এর কারণ কী?
- ১০ মার্চ ২০২৪, ০১:০৩
দৈনিক নয়া দিগন্তের পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, করতোয়াসহ পঞ্চগড়ের প্রায় সব নদীতেই বোরো আবাদ হচ্ছে। নদীর বুকে পলি জমে আবাদযোগ্য জমিতে রূপ নিয়েছে। নতুন পলিমাটিতে বোরো ধান, রসুন, পেঁয়াজ, বাদাম, তিল, পাট, ভুট্টা ও গমসহ শাকসবজির চাষ হচ্ছে। নদীর বুকে বাতাসে দোল খাওয়া বোরো ধানের সবুজ ক্ষেত দেখলে মন ভরে যায়। তবে, পানিশূন্য নদীর বুক বেদনারও উদ্রেক করে। তখন মন বিষাদে ছেয়ে যায়।
পরিবেশবিদরা বলেন, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে রূপ নিতে চলেছে। খরা মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে। এ কারণে নদীর বুকে সবুজ ধান দোলা দিলেও আবাদি জমিগুলো ফসলহীন। পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবনে এসেছে দুর্ভোগ। নদীর বুকে ফসলের সমারোহ থাকলেও সাধারণ কৃষিজীবীদের ভাগ্য এতে খুলছে না। ফারাক্কা বাঁধের কারণে পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের শতাধিক নদী এখন পানিশূন্য। নদীগুলো মরে যাচ্ছে। কোনো কোনো নদীর বুকে পানির ক্ষীণধারা চলমান থাকলেও সেটি নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে পারছে না। ইতোমধ্যে নদী আবাদি জমিতে রূপ নিচ্ছে। নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে বোরো ধানসহ নানা জাতের সবজি।
৪০ বছর আগেও এই করতোয়া নদীর বুকে শুকনো মৌসুমেও টলমল করত পানি। নদীতে স্রোত ছিল, সারা বছর পালতোলা নৌকা চলত। এখন পলিমাটি জমে জমে ভরাট হয়ে আবাদি জমিতে রূপ নিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে উজান থেকে আসা পানির স্রোত। এতে করে নদীপারের জীবনযাত্রায় পড়েছে নৈতিকতার প্রভাব। পরিবেশ, কৃষি ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের জীবন আর নদীকেন্দ্রিক নেই। গোয়ালপাড়ার আইয়ুব আলী জানান, নদীর বুকে প্রায় ৫০ শতক জমিতে বোরো চাষ করেছেন। সেই ধানে সারা বছরের খাবার হয়ে যায়। ডাহুক নদীতে বোরো ধানের চাষ করেছেন মাঝিপাড়ার ইসহাক আলী, জালাল উদ্দীন ও হেলাল। নদীনির্ভর পরিবারগুলো এভাবেই নদীর বুকে কৃষিনির্ভর হয়ে উঠছে। অনেকে নদীর বুকে রসুন, পেঁয়াজ, আলু ও গমের চাষ করেছেন। কেউ মিষ্টিকুমড়া, লাউ, তিল ও কাঁচামরিচের আবাদ করেছেন। কারো ভুট্টার ক্ষেতে ঢেউয়ের মতো বয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ হাওয়া। অনেকে লাফাশাক, লালশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাকের চাষ করেছেন। এসব শাক বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন। প্রবহমান নদীগুলোর মধ্যে করতোয়া, ডাহুক, টাংগন, চাওয়াই, মহানন্দা, পাথরাজ, তিরনই, বুড়ীতিস্তাসহ প্রায় ২৯টি নদীতে বর্ষা মৌসুমে স্রোতোধারা প্রবহমান থাকলেও শুকনো মৌসুমে সব নদীর স্রোতই বন্ধ হয়ে যায়। অনেকেই বলছেন, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ নদীই এখন মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
পরিবেশবিদরা মনে করেন, খরা ও মরুর প্রভাব দূর করার জন্য হারিয়ে যাওয়া নদীগুলোর প্রবাহ নিশ্চিত করা জরুরি। রিভারাইন পিপল বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এ অঞ্চলের নদীগুলো কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের একটি অভাবনীয় ইতিবাচক ফল বয়ে আসে। পঞ্চগড়ে নদীগুলোতে পানির প্রবাহ না থাকায় পশুপাখি জীবজন্তুর ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। নদীর আশপাশের জমির মালিক ও চাষিরা নদীকেন্দ্রিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
আমরাও মনে করি, নদীগুলোকে আর হারিয়ে যেতে দেয়া যায় না। কারণ, তাহলে সবারই ক্ষতি। এ ক্ষতি অপূরণীয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা