দুর্ভোগ এড়াতে সতর্কতা কাম্য
- ১৩ মে ২০২২, ০০:০০
দুই বছর পর আবার পবিত্র হজব্রত পালনের সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশীরা। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দুই বছর হজের সুযোগ বন্ধ ছিল। এটি ইসলাম ধর্মের পাঁচটি ফরজ ইবাদতের একটি, যা কেবল আর্থিকভাবে সচ্ছল মুসলিমদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ বছর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৯ জিলহজ, ৮ জুলাই হজ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বিমানের হজ ফ্লাইট শুরু হবে ৩১ মে।
মহামারীর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারেননি। ২০২০ সালে ৬০ হাজারের মতো হজযাত্রী নিবন্ধন করেন; কিন্তু করোনাজনিত বিধিনিষেধের কারণে তারা আর যেতে পারেননি। গত দু’বছরে বেশ কিছু নিবন্ধিত হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে এবং অনেকে নিবন্ধন বাতিল করেছেন। বর্তমানে ৫৪ হাজার ৪৮০ জন নিবন্ধিত রয়েছেন। আগে নিবন্ধিতদের মধ্যে যারা এ বছর হজে যাবেন না তাদের নিবন্ধন বাতিল হবে।
এবারে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের জন্য জনপ্রতি অতিরিক্ত প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় করতে হবে। গত বুধবার সরকারিভাবে ঘোষিত দু’টি প্যাকেজে এই বাড়তি ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০২০ সালে যেখানে তিন লাখ ১৫ হাজার টাকায় হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল, সেখানে এবার খরচ পড়বে চার লাখ ৬২ হাজার টাকা। এর সাথে পশু কোরবানি বাবদ আরো ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা খরচ হবে।
এ ছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রার জন্য চার লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে ধর্মমন্ত্রণালয়। এবার সরকারিভাবে চার হাজার এবং বেসরকারিভাবে ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ পালন করবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারিভাবে হজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) জানিয়েছে, সরকার ঘোষিত প্যাকেজে যে ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে, তার চেয়ে ‘সামান্য’ কিছু বেশি ব্যয় করতে হবে হাজীদের। এর কারণও তারা জানিয়েছেন।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২০ সালে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল তিন লাখ ১৭ হাজার টাকা। এবার তা চার লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকায় নির্ধারণ করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
এবার হজের ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কিছু কারণ উল্লেøখ করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। তিনি জানান, টাকার বিনিময়মূল্য হ্রাস এর অন্যতম কারণ। এ ছাড়া সৌদি আরব পর্বে ব্যয়ের সব খাতের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ, কর আরোপ করা হয়েছে। মোয়াচ্ছাছার খরচ দ্বিগুণ এবং বাড়িভাড়া বৃদ্ধিও প্যাকেজ মূল্যবৃদ্ধির কারণ। তবে আমাদের ধারণা, মহামারী কেবল গরিবের ওপরই আঘাত হানেনি; ধনীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাই হজ পালনে ব্যয় যতটা সম্ভব কম রাখতে পারলে সেটিই করা উচিত।
এবার থেকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী কেউ হজে যেতে পারবেন না। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। কারণ বাংলাদেশীদের মধ্যে শেষ বয়সে হজে যাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল; ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের পক্ষে হজের কষ্টসাধ্য কিছু রীতি বা আচার যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। অনেকে হজ করতে গিয়ে মারাও যান। বয়সের সীমা বেঁধে দেয়া হলে এসব ‘বাড়তি ঝামেলা’ কমবে। আমাদের প্রতিবেশী মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে মুসলমানরা যুবা বয়স থেকেই হজের জন্য আলাদা সঞ্চয় করেন এবং মধ্য বয়সের আগেই হজ পালন করেন। বাংলাদেশে সেই চেতনার বিকাশ ঘটলে ইতিবাচক হবে বলেই আমাদের ধারণা। তবে ধর্মীয় ব্রত পালনে বয়সের সীমা অলঙ্ঘনীয়ভাবে চাপিয়ে দেয়া অনুচিত। ইসলাম এমন কোনো সীমা বেঁধে দেয়নি। সার্বজনীন শিক্ষালাভের অধিকার যেমন বয়সের সাথে সীমিত করা যায় না, হজের বিষয়টিও তেমনই হওয়া সমীচীন।
হজ ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছরই কিছু না কিছু অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতির ঘটনা ঘটে। আর তাতে করে ভয়ানক ভোগান্তির শিকার হন সম্মানিত হজযাত্রীরা। কখনো প্যাকেজের শর্ত না মানা, কখনো বিমানের ফ্লাইটের কিংবা মোয়াল্লেমদের সমন্বয়হীনতা, কখনো ভিসা জটিলতা ইত্যাদির মতো ঘটনা আমরা অতীতে দেখেছি। এবার এমন কোনো জটিলতা যাতে না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই সতর্ক থাকবেন এটাই সবার কাক্সিক্ষত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা