২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জি-৭-এর অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল

এ সুযোগ গ্রহণ করা উচিত

-

আর্থিক শক্তিতে চীন অচিরেই যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের বিপুল জনসংখ্যার বাড়তি উপার্জন বিশাল বিনিয়োগ হিসেবে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এর মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক পর্যায়ে বেশ কিছুটা ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তারা বৈশ্বিক অবকাঠামো নির্মাণে শত শত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করেছে। ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘বিল্ট বেটার ব্যাক’ নামে একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন এর মোকাবেলায়। সেটি সফল হয়নি। এবার অন্য মিত্রদের সাথে নিয়ে আরেকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নকামী দেশের জন্য এটি ভালো একটি খবর। এই বিশাল তহবিল থেকে একটি অংশ যাতে আমরা বিনিয়োগ হিসেবে পেতে পারি সে প্রচেষ্টা আমাদের চালানো উচিত।
জি-৭ ভুক্ত উন্নত দেশগুলোকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রকল্পে পাঁচ বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র্র এ তহবিলের জন্য ২০ হাজার কোটি ডলার সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ২৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। বাকি অর্থের জোগান নিশ্চয়ই তাদের অন্য মিত্র দেশগুলো সরবরাহ করবে আশা করা যায়। এটিও দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণকে প্রধান লক্ষ্য করেছে। তবে এতে আরো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান বাড়ানো, লিঙ্গ সমতা অর্জন ও ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি দ্রুততর করা। ইতোমধ্যে এ তহবিলের আওতায় অ্যাঙ্গোলায় ২০০ কোটি ডলার দিয়ে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ, সেনেগালে টিকা উৎপাদন কারখানা নির্মাণ, সিঙ্গাপুর থেকে মিসর ও হর্ন অব আফ্রিকা হয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত এক হাজার ৬০৯ কিলোমিটার সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ ক্যাবল স্থাপন, ৩২ কোটি ডলার দিয়ে আইভরিকোস্টে হাসপাতাল গড়ে তোলা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে চার কোটি ডলার দিয়ে আঞ্চলিক স্তরে বিকল্প বাণিজ্য উৎসাহ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
‘বিল্ট বেটার ব্যাক’ নামের ওয়াশিংটনের আগের প্রকল্পটি করোনা মহামারীর মধ্যে নেয়া হয়েছিল। পরিকল্পনাটি আর বেশি দূর অগ্রসর হয়নি। এবার চীনকে সামনে রেখে আরো জোরালোভাবে ধনী দেশগুলোকে নিয়ে নতুন করে তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলো। তারা বলছে, বিআরআই চাপিয়ে দিয়ে চীন কম আয়ের দেশগুলোকে ঋণজালে আবদ্ধ করছে। শ্রীলঙ্কাসহ আরো কিছু দেশ ভুল উন্নয়ন লক্ষ্যের কারণে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। এ জন্য কিছুটা যে চীন দায়ী তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বিআরআইয়ের মাধ্যমে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে চীন প্রভাব বিস্তার করছে, এমনকি এর আড়ালে তারা ইউরোপেও তাদের বাণিজ্য বিস্তার করছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মতে, জি-৭-এর প্রকল্পটি থেকে সবাই সুফল পাবে।
বর্তমান বিশ্ববাস্তবতা হচ্ছে, চীনের উত্থান। যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো উপায়ে তাদের প্রভাব বিস্তারের পথ বন্ধ করতে চায়। অন্য দিকে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর লক্ষ্য জাতীয় উন্নয়ন। আমাদের যোগাযোগ অবকাঠামো দুর্বল ও পশ্চাৎপদ। সড়ক ও নৌযোগাযোগ উন্নত বিশ্বের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে এখানে এখনো বিশাল বিনিয়োগ দরকার। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামোও অনেক পেছনে। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আমাদের নেই। চীন ইতোমধ্যে আমাদের দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করেছে। এ দেশটি নানাভাবে আমাদের সাহায্য করে পাশে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র্রের নেতৃত্বে নতুন তহবিলের সাথে নৈতিক মূল্যবোধ ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়ও জড়িত করা হয়েছে। আমাদের উচিত এই তহবিল থেকে নিজেদের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করানোর উদ্যোগ নেয়া।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
টেকনাফে ২ লাখ ৪৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আইনজীবী আলিফের জানাজায় হাসনাত-সারজিস জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা : খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবেন মির্জা ফখরুল ইসরাইল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে আবারো রিমান্ডে সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল শিল্পপতির বাড়িতে ডাকাতি : ৭ লাখ টাকা, ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ২৪ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি ডিইপিজেডের লেনী ফ্যাশনের শ্রমিকরা

সকল