পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
দেশের অর্থনীতি স্পষ্টত বেহাল অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংক খাত পর্যুদস্ত। বিনিয়োগ হচ্ছে না। আমদানি সঙ্কোচন ও জ্বালানি খাতের অদক্ষতা আরো গভীরতর শঙ্কার কারণ হয়ে উঠছে। সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সারসহ বিভিন্ন খাতের ভর্তুকির অর্থ শোধ করতে পারছে না।
বলা হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি এতটা ভঙ্গুর অবস্থায় কখনো ছিল না। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, ‘৩৬ বছরের চাকরি জীবনে আমি কখনোই এত বড় অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখিনি।’
এ পরিস্থিতি এক দিনে তৈরি হয়নি। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লাগাতার অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অবাধ লুটপাটের সুযোগ দেয়ার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি একসাথে এত চ্যালেঞ্জ আগে কখনো দেখেনি। ব্যাংক খাতের বিপর্যয়ের পাশাপাশি আরো যেসব ক্ষেত্রে অর্থনীতির চাপ ঘনীভূত হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম- রাজস্ব আয় হ্রাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া।
এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডি জানায়, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে শুধু ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুট করা হয়েছে।
এ লুটপাট কারা করেছেন, তাদের ব্যক্তিগত পরিচয় সবার জানা। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী গ্রুপ ও তার প্রধানের নাম পরিচয় মানুষ জানেন। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋণ, অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ঋণ, অর্থ লোপাটসহ নানান ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। দেশের ব্যাংক খাত এখন ব্যক্তিস্বার্থের হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও স্বার্থান্বেষী মহলের হাতে অসহায়। যারা এ খাত থেকে বড় বড় ঋণ নিচ্ছেন, তারা আবার ঋণ পুনঃতফসিলের নানা নিয়ম-কানুন তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করছেন। লুটেরাদের মধ্যে- হলমার্ক, বিসমিল্লাহ, এননটেক্স, থার্মেক্স গ্রুপ, নাবিল গ্রুপের মতো কয়েকটি গ্রুপ ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের নাম এসেছে।
লুটপাটের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি প্রায় একই। কিন্তু মূল বিষয় হলো- ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ। ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কীভাবে অসহায় করে ঋণ অনুমোদনে বাধ্য করা হয়, এমন দৃষ্টান্ত সব জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। অথচ নিয়মের ব্যত্যয় যাতে না ঘটে তা দেখার জন্য সব ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সরকারের হাতে আছে। কিন্তু গত ১৫ বছরে সেসব নিয়ন্ত্রণযন্ত্রের কোনোটি সক্রিয় হতে পারেনি বা সক্রিয় হতে দেয়া হয়নি। সুতরাং ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ব্যাংক খাতে অনিয়মের সুযোগ অবাধ করে দেয়া হয়েছে- এমন ধারণা খুব অমূলক নয়।
জনগণের অর্থ যাদের রক্ষা করার কথা তারা সেটি করতে পারছেন না। আগামী নির্বাচনের পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে এমন আশা করারও কারণ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। সিপিডি বলেছে, বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে উঠতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচ্চপর্যায় থেকে পদক্ষেপ দরকার। দরকার সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা। তা না হলে, পরিত্রাণ পাওয়া কঠিন হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা