জনগণের বিক্ষোভকে গুরুত্ব দিন
- ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০৫
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বহুলালোচিত দহগ্রাম ইউনিয়নের সাংবাদিক বাবুল পাটোয়ারি নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রমত্তা তিস্তা নদীর বামতীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী।
দহগ্রাম ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা এই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যেসব এলাকা এখনো ভাঙনের মুখে পড়েনি, সেসব এলাকা রক্ষার্থে লালমনিরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি নির্মাণকাজ শুরু করেছে। আগামী জুনে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। এই এলাকার বাসিন্দা, জয়নাল প্রকল্প এলাকায় দাঁড়িয়ে তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা বিশাল মরু এলাকা দেখিয়ে বলেন, প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে আমার ফসলি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ওই জমিতে বিভিন্ন ফসল রোপণ করে ঘরে তুলি।’ তার ওই জমির অদূরেই ভারতীয় সীমান্ত। প্রতি বছর বর্ষায় ভাঙতে ভাঙতে তিস্তা নদী এখানে চলে এসেছে। কিন্তু কৃষকের ফসলি জমি এখন ধু ধু তিস্তা মরুভূমি।
জানা গেছে, ভাঙন রোধে সরকারের অর্থায়নে লালমনিরহাট পাউবোর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ নাটোরের রোজিনা কটেজ, দক্ষিণ বড়গাছার ‘জেভি সেহা ইউবি’ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওই প্রকল্পের এই কার্যাদেশ দেয়। কিন্তু এর তিনটি প্যাকেজের মধ্যে দুটি প্যাকেজের কাজ আজ পর্যন্ত শুরু হয়নি। ১০ নম্বর প্যাকেজের নির্মাণকাজ প্রতিষ্ঠানটি মাত্র শুরু করেছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৯২ লাখ ৮৬ হাজার ১৮৫ টাকা। এই প্যাকেজে নদীর উপরে ৮২৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রায় ১০ মিটার প্রস্থের এলাকায় দুই মিটার বালু খনন করে সিসি ব্লক ডাম্পিং ও পিসিং করা হবে। এতে ভাঙন রোধের জন্য তিন সাইজের এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৪১টি ব্লক নির্মাণ করার কথা।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ওই ঠিকাদারের লোকজন প্রকল্প এলাকায় তিস্তা নদী থেকে নির্ধারিত কাজের শিডিউলবহির্ভূত বালু উত্তোলন করে ব্লক নির্মাণ করেছে। এসব ব্লকে নিয়মবহির্ভূতভাবে বড় সাইজের পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। যেসব ব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে, সেসব ব্লক রাতের আঁধারে খননকৃত জায়গায় পিসিং করার আগে ডাম্পিং করায় ব্লকের সাথে বালু পড়ে গর্ত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাই এলাকাবাসী এর নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
দহগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রুহুল আমিন অভিযোগ করেন এবং বলেন, যে বালু ও পাথর দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, তা নিন্মমানের। এসব নিন্মমানের কাজের ব্যাপারে আপত্তি করে আমরা শিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য অনুরোধ জানালে সে ঠিকাদারের নিয়োজিত এক ব্যক্তি পুলিশ দিয়ে মামলার হুমকি পর্যন্ত দেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নান বলেন, আমরা চাই শিডিউল মোতাবেক কাজ হোক। কিন্তু তারা তা না করে যেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখান থেকে শিডিউলবহির্ভূতভাবে নিন্মমানের বালু তুলে কাজ করছেন। ঠিকাদারের লোকজন প্রকল্প এলাকার নদী থেকে এরই মধ্যে ১০ লাখ সেন্টিমিটার বালু উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান পাউবোকে জানালে তারা সাফ জানায়, আমরা কিছু জানি না।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক কিছুটা ক্ষোভের সাথে বলেন, যদি অনিয়ম হয়ে থাকে তা হলে কাজটা বন্ধ থাকুক। তবে অনিয়মটা কী, তা জানতে হবে। ২০১৬-১৭ সালের প্রকল্প এখনো শেষ করা যাচ্ছে না। এর কারণ সংশ্লিষ্ট দ্রব্যমূল্য বেশি হওয়ায় ঠিকাদার কাজ না করে চলে যাচ্ছেন। কাজ না করায় চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার আর্নেস্ট মানি জমা দিয়েছেন, সেই টাকা বাজেয়াপ্ত পর্যন্ত হয়ে গেছে। যেসব ব্লক বানানো হবে, সে সব ব্লক ফেলতে হবে। ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি এতে হতে পারে, তবুও কাজটা এগিয়ে নিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা