২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
শতবর্ষী মিরসরাই স্টেশন নীরব

অবিলম্বে নজর দিন

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, একসময়কার ব্যস্ততম রেলস্টেশনটি সুনসান নীরব। স্টেশন বন্ধ থাকায় থামে না ট্রেন। নেই কোলাহল। ১৫ বছর ধরে অযতেœ পড়ে রয়েছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের শতবর্ষী মিরসরাই রেলস্টেশন। বন্ধ হওয়ার পর চুরি হয়ে যাচ্ছে স্থাপনা ও মূল্যবান মালামাল। পুনরায় চালু হবে এ স্টেশন এমন আশায় স্থানীয়রা।
জনমানবহীন স্টেশনের কক্ষগুলোতে গরু-ছাগল পালন, জুয়ার আসর, মাদকসেবীর আড্ডাসহ অনিয়ম। স্টেশনটি বন্ধ হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রেলওয়ের সরঞ্জাম। বেদখল অনেক জায়গা। রেলস্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পাহারাদার চোখে পড়েনি।
১৮৯৫ সালের ১ জুলাই কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১৪৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হয়েছিল। ব্রিটিশ আমল থেকে স্টেশনগুলোতে নিয়মিত ট্রেন থামত। উপজেলার মানুষ ছিল ট্রেননির্ভর। ভ্রমণ, সবজি, ফলমূল আমদানি-রফতানিসহ জরুরি কাজে ট্রেনই ছিল প্রিয়। এসব স্টেশন থেকে ভারত-পাকিস্তানে মালামাল আনা-নেয়া হতো। ২০০৮ সালে আয় কমে যাওয়া ও লোকজন সঙ্কটে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মিরসরাই সদর রেলস্টেশনে উন্নয়ন কার্যক্রম শেষে স্টেশনটি চালু হওয়ার জন্য আধুনিক সিগন্যালিং; নতুন ডিজিটাল কক্ষ, লাইন সংস্কারসহ আধুনিকায়ন শেষ হওয়ার পর থেমে গেছে কার্যক্রম। তালিবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, স্টেশনটি যখন চালু ছিল, গোডাউনের মালামাল, আখাউড়ার কাঁঠাল, সিলেটের কাঁঠাল আনা-নেয়া হতো। জমজমাট ছিল। স্টেশনটি বন্ধ হওয়ার পর দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের যাতায়াতের জন্য এই স্টেশন ছিল অন্যতম মাধ্যম।
চট্টগ্রাম শহরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ফয়সাল মাহমুদ বলেন, বাপ-দাদারা ট্রেনযোগে চলাচল করতেন। স্টেশনটি চালু হলে মানুষের উপকার হতো।
চিনকি আস্তানার স্টেশন মাস্টার সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি স্টেশন বন্ধ থাকলে পরবর্তী স্টেশনটির সাথে পেপার সিগন্যাল পাওয়া যায় না। ফলে ট্রেন নির্দিষ্ট গতিতে চলাচল করতে পারে না। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে রেল যেতে বিলম্ব হয়। স্টেশনটি খুব তাড়াতাড়ি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মিরসরাই বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল আবছার বলেন, দক্ষ জনবল সঙ্কটের পাশাপাশি বন্ধ স্টেশনের কারণে গতি হারায় ট্রেন। রেলওয়ের শত বছরের স্টেশনটি চালু হলে আয় বাড়ার পাশাপাশি এলাকাবাসী সেবা পাবে। স্টেশনটি পুনরায় চালু হবে এটাই প্রত্যাশা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম (পূর্ব) মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, লোকবল স্বল্পতায় দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনটি বন্ধ। গুরুত্ব বিবেচনা করে বন্ধ হওয়া বিভিন্ন স্টেশন চালু হওয়ার কথা। আশা করছি, স্টেশনটি চালু হবে।


আরো সংবাদ



premium cement