২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
করোনা সংক্রমণ ফের বাড়ছে

সতর্কতার এখনই সময়

-

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে নতুন করে বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রায় তিন হাজার করোনা সংক্রমিত রোগী আছে সে দেশে। ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের পরস্পরের দেশে ব্যাপক যাতায়াত রয়েছে। ফলে ভারতে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশও ঝুঁকিতে থাকে।
দেশে এর মধ্যে সংক্রমণ বেড়েছে। প্রতি ১০০টি নমুনা পরীক্ষা করে প্রায় ৬ শতাংশ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গত ৩ জানুয়ারি করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি টিকা প্রয়োগে জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারকে। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদফতর দ্রুত সবাইকে আবার টিকা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। গতকাল রোববার থেকে সীমিত পর্যায়ে টিকাদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট টিকাদান কেন্দ্রগুলোর সার্বিক প্রস্তুতির অভাব স্পষ্ট।
একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্যানুযায়ী, গতকাল যে আটটি কেন্দ্রে টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া শুরুর কথা ছিল তার মধ্যে মাত্র দু’টি কেন্দ্র টিকা সংগ্রহ করেছে। এর অর্থ হলো- করোনার এ নতুন সংক্রমণে এখনো টনক নড়েনি সংশ্লিষ্টদের।
তবে আশার কথা, সরকার প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীসহ সাধারণ মানুষকে টিকার চতুর্থ ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী দুই বছরে আড়াই কোটি মানুষকে টিকার চতুর্থ ডোজ দেয়া হবে। এ বছর পাবে এক কোটি ২৫ লাখ মানুষ।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে করোনা সংক্রমণ বড় আকারে বাড়তে পারে।
করোনার নতুন সংক্রমণকে এখনো কেউ নতুন তরঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করেননি। ভাইরাসের নতুন যে ধরনটি এবার শনাক্ত হয়েছে এর সংক্রমণের ক্ষমতা অমিক্রন নামের ভয়ানক ধরনটির চেয়েও বেশি, তবে ধার অনেকটা কম।
এ পরিস্থিতিতে টিকাদান কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া জরুরি। করোনা মহামারীর চূড়ান্ত সময়ে এটি কেমন ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল এবং দেশের পুরো চিকিৎসাব্যবস্থা কিভাবে ভেঙে পড়েছিল সে কথা আমরা নিশ্চয় ভুলে যাইনি। ২০১৯ সালের পর প্রায় তিন বছর ধরে মহামারীর তীব্রতার কথা মনে হলে এখনো অনেকের শরীর শিউরে ওঠে।
এ ঘাতক ব্যাধি আবারো মহামারীতে রূপ নিলে দেশের জন্য তা হতে পারে বিপর্যয়কর। নতুন করে লকডাউন, আইসোলেশন বা জনবিচ্ছিন্নতার ধাক্কা সহ্য করার মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি এ মুহূর্তে নাজুক অবস্থায়। মহামারীর ধাক্কায় বিপুলসংখ্যক মানুষ ইতোমধ্যে দারিদ্র্যসীমায় পৌঁছেছে। মূল্যস্ফীতিসহ নানা কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন। এ সময় আরেকটি মহামারীর ধকল সহ্য করা একেবারে অসম্ভব হবে।
মহামারীর সময় দীর্ঘ ধকল পোহানো দেশের অনেক মানুষ টিকার তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ নেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তাই ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের সংখ্যা খুব কম নয়। আড়াই কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনাও কঠিন কাজ। সেটি বিশেষ মনোযোগ দাবি করে। কিন্তু টিকাদানের শুরুতে কেন্দ্রগুলোর প্রস্তুতিহীনতার যে নমুনা দেখা যাচ্ছে তা সত্যি উদ্বেগের।


আরো সংবাদ



premium cement