নজরদারি জোরদার করুন
- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
যেকোনো প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুই-ই রয়েছে। ব্যবহারকারী কোন দিক বেছে নেবে নির্ভর করে তার রুচি, শিক্ষা-সংস্কৃতির ওপর। তবে অকল্যাণকর দিকগুলো রোধে রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য; বিশেষ করে রাষ্ট্রের। বাস্তবে দেশে শিথিল নজরদারির ফাঁকে প্রযুক্তির নেতিবাচক দিক যে অভিঘাত সৃষ্টি করছে তা দিন দিন সমাজের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে উঠছে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে আলোচনার বিষয় ইন্টারনেট প্রযুক্তি। দ্রুত প্রসারে এর কুফল গভীর প্রভাব ফেলছে আমাদের তরুণ সমাজে।
কখনো কখনো সামাজিক সচেতনতার নামে অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া আর ভিডিও শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে সমাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অশ্লীলতা; যা ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। কনটেন্টগুলো শুধু যে বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে তা নয়, পাশের দেশ ভারতের বাংলাভাষী অনেকে এসব ভিডিও তৈরিতে জড়িত। বিভিন্ন ভাষায় নির্মিত অশ্লীল কনটেন্ট বাংলায় ভাষান্তর করে পোস্ট করা হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশীদের ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫৬টি টিকটক ভিডিও সরিয়েছে। এর আগের তিন মাসে সাইটটি বাংলাদেশীদের ২৬ লাখ ৩৬ হাজার ৩৭২টি ভিডিও সরিয়ে নেয়। এভাবে ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্য সাইটগুলোও অসংখ্য ভিডিও সরিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া পশ্চিমা দুনিয়ার উদ্ভাবন। এসব পশ্চিমা মিডিয়া তাদের সামাজিক রীতিনীতি সংস্কৃতি মেনেই কাজ করে। ফলে ওইসব দেশে যেসব বিষয়ে মানুষ অভ্যস্ত, আমাদের এখানে সেসব বিষয়ে অভ্যস্ত না হওয়ায় এর কুফল তীব্রভাবে আঘাত হানছে। বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও ইনস্টাগ্রাম বেশি ব্যবহৃত। শুরুতে নির্দোষ বিনোদনমাধ্যম হিসেবে সাইটগুলোর সাথে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা পরিচিত হন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ইউজারদের একটি বড় অংশ আয়ের মাধ্যম হিসেবে এগুলোকে বেছে নেন। ইতিহাস, রাজনীতি, ভ্রমণ, সংবাদ, স্বাস্থ্য, গেম, বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, আলোচিত ঘটনা, রান্না, বাগান পরিচর্যাসহ অসংখ্য বিষয়ে ভিডিও তৈরি করেন তারা। কৌতূহলীরা ভিডিওগুলো দেখেন। পেজ, আইডি ও চ্যানেলে লাইক বা সাবস্ক্রাইব করা না থাকলেও এসব আধেয় সামনে চলে আসে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ও আগ্রহের ধরন বুঝে সাইটগুলো একই ধরনের পোস্ট ব্যবহারকারীদের সামনে আনছে। ফলে বেশি বেশি ভিডিও দেখা হচ্ছে, আয়ও হচ্ছে।
অর্থ উপার্জনে একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং সাইটে অশ্লীল-অশোভন আধেয় ছড়িয়ে দিচ্ছে। শর্ট ফিল্ম, নাটক, কৌতুক, কল রেকর্ড এবং কথোপকথন চ্যাটিংয়ের নামে যৌনতায় ভরা কনটেন্ট ছড়ানো হচ্ছে। এসব সাইটের আধেয় সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এমনও দেখা যাচ্ছে, কনটেন্টজুড়ে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি থাকলেও শেষদিকে সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। অনেক সময় নিজেরা মোবাইল ফোনে অশ্লীল কথাবার্তা বলে তা রেকর্ড করে ‘কল রেকর্ড ফাঁস’ বলে চালিয়ে দেয়। অবৈধ সম্পর্কের গল্প বানিয়ে রেকর্ড করেও পোস্ট করা হয়। যৌন উত্তেজক ছবি দিয়ে আকর্ষণ বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। অথচ সাইবার স্পেসে নজরদারি চালানো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এসব প্রতিরোধে কার্যকর কিছু করতে পারছে না।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, লিংক মুছে দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ ব্যবহারকারীর সংখ্যা এত বেশি যে, সব কনটেন্ট শনাক্ত করা অসম্ভবপ্রায়। একবার এমন একটি ভিডিও দেখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাত দিন ব্যবহারকারীর টাইমলাইনে আসতে থাকে। তাই রোধ করতে হলে লাইক, কমেন্ট ও অর্থের নেশায় যারা এই অপকর্মে জড়িত তাদের ধরতে হবে। কারণ ঘুরেফিরে নির্দিষ্ট কিছু মানুষ কাজগুলো করছে। তাদের ধরলে অন্যরাও সাবধান হবে।
এসব সাইট বন্ধ করার দায়িত্ব বিটিআরসির। আর নজরে আনার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এখন পাঁচ কোটি ফেসবুক ইউজার। ম্যানুয়ালি মনিটর করা সম্ভব নয়। পরিত্রাণের উপায় আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করে রোধ করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হলে এই অপকর্মে জড়িতদের ধরা অসম্ভব নয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা