ডিজিটাল দেশে এটা কি সম্ভব?
- ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০৫
হাওরের কৃষকদের ধান কাটা শেষ। ঈদ সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে চলছে নতুন ধান কেনাবেচা। দাম ঠিক করেছেন পাইকাররা। পাইকারকে ‘দালাল’ বলে অভিহিত করেন স্থানীয় বিক্রেতারা। নয়া দিগন্তের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কৃষকের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফসল ধান বিক্রির সময় ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’তে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। ধান ক্রয়ের আগে কৃষকের গোলা ধানশূন্য হচ্ছে। শ্রমিকের মজুরি ও মহাজনের ঋণ শোধ করতে ধান কাটার সাথে সাথে কম দামে বিক্রি করতে হয়। সরকারিভাবে ধান ক্রয় অভিযান শুরুর আগে কৃষকরা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে (প্রতি মণ) ধান বিক্রি করে দিয়েছেন ব্যাপারীদের (দালাল) কাছে। সরকারিভাবে সুনামগঞ্জে ২৯ হাজার ১১ টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৩২ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ধান ১২৮০ টাকায় ক্রয় করা হবে খাদ্যগুদামে।
অনেক কৃষকের অভিযোগ, দালাল চক্র কৃষকদের কার্ড সংগ্রহ করে তাদের নামে ধান বিক্রি করেন। কিন্তু কার্ডধারী কৃষককে সামান্য টাকা দিয়ে থাকেন। ইউনিয়নভিত্তিক পয়েন্টে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের দাবি জানান কৃষক।
কৃষকরা সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের কথা জানেন না। বৈশাখে উৎপাদিত ধান বিক্রিতে ঠকছেন, জীবন বাঁচাতে কৃষকদেরই চাল কিনতে হয় বেশি দামে। ‘শাঁখের করাতে’ তাদের জীবন বন্দী। বহুমুখী ভোগান্তি ও প্রতারণা তাদের পিছু ছাড়ছে না।
সরকারি সংগ্রহের আগে দালাল বা কয়ালরা গ্রামে গিয়ে ধান মাপতে বিশেষ ‘গণনানীতি’ ব্যবহার করেন। দালালরা ধান মাপার শুরুতে অঙ্কের ‘লাভে রে লাভ, লাভে রে লাভ (এক), দুইয়া, তিনেরে, চাইরো, এভাবে ‘নাইশা’ (উনিশ), ‘উনদিশা (ঊনত্রিশ), আইনচা (ঊনচল্লিশ), চাইলা (চল্লিশ) পর্যন্ত বিকৃত উচ্চারণ করে। এতে যুগের পরে যুগ ধান বিক্রিতে হাওরের সরল কৃষকরা ঠকছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ধান ক্রয়-বিক্রয়ে এখনো দাঁড়িপাল্লা ব্যবহৃত হয়। কিছু কিছু মিটারেও মাপা হয়; তবে মিটারে ৪২ পয়েন্টে মণ হয়। কৃষকরা জানান, কয়াল-দালালরা এক তালে ‘চল্লিশ পাল্লা’ বা পাঁচ মণ ধান মাপার পর দৃশ্যমানভাবেই প্রায় দুই কেজি ধান অতিরিক্ত নেন।
হাওরের ধান, মৎস্য ও পাথর সম্পদ দিয়ে হাওরবাসী আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে যে জোগান দেন, তার আংশিকও ব্যবহার করা হলে তাদের অনেক সমস্যার সমাধান হতো বলে জানান কৃষকরা। ‘বাংলার শস্যভাণ্ডার’ হাওর ভাটি অঞ্চল সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও মৌলভীবাজার, সিলেট ও বি.বাড়িয়া জেলাগুলো নিয়ে গঠিত, যার আয়তন প্রায় পাঁচ হাজার বর্গমাইল। হাওর এলাকায় প্রায় দুই কোটি লোক বাস করেন। হাওরে একটি ফসল শুধু ধান চাষ করা হয়। দেশের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ধান এ হাওরে উৎপাদিত হয়। ধান কেনার দালাল কয়াল রমিজ আলী বলেন, আমরা মাপে কারচুপি করি না। ধান কাটার সময় কৃষকের হাতে টাকা থাকে না। তারা কম দামে ধান বিক্রি করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মঈনুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে প্রতি কেজি ধান ৩২ টাকা দরে প্রতি মণ ১২৮০ টাকা নির্ধারণ হয়েছে। লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে। কার্ডধারী কৃষকদের থেকে আর্দ্রতা ও গুণগতমান দেখে ধান ক্রয় করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা