আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি
- ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
চিকিৎসায় রোবটিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। গত রোববার রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রথমবারের মতো দু’জন রোগীর হৃদযন্ত্রের রক্তনালিতে রোবটের সাহায্যে স্টেন্ট বা রিং পরানোর মধ্য দিয়ে এই প্রযুক্তিযুগে উত্তরণের সূচনা হয়। একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল দু’জন রোগীর হার্টে রিং পরান।
প্রথম চিকিৎসা পাওয়া দুই ব্যক্তির একজন কুষ্টিয়ার কৃষক আজম আলী (৬৫) ও চাঁদপুরের প্রবাসী শ্রমিক মোর্শেদ আলম (৫০)। তারা লোকমুখে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের নাম শুনে এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। দু’জনের হার্টে তিনটি করে ব্লক ছিল। উভয়ে হাসপাতালের সৌজন্যে একটি করে স্টেন্ট পেয়েছেন। এ ছাড়া রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টির জন্য বাড়তি অর্থ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রিং পরানোর পর দু’জন স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন এবং সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন।
হৃদরোগের চিকিৎসায় ‘রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি’ হলো হার্টের ব্লক খুলে দেয়ার সর্বশেষ প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিশ্বের ১৬০টি দেশে রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি সেন্টার আছে। বাংলাদেশে নেই। প্রথম রোবোটিক এনজিওপ্লাস্টি করা হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে যন্ত্রপাতি ধার করে এনে। যন্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে এক মাস ব্যবহারের পর ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশের অবকাঠামোতে রোবোটিক পদ্ধতি উপযোগী হলে তা কেনার সুপারিশ করবেন চিকিৎসকরা।
রোবোটিক প্রযুক্তি চিকিৎসক ও রোগী উভয়ের জন্য সুবিধাজনক। এতে চিকিৎসকের শারীরিক পরিশ্রম ও ঝুঁকি কমে। হার্টের রিং ঠিক জায়গায় স্থাপনের জন্য এক মিলিমিটার সামনে অথবা পেছনে নিতে হয়। কাজটি হাতে করা কঠিন; কিন্তু রোবটের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে করা সম্ভব হয়।
রোগীর সুবিধা হলো- অপেক্ষাকৃত স্বল্পব্যয়ে চিকিৎসা পাওয়া যায়। সময়ও লাগে কম। হার্টের ভেতরে ক্যাথেটার, ওয়্যার (তার), বেলুন, রিং যত কম সময় রাখা যায় রোগীর জন্য তত নিরাপদ। তাই এ পদ্ধতিতে জটিলতা কম। দেশে স্থায়ীভাবে এ চিকিৎসাপদ্ধতি চালু হলে রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে না। খরচের বোঝা কমবে। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
দেশে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির রোগ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে মোট মৃত্যুর ৩৪ শতাংশ ঘটে হৃদরোগে। আর হৃদরোগের ঝুঁকি প্রতিদিন বাড়ছে। আগে বলা হতো, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও কায়িক পরিশ্রমহীন জীবনযাপন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এখন জানা যাচ্ছে, বায়ুদূষণে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের তথ্যমতে, হৃদরোগে যত মানুষ মারা যায় তাদের এক-চতুর্থাংশের কারণ বায়ুদূষণ। তথ্যটি ভয়াবহ। কারণ বাংলাদেশের বায়ুদূষণ বিশে^র সর্বোচ্চ পর্যায়ের।
সঙ্গত কারণে হার্টের এনজিওপ্লাস্টিতে রোবোটিক প্রযুক্তিতে উত্তরণের প্রয়োজন আছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। সাম্প্রতিক মহামারীর সময় দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার মারাত্মক ভঙ্গুর অবস্থা স্পষ্ট হয়ে যায়। এখন সময়, দেশবাসীর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসার আধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার। তাহলে রোগীদের আর বাড়তি অর্থ ব্যয়ে নানা ধকল সয়ে বিদেশে চিকিৎসা করতে যেতে হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা