২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মেডিক্যাল কলেজে অব্যবস্থা

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নজর দিন

-

দৈনিক নয়া দিগন্তের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জে সদ্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এলাকায় বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চরম দুর্ভোগের শিকার রোগীরা। কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতাই এর জন্য দায়ী বলে অভিযোগ রোগীসহ সংশ্লিষ্টদের। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের সার্জারি (পুরুষ) ওয়ার্ডে ভয়াবহ চিত্র চোখে পড়ে। টয়লেটে যেতে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছেন রোগীরা। সিরিয়াল পেতে অনেক সময়। ওয়ার্ডে ৪৫ জন রোগীর জন্য বরাদ্দ দু’টি টয়লেটের একটি নষ্ট ও ভাগাড়ে পরিণত। ৪৫ জন রোগী ও তাদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা লোকজনসহ প্রায় ১০০ মানুষের জন্য একটি টয়লেট। গোসলখানায় পানি আটকে থাকায় ব্যবহারের অযোগ্য। সকালে অনেক অসুস্থ রোগীকে টয়লেটে যাওয়ার জন্য এক-দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিষ্ঠানের (সহকারী পরিচালক) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা: সৌমেন চৌধুরী বলেন, এটি গণপূর্ত বিভাগের কাজ। সমাধানের চেষ্টা করা হবে। খাবারের মান ও পরিবেশন পদ্ধতি অস্বাস্থ্যকর। নষ্ট গোসলখানাসহ অনিয়মের বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। আমরা বারবার গণপূর্ত বিভাগে জানানোর পরও টয়লেট ঠিক করে দিচ্ছে না। ‘ছোট মেরামতের কাজও কি গণপূর্ত বিভাগ করে দেবে? আপনাদের কি কোনো টেকনিশিয়ান নেই?’ এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের টেকনিশিয়ান আছে। না, এ জন্য আমাদের লোক আছে। জানার পরই ক্লিন করে দিতে বলেছি।’

ক্লিনার-আয়াসহ ১৬০ জন লোক নিয়োগ দেয়া আছে বলেও জানান। হাসপাতালে আগত রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের সাথে আনসার সদস্যের খারাপ আচরণ, সর্বত্র অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, নিম্নমানের খাবার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিবেশন প্রভৃতি অনিয়মে জর্জরিত।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বিরাট অংশ মন্ত্রী-সচিব, স্বাচিপ ও সরকারি দলের নেতাকর্মী বা সরকারি দলের ঘনিষ্ঠ বলে নিজে জাহির করেন এবং অনিয়মের কেউ প্রতিবাদ করলেই হুমকি দেন বলেও অভিযোগ রোগী ও হাসপাতালে আগত মানুষের। মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আক্তার বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তিন বছর পরও এর মেইনটেন্যান্সের জন্য বরাদ্দ আসে। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুন মাসে শেষ হয়েছে। এর মেইনটেন্যান্সের বরাদ্দ পেতে আরো দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে। হাসপাতাল যেহেতু সেনসিটিভ বিষয়, তাই আমরা বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে সবসময়ই কাজ করে দেই। এ বিষয়ে আমাদের বলাই হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আপনাদের অবগত করেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাদের জানানো হয়নি।
হাসপাতালের রোগীরা বলেন, ‘ছোটখাটো সমস্যার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খুবই ছোট কাজ। টেকনিশিয়ানরাই করতে পারেন। এটি দায়িত্বহীনতা আর দায়িত্বে অবহেলা ছাড়া কিছুই নয়।
রোগী ও এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত হাসপাতালের দুর্নীতি বন্ধ এবং তদন্ত কমিটি করে সেবার মান নিশ্চিত করা হোক।


আরো সংবাদ



premium cement