২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
হিম ঠাণ্ডায় জীবন বেহাল

কেন গরিব হাহাকার করবে?

-

একটি সহযোগী দৈনিকের বদলগাছি (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নওগাঁর বদলগাছি ও পত্নীতলা- এ দুটি উপজেলায় কয়েক দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। উত্তরের কনকনে শীতের দাপটে মানুষ বর্তমানে অসহায়। বিশেষ করে ছিন্নমূল মেহনতি মানুষের জীবনে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। শীতের দরুন শ্রমজীবী মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এ কারণে খেয়ে না খেয়ে তারা জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে। এসব পরিবারে বিশেষ করে প্রবীণ ও শিশুরা শীতের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে অমানবিকভাবে। পাতলা ছেঁড়া কাঁথা জড়িয়ে তারা শীতের রাত কাটাচ্ছে। ফলে শীতজনিত কারণে তাদের অনেকেই অসুস্থ। কনকনে শীতে দরিদ্ররা মানবেতর জীবন কাটালেও কেউ তাদের জন্য এগিয়ে আসেনি কোনো শীতবস্ত্র নিয়ে।
আরো জানানো হয়েছে, ওই দুই উপজেলায় প্রশাসন কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও স্থানীয় এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান তা বিতরণের কথা জানা যায়নি। সরেজমিন নজিপুর পৌরসভায় গেলে দেখা যায়, আদিবাসী কয়েকজন নারী ও পুরুষ চুলায় গা গরম করছিলেন। তাদের এক নারী স্থানীয় কয়েকটি বাড়ি ঘুরিয়ে জানালেন, এখানে ৩৫-৪০টি কর্মকার পরিবার যারা সবাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের। তারা সবাই দিনমজুর। ফলে দিন এনে দিনে খান। ঘরদোর দেখলেই বুঝা যায়, তাদের অবস্থা আসলে কেমন। ৬০ বছর বয়স্ক এক বিধবা বৃদ্ধা জানান, তার একমাত্র মেয়েটিকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন। এ বয়সেও নিজে দিনমজুরি করে পেট চালাতে হচ্ছে। প্রচণ্ড শীতে তিন দিন কাজে যেতে পারেননি। পাশের বাড়ি থেকে চাল ধার নিতে হয়েছে ভাত খেতে। রাত একটি মাত্র কাঁথা গায়ে জড়িয়ে কাটে। ছোট্টঘরে একাই থাকেন এখন। অপর দিকে, সুশীল নামে একজনের একটা ছেলে পাগল। ফলে সে কোনো কাজ করতে পারে না। সুশীল দিনমজুরি করে কষ্টে সৃষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে। পরিবারে লোক সংখ্যাও ছয়জন। শীতে কাজে যেতে না পারায় তার ঘরে খাবারও নেই। সকালে আধা কেজি খিচুড়ি সবাই ভাগ করে খেলেও দুপুর ও রাতে কী খাবেন, জানেন না। প্রয়োজনীয় অন্নের সুরাহা করতেই হিমশিম খান। তারা শীত মোকাবেলা কীভাবে করবেন? গরম কাপড় কীভাবে কিনবেন? তার সামর্থ্য যে, তাদের মোটেও নেই। বাধ্য হয়ে পাতলা কাঁথায় এ শীতের রাত কাটাতে হচ্ছে। নওগাঁর এ দুটি উপজেলার সব আদিবাসীর একই অবস্থা। তীব্র শীতে ছিন্নমূল মানুষের খবরও নেয়নি কেউ, সাহায্য দূরের কথা। নজিপুরের মেয়র বলেছেন, বরাদ্দ করা সব কম্বল বিতরণ হয়ে গেছে। উপরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। পত্নীতলার ইউএনও জানান, ‘এবার ৫৩৯০টি কম্বল বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হয়ে গেছে। আরো পেলে বিলি করা হবে সেগুলো। এ জন্য বরাদ্দপত্র পাঠানো হয়েছে উপরে।’


আরো সংবাদ



premium cement