লাইফ সাপোর্টে ব্যাংক
- ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
দেশে নগদ টাকার চরম সঙ্কট চলছে। শুধু কিছু ব্যাংকে সঙ্কট চলছে এমন নয়, সরকারের কোষাগারও নগদ অর্থশূন্য হয়ে পড়ছে। সে জন্য সরকার এখন বিকল্প উপায়ে দায়দেনা শোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সার ও বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ভর্তুকি বাবদ দায় মেটানো হচ্ছে বন্ডের মাধ্যমে। তবে পাওনাদারদের মোট পাওনা দেয়া হবে না, শুধু ব্যাংকঋণের সমপরিমাণ বন্ড দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে।
সহযোগী একটি দৈনিকের খবর, সারের ভর্তুকি বাবদ সরকারের কাছে বিসিআইসির পাওনা আট হাজার কোটি টাকা। যথাসময়ে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় চারটি সরকারি ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে বিপুল অঙ্কে। এখন ব্যাংকগুলো ইউরিয়া আমদানির নতুন এলসি খুলতে চাচ্ছে না। অর্থ পেতে বারবার চিঠি দিচ্ছে বিসিআইসি। কিন্তু সরকারের কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় অর্থ ছাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় ইউরিয়া আমদানির স্বার্থে ব্যাংকের দায়ের সমপরিমাণ বিশেষ বন্ড ইস্যু করবে সরকার। অন্য দিকে, বিদ্যুতের মূল্য বাবদ সরকারের কাছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পাওনা ২০০ কোটি ডলারের বেশি, যা প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার সমান। এ টাকা সরকার শোধ করতে পারছে না অর্থের অভাবে। বিকল্প বন্ড ইস্যু করা হচ্ছে। তবে পাওনার পুরো অর্থ নয়; বরং ব্যাংকের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর যে পরিমাণ দায় দাঁড়িয়েছে, সে পরিমাণ বন্ড দেয়া হবে। অবশ্য বন্ড পেলেও ব্যাংকের তারল্য সঙ্কটের সুরাহা হবে না। কারণ, ব্যাংক নগদ টাকা পাচ্ছে না।
রাজস্ব আয়ে ব্যর্থতা এ অবস্থার জন্য প্রধানত দায়ী। সরকারের কোষাগার নগদ টাকাশূন্য তখন একটি পাতানো নির্বাচনে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। তবে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটে বিপর্যস্ত অর্থনীতির পরিণতি এমনটি হওয়ার কথা। আর দেশের ও বিদেশের বিশেষজ্ঞরা বহুবার সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন। সরকার কানে তোলেনি।
এখন ব্যাংকগুলোর নগদ টাকার ঘাটতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, কিছু ব্যাংককে শুধু প্রতিশ্রুতির ওপর আস্থা রেখে নগদ টাকা ধার দিয়ে টিকিয়ে রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারল্য সঙ্কটে পড়া সাত ব্যাংককে সম্প্রতি বিরল সুবিধায় ২২ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলা হয়েছে, এ ধার দেয়া হচ্ছে শেষ উপায় হিসাবে (লেন্ডার অব দ্য লাস্ট রিসোর্ট)। এটিও নিয়ম-নীতির লঙ্ঘন। আর সেটি করছে খোদ নিয়ন্ত্রণকারী সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানটি।
এমন ভেন্টিলেশন এবারই প্রথম নয়। গত বছরের শুরুতেও পাঁচটি ব্যাংককে ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যমান কাঠামোগত সমস্যা জটিল সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। রাজস্ব বাড়াতে না পারায় সরকারের কাক্সিক্ষত ব্যয় সম্ভব হয়নি। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেশী-বিদেশী ঋণ নিয়ে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এসব দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। এখন দায় পরিশোধে বন্ড ছাড়ার যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সেটি ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেয়ার মতো। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কতটুকু হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা