গ্রীষ্মের আগেই সতর্ক হোন
- ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৫৯
আর এক মাসের মধ্যে শেষ হবে শীতের মৌসুম। মার্চে শুরু হবে গ্রীষ্মকাল। এবারের গ্রীষ্মে গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমতে পারে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া দুরূহ হতে পারে। গ্যাসের অভাবে শিল্প খাতের উৎপাদনে এর মধ্যে ধস নেমেছে। এ ধস আরো তীব্র হতে পারে। গত বছরের চেয়ে এখন জ্বালানি খাতের সমস্যা গভীরতর হয়েছে। সরকারের নেয়া ভুল নীতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে শুরু করেছে সব খাতে। অন্য দিকে অর্থনীতিতে সৃষ্ট নাজুক অবস্থা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নি¤œমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
রাজস্ব আয়ে লক্ষ্য পূরণ করতে না পারায় এর মধ্যে সরকার অর্থসঙ্কটে পড়েছে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওনা পরিশোধের মতো টাকার সংস্থান করতে পারছে না। আবার আশানুরূপ হারে রেমিট্যান্স আহরণ করতে না পারায় ডলারের চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে গ্যাস সরবরাহকারী বিদেশী কোম্পানির পাওনাও শোধ করা যাচ্ছে না। বিপুল বকেয়া জমে যাওয়ায় জ্বালানি সরবরাহকারীদের আস্থার ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে। তারা সরবরাহ অব্যাহত রাখতে গড়িমসি করে এবং নতুন চুক্তি করার অনাগ্রহী হতে পারে। কোম্পানিগুলোর বকেয়া দিতে দেরি হলে সরকারকে জরিমানাও গুনতে হয়। ব্যাংকে নতুন এলসি খোলার ব্যয়ও বাড়ে।
গ্রীষ্মে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুতের চাহিদা বিপুলভাবে বাড়ে। তখন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে বাড়তি জ্বালানি লাগে। গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়াতে হয়। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখার মতো পর্যাপ্ত জ্বালানি আমদানি করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ, অর্থের অভাব।
আমাদের মনে আছে, গত বছর গরমের সময় জ্বালানির অভাবে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছিল। গড়ে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারেনি সরকার। ঢাকায় দিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা এবং গ্রামে আট থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্তও লোডশেডিং করতে হয়েছিল।
দেশে এখন দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। কিন্তু সেটি কাগজ-কলমে। বাস্তবে গত বছরের ১৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। তখন থেকে দিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন হচ্ছে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার অর্ধেকের কিছু বেশি। একই অবস্থা ছিল ১৫ বছর আগেও। সুতরাং ১৫ বছরের অগ্রগতি সামান্য। মাঝখান থেকে এ খাতে জনগণের কষ্টের লাখো কোটি টাকা পানিতে ফেলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার মতো একটি অতল গভীর খাল কাটা হয়েছে, যে খাল দিয়ে হু হু করে বেরিয়ে যাচ্ছে বিপুল টাকা।
এ সব হয়েছে সরকারের ভুল নীতির কারণে। বিশেষ করে দেশে গ্যাস অনুসন্ধান বন্ধ রেখে আমদানিনির্ভরতা ছিল আত্মঘাতী। সব রকম জবাবদিহির সুযোগ বন্ধ করে বিদ্যুৎ খাতে বিপুল বিনিয়োগও অর্থনীতিতে ইতিবাচক ফল যোগ করেনি। সরকার আগামীতে গ্যাস বিদ্যুতের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করলে তা জনগণের জন্য হতে পারে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা