২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নির্বাহী আদেশে গ্যাসের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি

গ্যাসনির্ভর শিল্পের সক্ষমতা আছে কি

-

সরকারের নির্বাহী আদেশে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম অত্যধিক বাড়ানো হয়েছে। এই দাম বাড়ানোয় গ্যাসনির্ভর শিল্পে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। পণ্যের মোট যে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে তার ভার বহন করার মতো সক্ষমতা আমাদের শিল্প-উদ্যোক্তাদের কতটুকু রয়েছে; তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্রেতাদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। কারণ উৎপাদন ব্যয় অস্বাভাবিক বাড়লেও বিদেশী ক্রেতাদের কাছে দাম বাড়ানো যাবে না। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপের ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা আর আগের মতো নেই। এ মুহূর্তে তারাও দাম বাড়াতে পারবে না। এক দিকে ব্যয় বেড়ে যাবে, অন্য দিকে দাম বাড়ানো যাবে না, এতে যে লোকসান হবে তা কাটানোর সক্ষমতা বেশির ভাগ উদ্যোক্তার নেই। পরিণতিতে অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে কর্মক্ষম শ্রমিক বেকার হবে, রফতানি আয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে। যার সার্বিক প্রভাব পড়বে জাতীয় অর্থনীতিতে।
চলমান সঙ্কটের মধ্যে কী কারণে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বাড়ানো হলো তা কারো কাছে বোধগম্য নয়। এমনিতে ছয় মাস ধরে কিছু ক্ষেত্রে শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খোলা যাচ্ছে না। এর আগে বিদ্যুৎ স্বল্পতা ছিল, এরপর বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো, ফলে শিল্পকারখানায় ত্রাহি অবস্থা। এর ওপর গ্যাসের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোয় উৎপাদন খরচ চক্রাকারে বেড়ে যাবে। বাস্তবতা হলো- ডলার সঙ্কটে সময়মতো কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। ডলারের দামও বেড়ে গেছে। ফলে কাঁচামালের আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে অনেক। এরপর গ্যাসের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় শিল্পে বড় ধরনের আঘাত আসবে। সামনে এ আঘাত আরো বেশি করে আসবে, কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দামও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। অথচ বেশ কিছু শিল্পের কাঁচামালের অন্যতম প্রধান উপকরণ গ্যাস।


নয়া দিগন্তে গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য প্রায় ৩৮ শতাংশ বাড়ে। ২০২২ সালে দুই দফায় আরো প্রায় ৪০ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। এখন নতুন করে প্রায় দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধি বিপদে ফেলে দিচ্ছে গ্যাসনির্ভর শিল্প-উদ্যোক্তাদের। এতে তাদের টিকে থাকা কঠিন হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে কাঁচামালের দাম কমপক্ষে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ডলার সঙ্কটের কারণে আরো ৩০ শতাংশ বেড়েছে। তবে পণ্যের দাম বাড়েনি। উদ্যোক্তাদের শঙ্কা, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না হলে নতুন কর্মসংস্থান তো হবেই না; বরং শ্রমিক ছাঁটাই করতে হবে।
সবার জানা, যেকোনো জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি বাজারে ও শিল্প খাতে পড়ে। লক্ষণীয় যে, জ্বালানি তেল দিয়ে সরকার সব ধরনের জ্বালানির দাম বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কিছু দিন আগে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন একই কায়দায় শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো। কিন্তু দেশের ইতিহাসে একসাথে এত বিপুল অঙ্কের মূল্য বাড়িয়ে গ্যাসের দাম আর কখনো নির্ধারণ করা হয়নি। রেকর্ড পরিমাণ গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে উৎপাদন ব্যয় যে পরিমাণে বাড়বে তার ভার বহন করা যেমন ক্রেতাদের থাকবে না, তেমনি যে লোকসান হবে তা বহনের সক্ষমতা শিল্পমালিকদেরও নেই। তাই শিল্প খাতে গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি। অন্যথায় দেশে একের পর এক শিল্পকারখানা বন্ধ হতে থাকবে। মূলত আমাদের নতুন গ্যাসক্ষেত্র সন্ধানে তৎপরতা বাড়ানো দরকার। এর সরবরাহ বাড়ানোর মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলার দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই পথে হাঁটা দরকার। এ ছাড়া উচ্চমূল্যে তরল গ্যাস আমদানি পরিহার করার কথাও ভাবতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় জামায়াতের প্রতিবাদ গুগল ম্যাপ দেখে গাড়ি চালাতে গিয়ে ব্রিজ থেকে পড়ে নদীতে, নিহত ৩ গাজীপুরে বেক্সিমকো শ্রমিকদের ফের মহাসড়ক অবরোধ ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় জামায়াতের উদ্বেগ মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য সুখবর দিলো দেশটির সরকার আইএলও বাংলাদেশকে ৩ মিলিয়ন ইউরো দেবে মাঠে নামার আগেই ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের একনেকে ৬ হাজার কোটি টাকার ৫ প্রকল্পের অনুমোদন ভোটাধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ড. ইউনূস নোয়াখালীতে সিএনজি-পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত

সকল