নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত উখিয়াবাসী
- ০৪ জুন ২০২২, ০০:০০
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত বিশ্বের সবচেয়ে মজলুম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বিশ্বে এখন পরিচিত একটি নাম বাংলাদেশের উখিয়া। তবে এই জনপদে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়ার পরও এখনো আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় এখানকার জনস্বাস্থ্য দিন দিন ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে উখিয়া উপজেলা সদরে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় সেখানে অতিরিক্ত মানুষের চাপে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ ও নাজুক হয়ে পড়ছে। অথচ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য বিদেশী সাহায্য সংস্থা থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ এসেছে। এনজিওদের মাধ্যমে ওই বরাদ্দের টাকায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তেমন কোনো উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান নয়। নয়া দিগন্তে প্রকাশিত উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতার এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারের তরফে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যাতে উখিয়ায় বিশ্ব সংস্থাসহ বিদেশী দাতাসংস্থা থেকে যেসব অর্থ বরাদ্দ এসেছে, তা থেকে স্থানীয়দের জন্য ৩০ শতাংশ বরাদ্দ দেয়ার। সেই অনুপাতে এনজিওরা যেন কাজ করে। যাতে স্থানীয়রা বঞ্চিত না হয়; সে দিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। তবে উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে কর্মরত দেশী-বিদেশী ১২০টি এনজিও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যথাযথভাবে সমন্বয় করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়ার উপজেলা সদরে প্রতি বর্ষা মওসুমে অনেক সড়কে ড্রেনের পানি উপচে পড়ে। সড়ক পানিতে থইথই করে। যথাসময়ে ড্রেন পরিষ্কার না করায় সেসব পথ দিয়ে হাঁটা দায় হয়ে ওঠে। ফলে জনদুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায়। এ ছাড়া উখিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের পাশের রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু ওই সড়কের ধারে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার সব মানুষই স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে রয়েছে। যদিও বিগত বছরগুলোতে উখিয়ায় রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। তবে এসব উন্নয়নের কোনোটাই পরিকল্পিতভাবে করা হয়নি। বাস্তবে নির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা না থাকায় এখানে এখনো গড়ে ওঠেনি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। পরিবেশসম্মত উপায়ে আধুনিক পদ্ধতিতে বর্জ্য অপসারণের কোনো ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়, বাসাবাড়িতে প্রতিদিনের জমে ওঠা আবর্জনা ভ্যানে করে এক দিন নিলে পাঁচ দিন নেয়া হয় না। এ কাজে কোনো তদারকিও নেই।
স্থানীয়দের মতো আমরাও মনে করি, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় উখিয়ায় বাড়তি চাপ পড়েছে। সেই চাপ মোকাবেলায় আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। তাই বিদেশী দাতাসংস্থা থেকে যে বরাদ্দ রোহিঙ্গাদের জন্য আসছে তা থেকে ৩০ শতাংশ স্থানীয় উন্নয়নে ব্যয় করার সরকারের প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত। বরাদ্দ পাওয়া অর্থের ৩০ শতাংশ দিয়ে টেকসই নাগরিকসেবা গড়ে তোলা সময়ের দাবি। তা না হলে অসহায় রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয়দের অসন্তোষ বাড়বে বৈ কমবে না। কারণ স্থানীয়দের মনে হবে তাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি সৃষ্টির পেছনে দায়ী অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ। সঙ্গতকারণে এই অসন্তোষ প্রশমনে বরাদ্দকৃত অর্থের একটি অংশ দিয়েই নাগরিক পরিষেবা গড়ে তুলতে হবে। আর এজন্য সর্বপ্রথম সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ অগ্রাধিকার পেতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা