বৈশ্বিক বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি
- ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
দেশে আরেকটি তামাশার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন নিজেই ক্ষমতাসীনদের পক্ষে ভূমিকা পালন করছে। সরকারের মতোই তারাও বিরোধীদের অভিযুক্ত করছে। গত বৃহস্পতিবার বিদেশী কূটনীতিকদের এক ব্রিফিংয়ে এমন একটি কসরত করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ।
আরেকটি একতরফা নির্বাচনের আয়োজন দেখে বিদেশীরা নিশ্চুপ। তবে জাতিসঙ্ঘসহ নানা সংস্থা অব্যাহত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এই অর্থহীন একটি নির্বাচনের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তিবিশেষের ক্ষমতালিপ্সার কাছে কোনো কিছুই পাত্তা পাচ্ছে না।
আসন্ন ভোট নিয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে নির্বাচন কমিশনের কূটনীতিক ব্রিফিংয়ে বিদেশীরা সাধারণ কোনো প্রশ্ন করেননি। তারা কমিশনের কাছে জানতে চান, কেন্দ্রে যেতে সরকার বা ইসি ভোটারদের চাপ দিচ্ছে কি না। একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিদেশীদের এ প্রশ্ন অসম্মানজক। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন কোনো দেশের নির্বাচন কমিশনে বিদেশীরা এমন প্রশ্ন করেন না। এ বোধ দেশের বর্তমান কমিশনের আছে বলে মনে হয় না।
বিদেশীদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজেদের পক্ষে বলেছেন। সরকারের পক্ষেও সাফাই গেয়েছেন। আবার আগ বাড়িয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। যেসব অভিযোগ নিয়মিত আওয়ামী লীগ করে থাকে। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বিদেশীদের বুঝিয়েছি, আমাদের পক্ষ থেকে ভোটারদের চাপ সৃষ্টির কোনো কারণ নেই।’ নির্বাচন কমিশনাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের আশঙ্কা, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। অন্য দিকে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারা দেশে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ প্রয়োগের অসংখ্য খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি তারা হুমকি দিচ্ছেন ভোট না দিলে নাগরিক সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হবে। সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের আওতায় সরকার দুস্থদের যেসব সাহায্য করে তা দেয়া হবে না। কোথাও ভোটারদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে। কোথাও বা আর্থিক সুবিধা দেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে; যাতে ভোটাররা ভোট দিতে যান। হাবিবুল আউয়াল যেন এসবের কিছুই জানেন না। এ দিকে সরকারি বাহিনীর চাপে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনতে চাচ্ছেন। বিদেশীদের তিনি বলতে চেয়েছেন, বিএনপি ভোটারদের কেন্দ্রে না যেতে চাপ দিতে পারে।
একতরফা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন ‘বাংলাদেশ ক্র্যাকডাউন’ নামে সম্পাদকীয়তে লিখেছে, বাংলাদেশ সরকার গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের কণ্ঠ রোধের পাশাপাশি বিরোধী শক্তিকে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। বিরোধীদের ওপর কিভাবে স্টিমরোলার চালানো হয়েছে তার বর্ণনা দেয়ার পাশাপাশি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিচারের নামে হয়রানির বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে একটি জবরদস্তির নির্বাচন এ অঞ্চলের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে পত্রিকাটি মন্তব্য করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বাংলাদেশে অচলাবস্থা নিয়ে ৪৩ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে একতরফা নির্বাচন আয়োজনের ক্ষতিকর দিকগুলোর ইঙ্গিত দিয়ে এ অঞ্চলে সবচেয়ে প্রভাব রাখে এমন দুটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রতি কিছু পরামর্শ রেখেছে তারা।
দেশী-বিদেশী সব শুভাকাক্সক্ষীর পরামর্শ ও প্রত্যাশা উপেক্ষা করে নতুন সরকার দেশ চালাতে পারবে কি?
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা