প্রমত্তা স্রোতস্বিনীর করুণ পরিণতি
- ২৯ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
নয়া দিগন্তের নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) সংবাদদাতার এক রিপোর্টে এবার উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এককালের স্রোতস্বিনী ডাকাতিয়া নদী এখন পানিশূন্য। ডাকাতিয়ার বুকে কোথাও ফসলের ক্ষেত, আবার কোথাও ফেটে চৌচির নদীর তলদেশ। আবার কোথাও অবাধে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ডাকাতিয়ার বুক থেকে। বর্ষাকালে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে ডাকাতিয়ার বুক থেকে মাটি তুলে নেয়ায় কোথাও কোথাও নদীর বুকে গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে নদী-তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি এখন হুমকির মুখে। এ দিকে বর্ষাকালে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে।’
জানা গেছে, বর্ষার দিনে বিখ্যাত এই ডাকাতিয়া নদী দক্ষিণ কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এখনো বহু স্থানে শুষ্ক মৌসুমে ডাকাতিয়ার পানি দিয়ে নদীর কাছের মানুষ ধানের চাষ করে থাকে। কিন্তু নদীর ড্রেজিং না করা, বর্ষাকালে বেআইনি ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন, বাঁশের অবৈধ বাঁধ দিয়ে মৎস্য শিকার, শুকনা দিনে মাটি কাটা প্রভৃতি অপকর্ম প্রমত্তা ডাকাতিয়াকে মরা খালে পরিণত করছে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে নীরব ও নিষ্ক্রিয়। অন্য দিকে যার যেভাবে সম্ভব হচ্ছে, লোকজন এ গুরুত্বপূর্ণ নদীকে যথেচ্ছ ব্যবহারে মেতে উঠেছে। বিশেষ করে নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের নানা স্থানে নদীর বেহাল দৃশ্য দেখা গেছে।
ডাকাতিয়া কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মধ্যবর্তী কাশিনগরে শুরু হয়ে দক্ষিণ দিকে গিয়ে একপর্যায়ে ফেনী নদীতে পতিত হয়েছে। এ জেলায় পাঁচটি প্রধান নদী হলোÑ মেঘনা, তিতাস, গোমতী, ডাকাতিয়া ও কাঁকড়ি। দক্ষিণ সদর, লালমাই, লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় রয়েছে ডাকাতিয়া নদী। নাঙ্গলকোট উপজেলার অংশে এ নদী বাঙ্গড্ডা, রায়কোট, মৌকরা, ঢালুয়া ও সাতবাড়িয়া হয়ে ছোট ফেনী নদীতে গিয়ে পড়েছে। ‘ডাকাতিয়া নদী ধায় খরতর বেগে’ একসময় ছোটদের বইতে লেখা হলেও এখন আর সে দিন নেই। নদীটি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে নাঙ্গলকোটকে পৃথক করা ছাড়াও এই দুই উপজেলায় এটা প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটারজুড়ে বয়ে গেছে। সম্প্রতি কাশিনগর থেকে পূর্ব বামপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত এই নদীতে দায়সারা গোছের খননকাজ করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। দু’বার এ কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে, ইরি ও বোরো ধানের সময়ে নদী শুকিয়ে চরম সেচ সঙ্কট জন্ম দিয়েছে দুই তীরের কয়েক হাজার কৃষিজীবীর জন্য। ডাকাতিয়ার প্রয়োজন আধুনিক ড্রেজার দিয়ে খনন।
সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘নদীর মাটি কেটে নেয়া, বালুখেকোদের বালু উত্তোলন প্রভৃতির ফলে নদীর তীর, আবাদি জমি ও পথঘাট ভাঙছে। খননের সাথে পাউবো নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া থেকে আলোকদিয়া হয়ে মুহুরী প্রকল্প পর্যন্ত বেড়িবাঁধ দিলে এলাকাবাসীর কল্যাণ হতো।’ পাউবোর সূত্র দাবি করে যে, ‘নতুন ডাকাতিয়া ১২ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে। নাঙ্গলকোটে খননের প্রকল্প প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বালুখেকোদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।’
আমরা দখলপীড়িত ডাকাতিয়াসহ বাংলাদেশের সব নদীর সুদিন ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ অবিলম্বে নেয়ার জোর দাবি জানাই কর্তৃপক্ষের কাছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা