জনগণের নানা দুর্ভোগ
- ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
নয়া দিগন্তের গাজীপুরের কালীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ ফিটনেসবিহীন লেগুনার নগরীতে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র পার্কিং ও বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ও যানজটের সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রী ও পথচারীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, কালীগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফিটনেসবিহীন বাস ও অবৈধ হিউম্যানহলার বা লেগুনা যানের ছড়াছড়ি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ ও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না- অভিযোগ যাত্রী ও স্থানীয়দের। কালীগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন রাস্তায় ইচ্ছেমতো পার্কিং করে এমনকি রাস্তা বন্ধ করে যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে। প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় এ বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড় এলাকা ও কালীগঞ্জ বাজার সন্নিকটস্থ বটতলা মোড়ে সারাক্ষণই ট্রাফিক জ্যাম লেগে থাকে। এতে স্কুল-কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী কিংবা হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীসহ যাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়েন। প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা ও ভুগতে হচ্ছে ধুলাবালুতে, যানজটে।
পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের তথ্যানুযায়ী, কালীগঞ্জ থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০টি অবৈধ ও পুরোনো লেগুনাও রাস্তায় চলছে যাদের নেই বৈধ রুট পারমিট কিংবা চালকদের লাইসেন্সসহ বৈধ কাগজপত্র। আরো অবাক করার বিষয় হলো, লেগুনাচালকদের মধ্যে বেশির ভাগই অপ্রাপ্তবয়স্ক। এ কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, লেগুনাগুলো মূলত মেয়াদোত্তীর্ণ এবং ফিটনেসবিহীন মাইক্রোবাস কিংবা পিকআপের নতুন সংস্করণ। ঝুঁকি সত্ত্বেও মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে লেগুনার চাহিদা বেশি। সাধারণের প্রশ্ন, লেগুনার বিকল্প কী? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কি এর কোনো বিকল্প ভেবেছে? এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে।
কালীগঞ্জ বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরাতন সোনালী ব্যাংক মোড় হয়ে টঙ্গী পর্যন্ত বীরদর্পে চষে বেড়াচ্ছে লেগুনা। শ্রমিকদের দেয়া তথ্যমতে, প্রায় ২০০ পরিবারের এক হাজারেরও বেশি সদস্যের জীবন ও জীবিকা লেগুনার ওপর নির্ভরশীল।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলাটি রাজধানী ঢাকার পাশে। দুই যুগেও অবকাঠামো ও পরিবহনব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি পরিবহনব্যবস্থা অতীতে ছিল কিন্তু বর্তমানে নেই। প্রতিদিন শত শত যাত্রী ফিটনেসবিহীন যানবাহনে করে কালীগঞ্জ-টঙ্গী সড়কে যাতায়াত করছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, আড়িখোলা রেলস্টেশনে ট্রেনের পর্যাপ্ত স্টপেজ না থাকায় সড়কে যাত্রীদের বাড়তি চাপ। সেই সুবাদে পরিবহন ব্যবসায়ীরা সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি বের করে ব্যবসায় করছে। এই রুটে যেসব গাড়ি চলছে, সে সব গাড়ি আরো নাজুক।
ঢাকায় নিয়মিত যাতায়াতকারী মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, চাকরি করি, তাই প্রতিদিনই ঢাকায় যেতে হয়। লেগুনা ছাড়া আর কোনো পরিবহন নেই। বাধ্য হয়ে ফিটনেসবিহীন লেগুনার যাত্রী হতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, বিষয়টি বহুদিনের পুরোনো ও জটিল। এ এলাকার পরিবহনব্যবস্থা নাজুক। এ সমস্যা নিরসনকল্পে পরিবহন সেক্টরের সাথে জড়িতদের এগিয়ে আসতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করব।
ফিটনেসবিহীন লেগুনার ব্যাপারে জানতে চাইলে গাজীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) আবু নাঈম জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলাপ করে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আদালতের মাধ্যমে ফিটনেসবিহীন লেগুনা ও চালকদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
জনগণের দুর্ভোগ যেকোনো মূল্যে দূর করতে হবে। এটিই প্রশাসনের দায়িত্ব ও কর্তব্য হওয়া উচিত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা