শিক্ষকের বলপূর্বক পদত্যাগ কেন?
- ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:০৫
সহযোগী একটি জাতীয় দৈনিকের সিলেট প্রতিনিধির পাঠানো খবর, ‘বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির তদন্ত কমিটির সদস্য রাখা হয়েছিল তাকে। তদন্তে সেই দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় তিনিও প্রতিবেদন দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এতেই শুরু হয় ষড়যন্ত্র।’ আরো জানানো হয়েছে, বিদ্যালয়টির সভাপতিকে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষক রাতে ওই শিক্ষককে ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে শিক্ষকতা থেকে একটি পদত্যাগপত্রে জোরপূর্বক সই নিয়ে নেন। এরপর থেকেই তিনি চাকরিহারা। অথচ পদত্যাগপত্র যে ব্যবস্থাপনা কমিটিতে অনুমোদন করানো হয়েছে, সে কমিটির মেয়াদও এই ঘটনার এক মাস আগে শেষ হয়ে যায়। এর পর থেকে চাকরি হারিয়ে সে শিক্ষক সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে গিয়ে লিখিতভাবে জানিয়ে তার চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান। সর্বশেষ, তিনি তার এলাকার মন্ত্রীকে বিষয়টি জানালে মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এ কর্মকর্তা মন্ত্রীর এ আদেশ আমলে না নিয়ে চুপ করে আছেন বলে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ঘটনা সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উচ্চ বিদ্যালয়ের। বিগত ৯ জুন সহকারী শিক্ষক লালমোহন দাস এ ঘটনার শিকার হন। ঢাকায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত এক অভিযোগে লালমোহন দাস বলেছেন, তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাতে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর একজন সদস্য ছিলেন শিক্ষক লালমোহন। গত বছর ১১ জুলাই এক লাখ ৬১ হাজার ১৮১ টাকার অনিয়ম পেয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয় ওই তদন্ত কমিটি। এর ফলে প্রধান শিক্ষক সহকর্মী লালমোহনের প্রতি ছিলেন ক্ষুব্ধ। অভিযোগ, একপর্যায়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট অনেককে ম্যানেজ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী দাস চয়ন। তিনি নাকি চক্রান্ত চালিয়েছেন লালমোহনকে স্কুল থেকে বের করে দিতে। গত ৯ জুন অনেক রাতে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জরুরি কাগজ পাঠানোর নামে লালমোহনকে ডাকেন। লালমোহন গিয়ে সেখানে দেখতে পান, বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ কয়েকজন বসে আছেন। তারা তাকে সাথে সাথে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বললেন। প্রধান শিক্ষক নিজে তাকে মারার জন্য উদ্যত হলে তিনি পদত্যাগপত্র দিতে বাধ্য হন। ২৭ জুন স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি লালমোহনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে। অথচ এ কমিটির মেয়াদ ১০ জুন শেষ হয়ে গেছে। মহাপরিচালক এমন অভিযোগ পেলে পরিচালকসহ (প্রশাসন) কয়েকজনের সাথে আলাপ করেন। ইতোমধ্যে শিক্ষক লালমোহন দাস এলাকার এমপি, তথা পরিকল্পনামন্ত্রীকে এ নিয়ে অবগত করেন। তিনি ‘যথাযথ’ ব্যবস্থা নিতে বললেও জেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগে জানা যায়। এ দিকে অসহায় শিক্ষক লালমোহন চাকরি ফিরে পেতে দ্বারে দ্বারে ফিরছেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সব্যসাচী দাস বলেছেন, ‘মেয়েসংশ্লিষ্ট ঘটনায় অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে লালমোহন নিজেকে বাঁচাতে শিক্ষকতা হতে পদত্যাগ করেন।’ আর লালমোহন বলেছেন, তাকে ওই স্কুল থেকে তাড়াতে এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। বিদ্যালয় সভাপতির বক্তব্য, ‘পরীক্ষা হলে নারীঘটিত বিষয়ে ওই শিক্ষক স্কুল থেকে পদত্যাগ করেছেন। এটা তার দ্বারা সম্ভব। আমরা বৈধ উপায়েই সব কিছু করেছি। তিনি আদালতে গেলেই এবং মামলা করলে সব প্রমাণিত হবে।’
এ ব্যাপারে উপযুক্ত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হলে তা সবার কাছে সমীচীন ও গ্রহণীয় হবে বলে মনে করা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা