অভাবীদের গরম কাপড় প্রয়োজন
- ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০৫
সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েক দিন ধরে বাতাসে কনকনে ভাব শুরু হওয়ায় সকাল ও সন্ধ্যার পর ঠাণ্ডা বেড়ে যাচ্ছে। কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে জনপদ ও বসতি। এতে করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
নয়া দিগন্তের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি নেমে গেছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহের শুরুতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তা ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
সকাল থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে চার পাশ। অনেক জায়গায় সূর্যের মুখ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। এতে জনজীবনে কিছুটা হলেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ চিত্র সারা দেশের মতো রাজধানীতেও বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, তাপমাত্রা আরো কমবে। আজ রোববার তাপমাত্রা তেমন না কমলেও এর পর থেকে ক্রমাগত কমতে থাকবে। এখনই একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। এটিও চলতে থাকবে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, গত কয়েক দিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ায় দিনের কয়েক ঘণ্টা সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে আসতে বাধা পাচ্ছে। দিনের একটি বিশেষ সময় ঠিকমতো গরম হতে না পারায় ঠাণ্ডা জেঁকে বসেছে। এ সময়ে উপমহাদেশের উচ্চ চাপবলয়ের একটি অংশ ভারতের বিহার রাজ্যের কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। এর একটি প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে পড়েছে। একই সাথে ভূপৃষ্ঠ ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ায় ঊর্ধ্বাকাশে জেট স্ট্রিমের প্রবাহও অপেক্ষাকৃত নিচে নামতে শুরু করেছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার পর দক্ষিণ থেকে যে অপেক্ষাকৃত আর্দ্র বায়ু বাংলাদেশসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবাহিত হতো তা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারণে বাংলাদেশে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা পড়েছে।
আমাদের দেশে শীত ধনীর জন্য আরামদায়ক হলেও তা গরিবের জীবনে বয়ে আনে দুর্ভোগ। এ দুর্ভোগ নানাভাবে তাদের জীবন প্রভাবিত করে থাকে। যেমন- তীব্র শীতে শ্রমজীবীদের দৈনন্দিন কাজ করতে কষ্ট হয়। শ্রম বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। ফলে তাদের আয় কমে, সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, শ্রমজীবী গোষ্ঠীর সবাই দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। এ ছাড়া শীত পড়লে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হন। তাদের কষ্টও বেড়ে যায়। শীতের শুরুতে শিশু ও বৃদ্ধরা উষ্ণ পরিবেশে থাকলে অথবা রাখা হলে শীতের রোগগুলো থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমে গেলে শস্যেরও ক্ষতি হয়ে কৃষকের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দেয়।
এমনিতে মহামারী করোনার সময় থেকে দেশের বেশির ভাগ মানুষের সেই যে আয় কমে গেছে, তা আর আগের অবস্থায় নিতে পারেননি তারা। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছিল, আমাদের দেশে হতদরিদ্রের সংখ্যা দুই কোটি ৪২ লাখ। আর করোনাকালে আয় কমে যাওয়ায় এ সংখ্যা আরো বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত একাধিক পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এই মুহূর্তে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি।
বিপুল এই মানুষের জীবনে শীত মানেই হলো, কষ্টের জীবন। অভাব-অনটন ও দুর্দশাগ্রস্ত এসব মানুষের শীতে কাজ করতে যেমন কষ্ট হয়, তেমনি টাকার অভাবে শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজনীয় গরম কাপড় কিনতে পারেন না তারা। এতে করে এসব পরিবারের শিশু-বৃদ্ধরাও আক্রান্ত হন শীতজনিত রোগে। তাদের এ দুর্ভোগ লাঘবে সচ্ছল ব্যক্তিদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে; সাহায্য করতে হবে অর্থ ও গরম কাপড় দিয়ে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শীতেকাতর মানুষজনকে সহযোগিতার জন্য এখনই এগিয়ে আসা দরকার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা