স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী
- ১৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
রমজানের পাশাপাশি গরমের কারণে পানির চাহিদা বাড়লেও চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি সরবরাহ কমেছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। পাশাপাশি পানিতে অতিরিক্ত লবণাক্ততা বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। লবণাক্ততায় অনেকে পানিবাহিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় পেটের পীড়া, কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা শারীরিক জটিলটায় ভুগছেন অনেকে। হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর আধিক্যের তথ্য মিলেছে।
নয়া দিগন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যদিও দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রায় ১০ কোটি লিটার পানি কম উৎপাদন করছে। উৎপাদন কমে যাওয়ায় নগরজুড়ে চলছে পানির সঙ্কট। এ ছাড়া ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নগরীর বিভিন্ন বাসাবাড়ির ওভারহেড ট্যাংকে পানি তোলা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বাসাবাড়িতে রমজানের ইফতারি ও সাহরির রান্না-বান্না, অজু-গোসল, ধোয়ামোছার কাজ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নগরবাসী।
চট্টগ্রাম ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদন ক্ষমতা ৪৮০ এমএলডি (৪৮ কোটি লিটার) থাকলেও বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে ৩৭০-৪০০ এমএলডির কম (৩৭ হতে ৪০ কোটি লিটার)। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রিত সরবরাহের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। সংস্থার সূত্রে জানা যায়, জোয়ারের সময় হালদা নদীর পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ মিলেছে প্রতি লিটারে ২৬০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। অথচ পরিশোধিত পানিতে লবণাক্ততার সহনীয় মাত্রা হলো লিটারে সর্বোচ্চ ২৫০ মিলিগ্রাম। অস্বাভাবিক লবণাক্ততায় চট্টগ্রাম ওয়াসার মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট পানি শোধনাগার দৈনিক প্রায় ৮ ঘণ্টা উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন) মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, জোয়ারের সময় হালদা নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় এবং কাপ্তাই হ্রদের পানির ফ্লো না থাকায় ওয়াসার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। হালদা নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ওয়াসার মোহরা ও মদুনাঘাট পানি সরবরাহ প্রকল্পে ১০টি ডিপ টিউবওয়েলের পানির সাথে নদীর পানি ব্লেন্ড করে লবণাক্ততা সহনীয় মাত্রায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। হালদা নদীর পানিতে লবণাক্ততা প্রতি লিটারে ২০০০ মিলিগ্রাম প্লাস পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লবণাক্ততার সমস্যা প্রাকৃতিক কারণে, তাই টানা বৃষ্টিপাত ছাড়া এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। তা ছাড়া বিকল্প যে ডিস্যালাইনেশন প্রযুক্তি রয়েছে তার বাস্তবায়ন বেশ ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় গ্রাহকদের জন্য তা ব্যয়বহুল হয়ে যাবে।
পানিসঙ্কট ও অস্বাভাবিক লবণাক্ততার বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সাফাই গাইতে কসুর করছে না। বলছে, লবণাক্ততা বাড়ছে প্রাকৃতিক কারণে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নাগরিক পরিষেবা দেয়ার দোহাই দিয়ে পানির দাম বাড়াতে তাদের কার্পণ্য নেই। কিন্তু গ্রাহকদের স্বাস্থ্যসম্মত পানি সরবরাহ করতে যত গড়িমসি। পানি পরিশোধন করে ব্যবহার উপযোগী করা তো ওয়াসারই দায়িত্ব। কিন্তু এই দায়িত্ব প্রাকৃতিক কিংবা ব্যয়বহুল বলে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আছে কি? ওয়াসার দায়িত্ব হচ্ছে, গ্রাহকদের স্বাস্থ্যসম্মত এবং প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করা। এর জন্য সরকার এই সেবা প্রতিষ্ঠানটির পেছনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল অর্থ ব্যয় করে থাকে। তাই চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যর্থতার দায় কেন নাগরিকরা বহন করবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা