২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
মা ও শিশু কর্মসূচি নিয়ে অবহেলা

এ খাতে সরকারের মনোযোগ দরকার

-

সমাজে দুস্থ মানুষের সংখ্যা যখন বাড়ছে সরকারি সহায়তাও কমে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী দুঃসময়ে সামাজিক সহায়তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর কথা। পণ্যমূল্যের অভিঘাতে আরো মানুষ নতুন করে অসহায় হয়েছে। যারা দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি ছিল তারা দরিদ্রতার মধ্যে পড়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো গোটানো হচ্ছে। কোনোটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, কোনোটি বরাদ্দ সীমিত করা হয়েছে। কোনোটি নামমাত্র চললেও প্রকৃতপক্ষে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা বাস্তবে এখন আর করা হচ্ছে না। এমন একটি কর্মসূচির নাম ‘মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি’। সহযোগী একটি দৈনিকে জানা যাচ্ছে, সারা দেশে প্রসূতি মা ও সদ্যোজাত শিশুদের জন্য চালানো এ কর্মসূচি থেকে আর সেভাবে সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না।
এই কর্মসূচিটি গ্রামীণ এলাকায় ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ‘মাতৃত্বকালীন ভাতা’ নামে প্রথম চালু হয়। শহর এলাকায় ‘কর্মজীবী মায়ের ভাতা’ নামে শুরু হয় তার তিন বছর পর। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ‘মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি’ নামে সমন্বয় করে নতুন করে এটি চালু হয়। মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের অধীনে এটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টার্গেট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নারীদের জন্য সময়টা অত্যন্ত নাজুক। গর্ভধারণ থেকে এক হাজার দিন তাদের নগদ সহায়তা দেয়া হয় এ কর্মসূচির আওতায়। দরিদ্রতার কারণে দেশের বিপুলসংখ্যক মা প্রসূতিকালে উপযুক্ত খাবার ও চিকিৎসা পান না। পরিবার তাদের জন্য আলাদা যতœ নিতে পারে না। এ কর্মসূচির মাধ্যমেই মূলত শিশুপুষ্টির জোগান দেয়ার চেষ্টা করা হয়। গর্ভকালীন মায়েরা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে না পারার কারণে কম ওজন ও উচ্চতার সন্তান জন্ম দেন। এই ঘাটতি পুরো জীবনেও তারা আর কাটিয়ে উঠতে পারেন না।
এ কর্মসূচির সফলতার কারণে আরো দুই লাখ ভাতাভোগীকে নতুন করে যুক্ত করা হবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও ১৬ মাস ধরে এ তালিকা করা বন্ধ রয়েছে। সরেজমিন জানা যাচ্ছে, বর্তমান তালিকা থেকে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই তালিকায় নতুন করে প্রতিস্থাপন হচ্ছে না। অনেকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন। ‘নতুন তালিকাভুক্তির নির্দেশ নেই’ বলে মাঠপর্যায় থেকে সন্তানসম্ভবা ও প্রসূতিদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ ভাতাভোগীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫ জন। এর মানে হচ্ছে- এতগুলো দুস্থ শিশুর পেছনে মা নিয়মিত একটা খরচ করার সুযোগ পেলেন। তিনি নিজেও সংসার পরিচালনায় সহজতা পেলেন যদিও মা ও শিশু সহায়তার আওতায় মাসে মাত্র ৮০০ টাকা করে দেয়া হয়। প্রয়োজনের তুলনায় এটি নিতান্তই কম।
সময়ের দাবি হচ্ছে- অভাবী মায়েদের পাশে বাড়তি হারে দাঁড়ানো। এই বরাদ্দ আরো বাড়িয়ে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা আরো বাড়ানো। কর্মসূচির আওতায় বাইরে থাকা এলাকাগুলোতে সেটি বিস্তৃত করা। এমনকি দেশের কোনো একটি অংশও যেন এর আওতার বাইরে না থাকে। জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ভাতাভোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৫৪ হাজার করার কথা ছিল। এ খাতে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের বরাদ্দ এক হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশের বর্তমান বাজেটের তুলনায় এই বরাদ্দ নগণ্য বলতে হবে। অথচ এর সুফল পাওয়া যাবে দীর্ঘমেয়াদে। বিশেষ করে একটি সক্ষম স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম পাবে দেশ। খবর অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি অবহেলার শিকার হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সঙ্কট চললেও এক দুই হাজার কোটি টাকা এ খাতে বরাদ্দ দেয়া কঠিন কিছু হবে না। আমরা আশা করব, সরকার এ বিষয়ে নতুন করে মনোযোগ দেবে। চলমান প্রকল্পটি যতেœর সাথে বাস্তবায়ন করবে। এর আওতা বাড়ানোর পাশাপাশি সহায়তার পরিমাণ বাড়াতেও সরকার আন্তরিক হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
গণমাধ্যমের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জাপানে রকেট পরীক্ষাস্থলে ভয়াবহ আগুন সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩ আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি : হাইকোর্টের লিখিত আদেশ প্রকাশ কুমিল্লা সীমান্তে মাদকসহ ভারতীয় নাগরিক আটক এশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তানে নিহত আরো ৬, সেনা মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ বিয়ের প্রলোভনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন

সকল