২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা

শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায় জনগণ

-

দেশে বিরোধীদের রাজনৈতিক কার্যক্রম সচল হতে শুরু করেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এটি একরকম নিষিদ্ধ ছিল। তবে বিরোধীরা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ পেলেও তাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে নানা বাধাবিপত্তি। এবার প্রথমে দেখা গেছে, বিরোধীরা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করলে সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে পুলিশের সহায়তায় পেশিশক্তি দেখিয়ে তা ভণ্ডুল করেছে। এমন অপকৌশল জাতি দীর্ঘ দিন দেখেছে। এখন বিরোধীদের কর্মসূচি ঠেকাতে এমন সব উপায়ে বাধা দেয়া হচ্ছে; যা মোটেও শোভন নয়; বরং রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। এ ধরনের বাধায় বিরোধী নেতাকর্মীরা সাময়িক বিপদে পড়লেও তাদের কর্মসূচি আর বানচাল করা যাচ্ছে না। সরকারি দলের এসব বেআইনি কর্মকাণ্ড দেশবাসী ভালোভাবে নিচ্ছে না। তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি আরো কলুষিত করার দায় আওয়ামী লীগের ওপরই বর্তাবে।
চট্টগ্রামে গণসমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে। তাদের বহনকারী যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ঠেকাতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং পর্যন্ত করা হয়েছে। এলাকাবাসীকে হুমকি দিয়ে ক্ষমতাসীনরা বলেছেন, সরকার এখনো এক বছর ক্ষমতায় আছে, সুতরাং সমাবেশে যোগদানকারীরা যেন চট্টগ্রাম থেকে আর এলাকায় ফিরে না আসেন। কিছু জায়গায় সমাবেশগামী জনতার ওপর হামলা করা হয়েছে। তারপরও লোকসমাগম ঠেকানো যায়নি। বিপুল মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে বিএনপি সফল সমাবেশ করেছে।
পরবর্তীতে ময়মনসিংহ গণসমাবেশ নিয়ে আরো আক্রমণাত্মক হয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। বাধা দিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁটি গেড়েছিলেন। এর সাথে কিছু স্থানে পুলিশও যোগ দেয়। তারা বহু মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে, অনেককে পিটিয়েছে। সমাবেশগামী বিএনপি নেতাকর্মী মনে করে সাধারণ মানুষকেও পেটানোর ঘটনা ঘটেছে। এখানে আরেকটি অপকৌশল নেয়া হয়, ময়মনসিংহগামী সব যানবাহন বন্ধ করে দেয়া হয়। এত বাধাবিপত্তির পরও সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকানো যায়নি।
এবার খুলনা গণসমাবেশ নিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা আরো জোরালো হয়েছে। দুদিন আগেই গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দেখানো হচ্ছে, কাজটি সরকারি আদেশে হয়নি। মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা এটি করেছেন। এতে পুরো দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। তবে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকরা দু’দিন আগেই সমাবেশমুখী হয়েছেন। শহরে এসে খাবার হোটেলগুলোতে সরবরাহ সীমিত থাকলেও যাতে খাদ্য-পানীয়ের সঙ্কটে না পড়েন; সে জন্য প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সমাবেশমুখী মানুষ চিঁড়ামুড়ি ও খাবার পানি নিয়ে রওনা হয়েছেন। লক্ষণীয়, এ সমাবেশ ঘিরে পুলিশকে আগের মতো অ্যাকশনে নামতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে। ভীতির পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
গণতন্ত্রকামী যেকোনো ব্যক্তি মনে করেন, বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করাটাই গণতান্ত্রিক। সরকারি দল নিজেরা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আসতে পারে। বিএনপির চেয়ে বেশি লোকসমাগম করে সরকারের প্রতি জনসমর্থন রয়েছে তা তারা প্রমাণ করে দিতে পারে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে এ সুযোগ সরকারের রয়েছে। অথচ তা না করে বিরোধীদের কর্মসূচি ব্যর্থ করে দেয়ার নেতিবাচক কৌশল কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ইতোমধ্যে তাদের এমন কৌশল কোনো কাজে আসেনি, প্রমাণ হয়েছে। তারপরও এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালানো দুঃখজনক।
সাধারণ মানুষ বর্তমান সরকারের সময় রাজনৈতিক অধিকার চর্চার সুযোগ পায়নি। এতে করে সরকার নিজে উপকৃত হয়েছে এমন নয়; বরং জবাবদিহিহীন অবস্থা তৈরি হওয়ায় দেশ এখন অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। সরকার নিজেও এক অসহনীয় অব্যবস্থাপনায় খাবি খাচ্ছে। এ থেকে উত্তরণের সহজ পথ রাজনীতিকে উন্মুক্ত করে দেয়া। বিরোধী দলগুলোকে পূর্ণ অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। এতে আকণ্ঠ অন্যায়-অনিয়মের প্রতিকার মিলতে পারে। সরকারের জন্য মসৃণ পালাবদলের পথ খুলতে পারে। আমরা আশা করব, বিরোধীদের দমনের পুরনো কৌশল পরিবর্তন করে সবার পূর্ণ রাজনৈতিক অধিকার দিবে সরকার, যা দেশে একটি স্বস্তিকর পরিবেশ আনতে সহায়ক হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
গণমাধ্যমের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জাপানে রকেট পরীক্ষাস্থলে ভয়াবহ আগুন সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৩ আদানির সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি : হাইকোর্টের লিখিত আদেশ প্রকাশ কুমিল্লা সীমান্তে মাদকসহ ভারতীয় নাগরিক আটক এশিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে রাশিয়ার পাল্টা হুমকি ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তানে নিহত আরো ৬, সেনা মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ বিয়ের প্রলোভনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিনই চীন-মেক্সিকো-কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ করবেন

সকল