কর্তৃপক্ষের নজর নেই কেন?
- ১৬ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
একটি সহযোগী দৈনিকের সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সেখানে ৩০ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া মনোয়ার জুট মিলের সব যন্ত্রাংশসহ সর্বস্ব লুট করা হয়েছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি এর বিরুদ্ধে। এই মিলের অর্ধশত ব্রডলুমসহ সর্বপ্রকার যন্ত্রপাতির দুর্বৃত্তরা খুলে নিয়েছে। দীর্ঘ তিন দশককাল বন্ধ থাকার সুযোগে তারা মিলের বিপুল পরিমাণ মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে। বর্তমানে মিলের কেবল অবকাঠামো ও জমি দাঁড়িয়ে আছে।
জানা যায়, ১৯৯৩ সালে সে সময়ে ২৮ বছর বয়সী মিলটিকে অলাভজনক অবস্থায় সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। এটি বিক্রির জন্য বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) টেন্ডার আহ্বান করলে মেসার্স শামছুন্নাহার জুট ইন্টারন্যাশনাল ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় ‘সর্বোচ্চ’ দরদাতা বলে গণ্য হয় এবং সে মোতাবেক তাদের নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু তারা দীর্ঘ দিনেও মিলটি বুঝে নেননি। এ দিকে মিলের সবকিছু লুটপাট হয়ে যাওয়ায় এবং ২৫ বছরেও মিল দরদাতা প্রতিষ্ঠান বুঝে না নেয়ায় সরকার বিরাট ক্ষতিগ্রস্ত।
জানা গেছে, রাজধানীর অদূরবর্তী, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকাতে ১৯৬৫ সালে ৯ একর ৫ শতাংশ ভূমিতে মনোয়ার জুট মিল নির্মাণ করা হয়েছিল। লোকসান দেখিয়ে তা ১৯৯৩ সালে বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে মাত্র ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় তা পেলেও সংশ্লিষ্ট দরদাতা প্রতিষ্ঠান ১৪ বার সময় নিয়েও এ মিল আজ পর্যন্ত বুঝে নেয়নি। সব শর্ত লঙ্ঘন করায় তাদের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে যায়। ২০০২ সালে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। মামলা চলাকালেই ২০১২ সালে তারা চার কোটি টাকা জমা দেন। ফলে বিজেএমসি মিলটি দেখাশোনার জন্য চারজনকে মিলের নিরাপত্তার জন্য নিয়োগের অনুমতি দেয় তাদের। পরে স্থানীয় একজন আগের দরের বদলে নতুন দরে মিল বিক্রির আদেশ প্রার্থনা করে হাইকোর্টে মামলা করেন। এখন উভয় রিট চলমান। মূলত মামলার জটিলতায় কোনো সুরাহা হয়নি এই সঙ্কটের।
সরেজমিন দেখা গেছে, এই মিলের কোনো মেশিন নেই- সবকিছু লুটপাট হয়ে গেছে। চোখের সামনে ঐতিহ্যবাহী জুট মিল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় এই মিলের প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মচারী ও স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, ‘দীর্ঘ ৩০ বছর এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছি। কিন্তু মিলের কোনো যন্ত্রাংশ নেই। কারণ সবকিছু চোরেরা নিয়ে গেছে। মাত্র চারজন তা প্রতিরোধ করতে পারি না। অপর দিকে চোরেরা ৫০-৬০ জন একত্রে আসে এং যাবতীয় জিনিসপত্র লুটে নেয়। বাধা দিলে আমাদের তারা মারধর করে। বাধা দিতে গিয়ে কয়েকবার বোমার শিকারও হয়েছি আমরা। একবার আমাদের বেঁধে পানিতে ফেলে দিয়ে ট্রলার ও গাড়িতে করে চোরেরা মেশিনপত্র নিয়ে যায়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অনেক মামলা ও অভিযোগ করা হয়েছে এ নিয়ে। তবে বিজেএমসি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ জানা যায়, বিজেএমসি এবং দরদাতাদের কর্মীরা একত্রে মিলটিতে নিরাপত্তার কাজে ছিলেন। তারপরও কোটি কোটি টাকার দামি দামি যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তা করা হয়েছে অবাধে। অথচ কয়েক শ’ কোটি টাকার মিল কেবল ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা যায়, দরদাতা প্রতিষ্ঠানের মালিক এই মিল বিক্রির নামে কয়েকজন লোক থেকে অগ্রিম কোটি কোটি টাকা নিয়ে এখন ঢাকায় থাকেন। তাই মিল বুঝে না নিলেও বা চুরি হলেও তার ক্ষতি নেই। তারা সব অভিযোগ বেমালুম অস্বীকার করে বলেছেন, ‘চুরি নিয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে দ্রুত মিল বুঝে নেয়া হবে। তখন চালাতে না পারলে এখানে আবাসন করা হবে।’ বিজেএমসির কথা হলো, ‘মামলার জন্য কিছু করা যায় না। এখানে মেশিনারি অকেজো বলে কোনো কাজে আসবে না।’ অপর দিকে, এলাকার মানুষ নতুন দরপত্রের জোর দাবি জানায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা