরকার সম্প্রতি বোধগম্য কারণে নিকট প্রতিবেশী ভারতের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি চুক্তির ন্যূনতম সম্ভাবনা ছাড়াই তিস্তা প্রকল্পে ভারতের সম্পৃক্ততা মেনে নিয়েছে। এর ফলে চীনের কাছ থেকে আপৎকালে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার দরোজা বন্ধ হতে পারে। সবাই জানেন, বাংলাদেশকে সঙ্কট উত্তরণে আর্থিকভাবে সাহায্য করার সামর্থ্য সদিচ্ছা কোনোটিই ভারতের নেই; বরং নানাভাবে বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের সতর্কতা জরুরি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা