বিনিয়োগকারীদের বাঁচান
- ২১ মার্চ ২০২৪, ০০:০৫
দেশের শেয়ারবাজারে গত আড়াই মাস ধরে টানা দরপতন হচ্ছে। গত মঙ্গলবার নজিরবিহীন ধস নামে। গতকাল সূচক নেমে আসে ২০২১ সালের ২৩ মে’র পর সর্বনিম্ন অবস্থানে। গত ১৩ মার্চ ঢাকা পুঁজিবাজারের সূচক ৬ হাজার পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার (সাইকোলজিক্যাল ব্যারিয়ার) নিচে নেমে আসে। এরপর বাজারে দরপতন তীব্রতর হয়। গত মঙ্গলবার ঢাকার বাজারে লেনদেন হয় গত আড়াই মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। শেয়ার লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১ শতাংশের দর পড়ে যায়। বাড়ে মাত্র ১০ শতাংশের। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করছেন বেশি। এ কারণে এখন ভালো শেয়ারের দাম কমে যাচ্ছে, কিন্তু কেনার লোক নেই। ফলে দরপতন থামছে না। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্বল্পপুঁজির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে যখন লাগাতার আন্দোলনে নামার হুমকি দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধনে তারা বলেছেন, দুই-তিন দিনের মধ্যে শেয়ারবাজারে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারলে লাগাতার আন্দোলনে নামবেন তারা। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর সমিতি (ডিবিএ)।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা যখন আতঙ্কিত হন, তখন বাজারে দরপতনের কোনো যৌক্তিক কারণ আর কাজ করে না। তবে তাদের ধারণা, কোনো একটি গোষ্ঠী নানা গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের হয়তো বিভ্রান্ত করছে। কোনো গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে কিনা, খতিয়ে দেখা দরকার।
এই খতিয়ে দেখার কাজটি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক। এ জন্য বাজারে তদারকি জোরদার করা হয়েছে।
তবে পুঁজিবাজারে দরপতনের পেছনে মহলবিশেষের কারসাজি ছাড়াও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সম্পর্ক আছে। শেয়ারবাজার বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদের মতে, সার্বিক অর্থনীতির কারণেও দরপতন হচ্ছে। অনেক ব্যাংক এখন এফডিআরের বিপরীতে ১১ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এমনকি সরকারি বন্ডেও একই হারে সুদ মিলছে। ফলে নিরাপদ বিনিয়োগে মানুষ শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকা ব্যাংকে রাখছে বা সরকারি বন্ড কিনছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পুঁজিবাজারের এমডির বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার মনে করেন, সার্বিক অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের অভ্যন্তরীণ নানা কারণে দরপতন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে ভালো শেয়ার খুবই কম। নতুন শেয়ারও আসছে না। তার ওপর ভালো নীতিও নেই। শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী গ্রুপও নেই, যারা সঙ্কটে হাল ধরতে পারেন। এত ‘নেই’ এর পরও কিছু না করে অনেকে বলছেন, ‘পতন থামছে না কেন।’ বাস্তব কিছু না করে পতন থামানো যায় না।
বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধারণের পরামর্শ দেন। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি তাদের পরামর্শ, বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করার কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যাতে তারা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে না দেন।
আমাদের প্রত্যাশা, বিনিয়োগকারীদের বাঁচাতে দ্রুত বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা