দেশে গরু-ছাগল বেড়েছে
- ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০৫
দেশে কৃষিশুমারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শুমারির চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় গত মঙ্গলবার। ১০ বছরের ব্যবধানে যে শুমারি করার কথা সেটি হলো ১৪ বছর পর। এতে ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে। ওই বছর শুমারির প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। আর চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করতে সময় লাগল চার বছর।
শুমারি চালাতে ব্যয় হয়েছে ৩৬১ কোটি টাকা। মজার বিষয় হলো- কৃষিশুমারি হলেও এতে দেশে মোট কতজন কৃষক আছেন সেই তথ্য নেই। শুমারি করার মূল উদ্দেশ্য হলো- সংশ্লিষ্ট খাতের বিদ্যমান অবস্থা জানা ও তার পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে এ খাতের উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। শুমারির প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, শুমারিতে তারা যেসব প্রশ্ন রেখেছিলেন তার মধ্যে কৃষকদের নিয়ে আলাদা কোনো প্রশ্নই ছিল না। তাই মোট কৃষকের সংখ্যা এখানে আসেনি। শুধু তাই নয়, গবাদিপশুর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে আংশিক। গৃহস্থের পালিত গরু ছাগলের তথ্য নেয়া হয়েছে; কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে যেসব গরু-ছাগল বা মোষের খামার সারা দেশে ছড়িয়ে রয়েছে সেগুলোর তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি। আবার গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির যে সংখ্যা বিবিএসের শুমারিতে উঠে এসেছে তার সাথে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিসংখ্যানের মিল নেই। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিসংখ্যানে এগুলোর সংখ্যা অনেক বেশি। এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, খানাপর্যায়ে যত গবাদিপশু কিংবা হাঁস-মুরগি পালন করা হয়, তার চেয়ে শতগুণ বেশি হয় বাণিজ্যিক পর্যায়ে। এটি একেবারেই ঠিক হয়নি।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ২০১৯ সালের তথ্য প্রকাশ করতে কেন চার বছর সময় লেগেছে সেই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, এখানে তো বইয়ে দেখলাম টেবিল আর টেবিল। কোনো পর্যালোচনা তো এতে নেই। এই টেবিল করতে কেন সাড়ে তিন বছর লাগবে। জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান ক্রমেই কমে আসছে; কিন্তু কৃষির গুরুত্ব কমছে না। জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে কৃষিশুমারির গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এটি সঠিকভাবে করা উচিত।
শুমারির তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ বছরের ব্যবধানে বছরে দেশে পতিত কৃষিজমি বেড়েছে ৬৩ শতাংশ। ২০০৮ সালের শুমারিতে যা ছিল দেড় লাখ একর, ২০১৯ সালে তার পরিমাণ দাঁড়ায় দুই লাখ ৪৪ হাজার একরে। অন্য দিকে দেশে নিট আবাদি জমির পরিমাণও কমছে। দুই শুমারির মধ্যবর্তী সময়ে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে প্রায় ১২ শতাংশ।
শুমারিতে গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাঁস-মুরগির সংখ্যা ২০০৮ সালের তুলনায় বেড়েছে। কিন্তু তাতে শুধু গৃহস্থালির হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগির হিসাব এখানে যুক্ত করা হয়নি। দেশে গরুর সংখ্যা দুই কোটি ৯৪ লাখ ৫২ হাজার। ২০০৮ সালে তা ছিল দুই কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার। মোট ছাগলের সংখ্যা এক কোটি ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার। ২০০৮ সালে তা ছিল এক কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার।
যে কৃষিশুমারিতে কৃষকের সংখ্যা নেই, খণ্ডিত ও অসম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, এর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত নয়- সেই শুমারির তথ্য জাতির কী কাজে লাগবে তা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা এটি জানি, এমন একটি অগ্রহণযোগ্য ও ভুয়া জরিপ চালিয়ে জনগণের বিপুল অর্থ পানিতে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাউকেই কোনোরকম জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে না। কারণ জবাবদিহির বিষয়টি আমরা রাষ্ট্রীয় জীবনের অভিধান থেকে অনেক আগেই মুছে দিয়েছি।
অবশ্য শুমারির একটি তথ্য জেনে জনগণ যে মানসিক সান্ত¡নার জায়গা খুঁজে পাবেন তাতে সন্দেহ নেই। শুমারির তথ্যে সঠিকভাবেই উঠে এসেছে- ২০০৮ সালের পর থেকে শুমারির নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশে গরু-ছাগলের সংখ্যা বেশ বেড়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা