জনস্বার্থে নজর প্রয়োজন
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
নয়া দিগন্তের নিকলী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, নিকলী উপজেলার প্রবহমান ঘোড়াউত্রা নদী থেকে উৎপন্ন একটি খালের নাম বোরুলিয়া খাল। এই খাল দিয়েই নৌকাযোগে কিছু হাওরে প্রবেশ করা যায়। বিভিন্ন জেলা ও কিশোরগঞ্জের কিছু উপজেলার কৃষকদের বোরো জমিও এই হাওরে। বিশেষ করে এই খাল দিয়েই নিকলীর হাজার হাজার কৃষককে কৃষি উপকরণসহ ফসল আনা-নেয়া করতে হয়। খালের প্রবেশদ্বার খনন না হওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জমিতে পানি দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি স্কিম চালু থাকলেও খালে পানি না ওঠায় অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয় বোরো ফসল। বোরুলিয়ায় আট কিলোমিটার ২০০ পয়েন্টের খাল খননের ব্যয় বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে কাজটি সমাপ্ত হলেও প্রায় ১৫০ ফুট জায়গা খনন না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হাজার হাজার কৃষক। তাদের অভিযোগ, জোয়ারে ছোট্ট আকারের নৌকা ভেতরে গেলেও ভাটার সময়ে তাও সম্ভব হয় না।
এই খালের প্রবেশমুখ প্রভাবশালীদের স্বার্থসংশ্লিষ্টতার কারণে খননকাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় হাওরের হাজার হাজার কৃষক দীর্ঘদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ নিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অভিযোগ। এই রোষানলের শিকার হচ্ছেন অসহায় সাধারণ কৃষক।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তার ভাষ্য- ডিজাইন ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ীই জাপানি প্রজেক্ট জাইকার এই কাজ সমাপ্ত হয়েছে। পরে নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করায় বালু ও পলি জমে খালের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীমুখের খননকাজ ছিল অসমাপ্ত।
নিকলী দাসপাড়ার কৃষক কামরুল ইসলাম জানান, খালটির আট কিলোমিটার খনন কাজেই আসছে না ১৫০ থেকে ২০০ ফুট জায়গা খনন না হওয়ায়। ভাটার সময় খালে পানি না থাকায় স্কিমে পানি পাওয়া যায় না। সার-কীটনাশক মাথায় নিয়ে আট থেকে ১০ কিলোমিটার হেঁটে গেলেও জমিতে কাজের সময় মিলে না। বৈশাখে ফসল ঘরে তুলতেও খরচ হয় কয়েকগুণ বেশি।
আরো কয়েকটি হাওরের কৃষক হারুন, আসলাম, রতন, সামসু, আল আমিন, আরজ আলী, বোরুলিয়া স্কিমের সরকার বিপ্লব ও ডেইনম্যান তাহের অসংখ্য ভুক্তভোগী কষ্টের কথা জানিয়ে সত্বর খননের দাবি তোলেন। কাজটির চুক্তির দায়িত্বে থাকা নিকলী উপজেলা সদরের চেয়ারম্যানের ভাষ্য- ভেতরে চারটি ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হলেও নদীর মুখ অতিরিক্ত প্রশস্ত থাকায় বড় ড্রেজার ভাড়ায় আনা হয়েছিল জনস্বার্থে। আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে উপজেলার চেয়ারম্যান খননকাজে অনিয়ম ও বালু মাটি বিক্রির অভিযোগ তুললে খনন সম্ভব হয়নি। সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়ার আহমেদ জানান, আট কিলোমিটার ২০০ পয়েন্টের দুই কোটি টাকা বরাদ্দের কাজের সমাপ্তি ঘটলেও ১৫০ থেকে ২০০ ফুট জায়গার জন্য ভোগান্তি হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান অস্বীকার করে বলেন, তিনি অবগত নন। খননের সময় সদর ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়মের কারণেই কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, খাল খননের দায়িত্ব আমাদের এখতিয়ারে নেই। বোরো ফসলের দিক বিবেচনায় ওপর মহলকে এ সমস্যার বিষয়টি জানিয়েছি। নিকলী উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা সামসুল হক রাকিব বলেন, কৃষকদের সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবগত। তিনি সমস্যাটি খতিয়ে দেখবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া আক্তার বলেন, কৃষকদের সমস্যা নিয়ে কী করা যায় ভেবে দেখা হবে। এর দায়িত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিংবা এলজিইডি যারাই থাকুক, তাদেরকে অবহিত করা হবে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে।
জনস্বার্থেই এদিকে নজর দেয়া দরকার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা