২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পদ্মা-ধলেশ্বরীতে অসময়ে ভাঙন

সর্বস্বান্ত হচ্ছে হাজারো মানুষ

-

প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসায় নদীভাঙনের গতিপ্রকৃতি পাল্টে গেছে। সময়-অসময়ে দেশের নানা প্রান্তে ভাঙছে নদ-নদী। ফলে প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষ। কেউ ভিটেমাটি হারা হচ্ছে, আবার কারো ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে অবস্থাসম্পন্নরা মুহূর্তে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। অথচ এসব মানুষকে পুনর্বাসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
নয়া দিগন্তে গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অসময়ে ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদী-তীরবর্তী রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জের হাজারো বাসিন্দা। রাজবাড়ীতে পদ্মায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পদ্মার ভাঙনে রাজবাড়ীর অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে খোলা জায়গায় বসবাস করছেন। খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। আর মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুরনো ধলেশ্বরীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি সেতু ও ৫০০ মিটার পাকা রাস্তা। সেতুটি ধসে পড়ায় ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিলীন হয়েছে বেশ কয়েক একর ফসলি জমি ও ১৫টি বসতবাড়ি। ভাঙনের কবলে রয়েছে আরো অর্ধশত বসতবাড়ি।
নয়া দিগন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজবাড়ীতে হেমন্তে আগ্রাসী রূপ নিয়েছে পদ্মা। এ সময়ে পদ্মার এমন ভয়ঙ্কর রূপ আগে কেউ দেখেনি। জেলায় গত কয়েক দিনে পদ্মায় বিলীন হয়েছে ছয় শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। ভাঙন দেখা দিয়েছে শহর প্রতিরক্ষা বাঁধেও। হুমকিতে বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। ভাঙনকবলিত রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বড়চর, বেনিনগর, কালিতলা, চরসিলিমপুর এলাকায় নদীতে প্রচণ্ড স্রোত। বড়চর বেনিনগর এলাকায় পদ্মা নদীর মাঝামাঝি এলাকায় চর জেগেছে। ফলে মূল স্রোতে পদ্মার ডান দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় নদীভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গত কয়েক দিন ধরে ভাঙন চললেও এখনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। দ্রুত ভাঙন রোধ করা সম্ভব না হলে আরো অনেক ঘরবাড়ি-স্থাপনা পদ্মায় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ দিকে ঘিওর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতার পাঠানো খবরে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ধলেশ্বরী তীরবর্তী এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও জমি ভাঙছে। নদীভাঙনে গত তিন বছর ধরে বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কমপক্ষে ৭০-৮০টি বসতবাড়ি ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। চলতি বছর ভাঙন ধরে রাস্তা ও ব্রিজের গোড়ায়। নদীতে অসময়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় চলতি মাসের শুরুর দিকে ভাঙন তীব্রতর হয়। মাঝে পানি কমলেও ভাঙন থামেনি। ভাঙনে ফসলি জমি ও ভিটে হারিয়েছেন অনেকে। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া না হলে আরো অনেকের ভিটেহারা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাউবোর কর্মকর্তাদের বারবার জানানো হলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
পাউবো বলছে, উজানে অসময়ে বন্যার কারণে পদ্মায় পানিপ্রবাহ বেড়েছে। সাথে সাথে পানি কমতে থাকায় রাজবাড়ীতে এ সময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে ভাঙনের একটি কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকে। প্রভাবশালীরা বালু তুলছেন, অন্য দিকে নদী ভাঙছে। বালু তোলা বন্ধ হলে ভাঙন কিছুটা কমবে বলে মনে করা হয়।
সাধারণত, ভাঙন দেখা দিলে পাউবো কিছু জিওব্যাগ ফেলে নিজেদের দায়িত্ব পালন হয়েছে বলে মনে করে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। শুধু সরকারি অর্থের অপচয় হয়। সঙ্গত কারণে নদীভাঙন রোধ করতে হলে অস্থায়ীসহ দীর্ঘস্থায়ী টেকসই প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এর অর্থ হচ্ছে, নদীভাঙন রোধে বড় উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। একই সাথে নদীর গতিপথ সরলীকরণ করলে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষা করা সম্ভব। তবে সবার আগে দরকার, অসময়ে নদীভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন যারা, তাদের তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা করা। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এখনই রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জের ঘিওরে নদীভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন।


আরো সংবাদ



premium cement
ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন আ’লীগ ইসলামী আদর্শকে জঙ্গিবাদ বলে এখন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে : আলাউদ্দিন সিকদার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কঠোর হয়ে দমন করতে চাই না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শরণখোলা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে আলী সভাপতি-আনোয়ার সম্পাদক রিমান্ড শেষে কামরুল-জ্যাকবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ সংবিধানে যেসব সংস্কার প্রস্তাব দিলো বিএনপি যমুনা রেল সেতু উদ্বোধন জানুয়ারিতে, ট্রায়াল ট্রেনের যাত্রা শুরু চিন্ময়ের মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা করতে ভারতকে অনুরোধ ইসকনের শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে হেফাজতের অভিযোগ চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন নামঞ্জুর আশুলিয়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সকল