সবার আগে চাই সুশাসন
- ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। সর্বশেষে রিজার্ভের পরিমাণ কমে এখন মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ অর্থ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে নিশ্চিত। কারণ গত এক-দেড় বছরে কৃচ্ছ্রতা পালন করায় আমদানি খাতে ব্যয় অনেকটা কমেছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, রিজার্ভের দিক থেকে অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। একই সাথে তিনি বলেন, আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা কখনো পূরণ করা যাবে না। তবে প্রবাসী আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব। এ বছর আমরা রিজার্ভ কোনোভাবে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামতে দেবো না।
মন্ত্রীর বক্তব্যে বৈপরীত্য স্পষ্ট। বাস্তবে নিট রিজার্ভ যেখানে ১৭ বিলিয়নের ঘরে সেখানে ৩০ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রাখা কিভাবে সম্ভব, বোঝা মুশকিল। গত পাঁচ বছরে যেখানে প্রবাসী আয় বাড়েনি সেখানে এক বছরে তা কিভাবে দ্বিগুণ হবে, তাও বলেননি তিনি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যে হারে প্রতি মাসে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে সেই ধারা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আপৎকালীন দায় মেটানো কষ্টকর হবে। অথচ রিজার্ভ হলো অর্থনীতির প্রাণশক্তি। এটি কমে গেলে আর্থিক খাত ধুঁকতে থাকে। আমদানি কমে যায়। শিল্পের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর ধারাবাহিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতির সব খাতে।
এই অর্থমন্ত্রীর সময়ে দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন। অবস্থা এমন যে, সরকার জরুরি পণ্যে ভর্তুকি দেয়ার মতো অর্থের সংস্থান করতে পারছে না। পরিশোধ করতে পারছে না অনেক দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানের পাওনা। ভর্তুকির জন্য বিশেষ বন্ড ছেড়েছে এবং একাধিকবার কাগুজে নোট ছেপেছে। অবসরে যাওয়া অনেক সরকারি কর্মচারীর পেনশনের অর্থ পর্যন্ত শোধ করতে পারছে না সরকার।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অর্থনীতিবিদরা নতুন শ্রমবাজার সন্ধানের পরামর্শ দেন। কিন্তু সেটি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নয়। প্রবাসীরা যদি রাষ্ট্রীয় চ্যানেলে অর্থ না পাঠায় তাহলে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে না। দেশের ব্যাংক খাতের ওপর আস্থাহীনতার কারণে প্রবাসীরা হুন্ডি বা অন্যভাবে দেশে টাকা পাঠায়। তাদের অনাস্থার প্রধান কারণ, অনেক ব্যাংকের দেউলিয়া হয়ে পড়ার মতো অবস্থায় চলে যাওয়া। আস্থাহীনতা কেবল প্রবাসীদের মধ্যে নয়, দেশীয় অনেক বিনিয়োগকারী দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে বিনিয়োগ করছেন। এ আস্থাহীনতার কারণ, গত ১৫ বছরে অর্থনীতিকে অর্থনীতির নিয়মে চলতে না দেয়া। বলা হয়, ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাত থেকে অনিয়মের মাধ্যমে অন্তত ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে, যার অর্থের বেশির ভাগ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। সরকার তা রোধের কার্যকর উদ্যোগ বা ব্যবস্থা নিয়েছে এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন। এমনকি খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর না হয়ে বারবার খেলাপিদের নানাভাবে সুবিধা দেয়া হয়েছে।
এ বিশৃঙ্খল অবস্থা মানুষের মধ্যে যে আস্থাহীনতা সৃষ্টি করেছে তা-ই অর্থনীতির বর্তমান সঙ্কটের প্রধান কারণ। নতুন সরকারের সামনে এ বিশৃঙ্খলা দূর করা হবে এক নম্বর চ্যালেঞ্জ। কিন্তু যে সরকার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে সেটি ‘নতুন বোতলে পুরোনো মদ’। তাদের কাছে বেশি কিছু আশা করাই সম্ভবত বাড়াবাড়ি হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা