সাধারণের কষ্ট সহসা কমছে না
- ১২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
দেশে দীর্ঘদিন ধরে নিত্যপণ্যসহ সব জিনিস বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকার কোনোভাবে খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে পারছে না। ফলে মুষ্টিমেয় মানুষ ছাড়া বেশির ভাগের জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ যন্ত্রণা। তবু চলমান এ অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে দ্রুত উত্তরণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের জন্য সুখকর খবর আপাতত নেই; বরং বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। পরিণামে দেশের নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের দুঃখ-কষ্টের দিন আরো দীর্ঘ হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমবে। সংস্থাটির হিসাবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। স্মরণযোগ্য যে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ বছর মূল্যস্ফীতির চাপ থাকারও আশঙ্কা করা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদনে। গত বুধবার প্রকাশিত গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
ষাণ¥াসিকভিত্তিক ওই প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকা এর মূল কারণ। ডলারের দাম বাড়তে থাকায় আমদানি ব্যয় বাড়ছে। ফলে আমদানি করা খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি কিনতে বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রানীতি সঙ্কোচনমূলক করার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়েছে।
বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মূলত ব্যক্তিমানুষের ভোগব্যয়ের কারণে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি থাকবে। বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী থাকায় আমদানি নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকবে। এ কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ কমলে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়বে। আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশের রফতানি নিয়ে বিশ্বব্যাংক বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি নিয়ন্ত্রণ, উপকরণ ও জ্বালানির উচ্চমূল্য আর এর সাথে ক্রমবর্ধমান বাহ্যিক ও আর্থিক চাপের প্রভাবে প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতির সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। মুদ্রার অবমূল্যায়নে মুদ্রানীতির রাশ টেনে ধরা হয়। সেই সাথে লেনদেনের ভারসাম্যে প্রভাব পড়ে, টান পড়ে বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভে। আর্থিক খাত আরো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়।
অর্থনীতিবিদদের মতো আমরাও মনে করি, দেশের চলমান এ অর্থনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে সরকারি নীতির পুনর্মূল্যায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সাথে দেশের আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে; যাতে অর্থনীতিতে যথার্থ শৃঙ্খলা ফিরে আসে। এ জন্য গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষার নীতি ত্যাগ করার কোনো বিকল্প নেই। তবে সবার আগে প্রয়োজন সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে কার্যকর পদক্ষেপ। এ জন্য প্রথমেই দরকার বাজারব্যবস্থাপনায় সরকারের কঠোর নজরদারি করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা আরো বাড়ানো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা