সিদ্ধান্ত নেয়ার এখনই সময়
- ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের তৎপরতা চলছে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নাগরিক সমাজের মধ্যে। চলছে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময়ও। সবারই আপাত লক্ষ্য একটিই। সেটি হলো একটি বৈধ সরকার প্রতিষ্ঠা করা, যারা জনগণের সত্যিকারের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসবে। যারা মানুষের অধিকার হরণ নয় বরং রক্ষা করবে।
গত রোববার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের এক সেমিনারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমরা শুধু এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আশা করি, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কে দেশ পরিচালনা করবেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা করে তিনি অবশ্য বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে কারো পক্ষ নেবে না তার দেশ। এতটুকু শিষ্টাচার কাক্সিক্ষত। কিন্তু তা প্রায়ই ভুলে যান কোনো কোনো বিদেশী কূটনীতিক। আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিকরা কিভাবে প্রকাশ্যে একটি দলের প্রতি সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছিলেন সেই দৃষ্টান্ত সামনে আছে। এবারো সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক সেটা কেউ চান না। চান না বলেই কথা আসছে। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ও টেবিলে আছে। সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রশ্ন তোলেন। বলেন, সত্যিকারার্থে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে আবশ্যক নাগরিকদের মতামত প্রকাশ, সাংবাদিকদের ভয়ভীতি ছাড়া অনুসন্ধান এবং নাগরিক সমাজের ব্যাপক পরিসরে জনমত গঠনের সুযোগ নিশ্চিত করা।
রাষ্ট্রদূত এমন সময় কথাটি বললেন যখন, দেশে গণমাধ্যমকর্মী আইন চাপিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ পুরোপুরি স্তব্ধ করে দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। সবাই জানেন, অবাধে কথা বলতে না পারলে, তথ্য প্রকাশ করতে না পারলে জনমত গঠনই সম্ভব নয়। দেশে এখন প্রায় সব মিডিয়ায় একতরফা সরকারি বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে। বিরোধী মত অনুপস্থিত। এই অবস্থা কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল নয়।
বিআইআইএসএসের সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুুল মোমেন। তিনি আগামী নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানোর কথা বলেছেন। খুব ভালো কথা। কিন্তু দেশে অনুষ্ঠিত অন্তত গত দু’টি নির্বাচনে পর্যবেক্ষকদের নানা শর্তের ঘেরাটোপে কিভাবে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল সেটা সংশ্লিষ্ট সবারই জানা।
রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও তৎপর। দলটির নেতারা সাম্প্রতিক সময়ে কূটনীতিকদের সাথে কথা বলছেন। তাতে আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গ থাকছে। রাজপথের আন্দোলনের কথাও বলছেন তারা। নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গেও তাদের বক্তব্য আছে। কোনো কোনো দল জাতীয় সরকারের ফর্মুলা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। গত ১২ বছরে বহু নির্বাচন আমরা দেখেছি। এগুলোর সব ক’টিই প্রশ্নবিদ্ধ। এতে প্রমাণিত, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে। তবে সেই বিশেষ ব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা হওয়া আবশ্যক। বর্তমান সরকারের গঠিত নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কী রূপ নেবে তা নিয়েও মানুষের মধ্যে সংশয় আছে। কারণ ক্ষমতাসীনদের সার্বিক প্রভাব থেকে সমাজ রাষ্ট্রের কোনো একটি অঙ্গও মুক্ত আছে এমন নয়। নির্বাচন কমিশন কতটা মুক্ত থাকতে পারবে সেটা সময়ই বলে দেবে।
বিএনপির মাঠপর্যায়ের রাজনৈতিক বক্তব্যে বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে দেয়া হবে না এমন ঘোষণাও আসছে। তবে আমরা চাই, সঙ্ঘাত সংঘর্ষ নয় বরং কার অধীনে কিভাবে নির্বাচন হবে সেই সিদ্ধান্তটা গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে আগেই নিতে হবে। নির্বাচনের নামে আরো একটি প্রহসন মেনে নেয়ার ধকল সামলানোর ক্ষমতা আমাদের আর নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা