২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসন অকার্যকর

-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রদের আবাসিক হলে থাকতে পারা এখন অনেকটাই ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের দয়ার ওপর নির্ভর করছে। ছাত্রদের হলে সিট পাওয়া ও বসবাসের বিষয়গুলো এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সংগঠনটি। ছাত্রদের ওপর নানা অনিয়ম ও ছাত্রলীগের অত্যাচার নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকরা সম্প্রতি মানববন্ধন করেছেন। একজন প্রবীণ শিক্ষক এ দুরবস্থা নিয়ে সংবাদপত্রে নিবন্ধ লিখেছেন। তার পরও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।
জোরজবরদস্তির মুখে চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই অবস্থা অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) চার ছাত্রকে অন্যায়ভাবে হল থেকে বের করে দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোর পরিবর্তে বেশির ভাগ সময় ক্ষমতা চর্চাকারীদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। একে এক ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বলা যায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবক্স হলের এক ছাত্রকে বের করে দেয়ার খবর এসেছে গত রোববারের দৈনিক পত্রিকায়। ছাত্রলীগ অনুমোদন করেনি বলে বৈধভাবে সিট পাওয়ার পরও ওই ছাত্র থাকতে পারলেন না রুমে। সিট পেয়ে হলের ২২৮ নম্বর কক্ষে ওঠেন ফোকলোর বিভাগের ছাত্র সালমান। হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খবর পেয়ে সাথে সাথে কক্ষে গিয়ে তাকে রুম ছেড়ে দিতে বলেন। এ সময় তিনি হুমকি ধমকি দেন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাতে কাজ না হওয়ায় সালমানকে আটকে রেখে রুমে তালা লাগিয়ে দিতে যান। এক পর্যায়ে দলের ক্যাডাররা তার বেডিং বাইরে ফেলে দিয়ে রুমে তালা লাগিয়ে দেয়।
সিভাসুর চার ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলছাড়া করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নবীর অবমাননার প্রতিবাদ করেন ক্যাম্পাসে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তারা ওই কর্মসূচি পালন করেন। এরপর চারজনের বিরুদ্ধে আলাদা করে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি ও সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্ত ছাত্ররা সামাজিক মাধ্যমে এমন অপরাধ করেছেন বলে উল্লেখ করা হলেও পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়নি। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়া হয়নি। পরীক্ষা চলাকালীন এভাবে হল থেকে বহিষ্কার করা অমানবিক। খবরে জানা যাচ্ছে, তারা নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটায়। ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে না পারলেও সামান্য কোনো কারণে ঠিকই খড়গহস্ত হয়। বিশেষ করে ধর্মীয় ইস্যুতে তাদের অতি-উৎসাহী দেখা যায়। এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীরা বড় ধরনের অন্যায়ের শিকার হলেও প্রশাসন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্বিকার। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রবীণ শিক্ষক ছাত্রলীগের অনিয়ম বিশৃঙ্খলা নিয়ে একটি পত্রিকায় লেখেন, সরকারদলীয় এ ছাত্রসংগঠন আবাসিক হলের সিট-বাণিজ্য নিয়ে চরম নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তার নিজের বিভাগের ছাত্রদের হল থেকে বিতাড়িত করার কয়েকটি ঘটনা তিনি উল্লেখ করেন। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যে অকার্যকর সেকথাও তিনি বলেছেন। তার মন্তব্য, পৃথিবীর কোনো সভ্য সমাজে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এ রকম নৈরাজ্য নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রদলকে প্রকাশ্যে আক্রমণ করে ছাত্রলীগ। প্রশাসন অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেয়নি। এই প্রবণতা শুধু ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে। সিট, ডাইনিং বাণিজ্য, টেন্ডারবাজির ফলে শিক্ষাকার্যক্রম নষ্ট হচ্ছে। প্রশাসন উপযুক্ত ভূমিকা পালন করছে না। প্রশাসন ও ছাত্রলীগ এখন একাকার। এমন প্রশাসনিক ব্যর্থতা উচ্চশিক্ষায় বিপর্যয় ডেকে আনছে। এখনো সময় আছে, সংশ্লিষ্টরা সচেতনভাবে উদ্যোগ নিলে রাহুমুক্তি এখনও সম্ভব।


আরো সংবাদ



premium cement
কুড়িগ্রামে পিলখানা হত্যার তদন্ত ও চাকরিতে পূর্ণবহালের দাবি গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত : হামাস অ্যাডভোকেট সাইফুল হত্যা : সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের প্রতিবাদ সমাবেশ নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার সাথে মালদ্বীপের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে স্বাগত বিশ্ব নেতাদের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ল টাইগ্রেসরা ববিতে চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি মার্কিন দূতাবাস থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তির বিষয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণের সিদ্ধান্ত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের হাসিনার পালানোর দৃশ্য মনে করতে বললেন ফারুকী ঢাকা ইপিজেড ও সংলগ্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস

সকল