দাম্পত্য জীবনে আস্থার প্রতিফলন
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
পরিবার পৃথিবীর প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। একজন নারী ও একজন পুরুষ মিলে এর গোড়াপত্তন। বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের পারিবারিক জীবনের পথচলা শুরু। বিয়ে নারী-পুরুষের ধর্মীয় ও সামাজিক চুক্তি যা এখনো মানবধারা অব্যাহত রাখার টেকসই উপায়। দাম্পত্য জীবনের একমাত্র বৈধ পথ। লক্ষণীয়, এখনো বিশ্বব্যাপী বিয়ে প্রথা একমাত্র সর্বজনীন স্বীকৃত প্রথা।
কিন্তু পশ্চিমা দুনিয়ায় বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের মতো আমাদের দেশেও অনেকের বিয়ে প্রথার প্রতি অনীহা দিন দিন বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ- তারা সন্তান লালন-পালনের মতো দায়িত্ব এড়িয়ে জৈবিক চাহিদা পূরণে বিশ্বাসী। অথচ কোনো মানব-মানবীর জন্য এটি সম্মানজন নয়।
বিয়ে নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে সুখবর রয়েছে। সংস্থাটির সর্বশেষ জরিপের তথ্যমতে- দেশে বিয়ের হার বেড়েছে। তবে পরিসংখ্যানে বিয়েবিচ্ছেদের হার বেড়ে যাওয়ার মতো নেতিবাচক খবরও রয়েছে। একটি সহযোগী দৈনিকের প্রধান প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিবিএসের তথ্যমতে, দেশে ২০২২ সালে সাধারণ বিয়ের হার পাওয়া গেছে ২৫-এর কিছু বেশি। ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে ওই বছর যত জনের বিয়ে হয়েছে, সেটি সাধারণ বিয়ের হার। এ হার ২০২১ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৫। এর আগের বছরগুলোতে ছিল ১৭-২১-এর মধ্যে। সাধারণ বিয়ের হারে নারী-পুরুষের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। জরিপে নারী ও পুরুষরা প্রথম বিয়ে কত বছর বয়সে করেছেন, তার একটি গড় হিসাব উঠে এসেছে। বিবিএসের জরিপ, পুরুষের বিয়ের গড় বয়স ছিল ২৪ বছর। নারীর ক্ষেত্রে তা ১৮ দশমিক ৪ বছর। শহরে পুরুষ ও নারীদের প্রথম বিয়ের গড় বয়স একটু বেশি। গ্রামে কম।
তালাক বা বিয়েবিচ্ছেদের দুই ধরনের হার বিবিএসের জরিপে পাওয়া যায়। একটি স্থূল, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার অনুপাতে বিয়েবিচ্ছেদের হার। অন্যটি সাধারণ বিয়েবিচ্ছেদের হার, যেখানে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের হিসাব করা হয়। বিবিএসের হিসাবে, ২০০৬-২০২১ সাল সময়ে স্থূলবিচ্ছেদের হার শূন্য দশমিক ৬ থেকে ১ দশমিক ১-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। ২০২২ সালে তা বেড়ে ১ দশমিক ৪-এ দাঁড়ায়। ২০২১ সালে নারীদের সাধারণ বিয়েবিচ্ছেদের হার ছিল ২-এর সামান্য কম। পরের বছর তা বেড়ে ৩ দশমিক ৬-এ দাঁড়ায়। একইভাবে পুরুষের ক্ষেত্রে হারটি ২০২১ সালে ছিল ২-এর সামান্য বেশি। পরের বছর তা বেড়ে ৩ দশমিক ৮-এ দাঁড়ায়। বিবিএসের পরিসংখ্যানের বাইরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের তথ্য বলছে, বিয়েবিচ্ছেদের আবেদন সাধারণত বেশি করেন নারীরা। ২০২২ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট বিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে সাত হাজার ৬৯৮টি। এর মধ্যে স্ত্রীরা আবেদন করেছিলেন পাঁচ হাজার ৩৮৩টি, যা মোট আবেদনের ৭০ শতাংশ। ঢাকা উত্তরের চিত্রও প্রায় একই। সেখানে বিয়েবিচ্ছেদের আবেদনের ৬৫ শতাংশ নারীর।
বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বড় কারণ বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক; প্রায় ২৩ শতাংশ। এরপর রয়েছে দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতা, ২২ শতাংশ। ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে অসামর্থ্য অথবা অস্বীকৃতি, পারিবারিক চাপ, শারীরিক নির্যাতন, যৌন অক্ষমতা বা অনীহা ইত্যাদিও রয়েছে বিয়েবিচ্ছেদের কারণের তালিকায়।
২০২২ সালে সাধারণ বিয়ের হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে করোনাকালের অর্থনৈতিক সঙ্কট ও অনিশ্চয়তার সম্পর্ক দেখছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, ২০২০ ও ২০২১ সালের ধাক্কা অনেকটা কাটিয়ে ওঠার পর ২০২২ সালে বিয়ের হার বেড়েছে। গ্রামে এই হার বেশি। তবে কারণ যাই হোক না কেন, বিয়ের হার বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এটি প্রমাণিত হয়, এখনো বেশির ভাগ নারী-পুরুষ দাম্পত্য জীবনে বিয়ে প্রথাকে তাদের পথচলার টেকসই পদ্ধতি মনে করেন। বিয়ে প্রথার বাইরে যারা জৈবিক চাহিদা পূরণে আগ্রহী, তারা আসলে মানবসমাজের মূল ধারায় বিশ্বাসী নন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা