২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা গুমের অভিযোগ

বিষয়টি পুলিশকে স্পষ্ট করতে হবে

-

দেশে আবারো গুম বা নিখোঁজ হওয়া ও খুনের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। গত বছর আইনশৃক্সক্ষলা রক্ষায় অভিজাত বাহিনী র্যাব ও পুলিশের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর কয়েক মাস এ ধরনের ঘটনা বন্ধ ছিল। ওই ঘটনার পর পুরো চার মাসে একটিও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। গুমের অভিযোগও পাওয়া যায়নি। কিন্তু গত ১৬ এপ্রিল কুমিল্লøায় একজন সাংবাদিক খুনের আসামি র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর এটিই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার প্রথম ঘটনা। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে পুলিশ প্রকাশ্যেই তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবক দল, ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা আজিজুর রহমান মুসাব্বিরকে তেজগাঁও থানা পুলিশ গত সোমবার সন্ধ্যায় আটক করে পুলিশ ভ্যানে নিয়ে যায়। কিন্তু এরপর পুলিশ তার বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছে না। তিনি কোথায়, কিভাবে আছেন কিংবা তাদের কাছে আটক আছেন কি না তা-ও বলছে না। মুসাব্বিরের পরিবার এবং তার দলের নেতাকর্মীরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা মুসাব্বিরের সন্ধান দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত এক যুগে দেশে অনেকগুলো গুম, খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কথিত বন্দুকযুদ্ধ নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। নাগরিক সমাজে একধরনের আতঙ্ক ও ত্রাসের পরিবেশ বিরাজ করছিল। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে মাঝে মধ্যে রাষ্ট্রের কাছে করুণ ফরিয়াদ জানিয়েছে স্বজনের খোঁজ দেয়া কিংবা নিদেনপক্ষে লাশটা ফিরিয়ে দেয়ার। কিন্তু তারা কোনো প্রতিকার পাননি। অভিযোগ উত্থাপনের জন্য উল্টো হুমকি-ধমকি এমনকি হয়রানির শিকার হয়েছেন। র্যাবের কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের কর্মীদের বিরুদ্ধে হুমকি, চাপ প্রয়োগ ও হয়রানি শুরু হয়। ২০২১-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভুক্তভোগী অন্তত ১০টি পরিবারের বাড়িতে গভীর রাতে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটির তথ্যেও দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর নিখোঁজ ও কথিত বন্দুকযুদ্ধ বন্ধ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও একধরনের স্বস্তি নেমে আসে। তারা বুকচাপা দীর্ঘশ্বাস মুক্তি দিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন যে, এবার হয়তো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান হবে; কিন্তু এটি ছিল সাময়িক বিরতি।
সরকার র্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে নানাভাবে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় এবং নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ পক্ষের একাধিক বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষার এবং গুম খুনের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকারও করেছে। আশা করা গিয়েছিল, এ অঙ্গীকারের কার্যকর বাস্তবায়ন হবে; কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় সে আশা দুরাশায় পরিণত হচ্ছে। সরকার এখন র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়ে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দেনদরবার করার পথে হাঁটছে।
আর এমনই এক সময়ে আবারো গুম খুনের ধারাবাহিকতা শুরু হলো বলে মনে হচ্ছে। আমরা জানি না, এর শেষ কোথায়। অব্যাহত মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশ ও জাতির জন্য কোনোভাবেই শুভ নয়। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের জন্যও এটি কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। আমরা আশা করব, বিষয়টি কর্তৃপক্ষ যত শিগগির উপলব্ধি করে সংশ্লিষ্ট সবার তত দ্রুত মঙ্গল বয়ে অনবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আইনজীবী হত্যায় উত্তাল চট্টগ্রাম জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ড. ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বিভক্ত না হতে মাহাথিরের আহ্বান ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর তিন মাস পার হলেই সব ঋণ খেলাপি মিয়ানমারের জেনারেল মিন অংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাইলেন আইসিসির প্রসিকিউটর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালাস পেলেন খালেদা জিয়া কিছু মানুষ জাতিকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন : ফখরুল আইনজীবীর হত্যাকারী ‘বঙ্গবন্ধু সৈনিক’ শুভ কান্তি দাস কে? এশিয়া ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড পেল অধিকার চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ

সকল