নিউমার্কেটের ঘটনায় পুলিশের মামলা
- প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করাই কি লক্ষ্য
- ২৩ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনের প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষতি মোকাবেলায় পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যে কারণে হামলা-পাল্টা হামলা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলেছে দু’দিনব্যাপী। অথচ ঘটনার সূত্রপাতের সময় পুলিশ যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতো পরিস্থিতির এত ভয়াবহ অবনতি হতো না। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে পর্যাপ্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব ছিল। এক্ষেত্রে পুলিশের গাফিলতি থাকলেও রাজনৈতিক ঘটনা নিয়ন্ত্রণে প্রায়ই পুলিশ নির্দয়ভাবে দমন করে থাকে। অনেক সময় ওইসব অভিযানের প্রয়োজনীয়তা কী সেটাও বোঝা যায় না। প্রকৃতপক্ষে যে কারণে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সৃষ্টি ক্ষেত্রবিশেষে এখন আর সেই ভূমিকাটি পালন করতে দেখা যায় না পুলিশ সদস্যদের। এমন বহু প্রমাণ রয়েছে। তবে একটি ঘটনা ঘটলে তার রাজনৈতিক ব্যবহার করতে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। এতে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বদলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমনের ইচ্ছার প্রাধান্য দেখা যায়।
গত বুধবার গভীর রাতে পুলিশের এক পরিদর্শক বাদি হয়ে নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছেন। সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও জখমের অভিযোগে মামলাটি করেছেন তিনি। এ মামলায় বিরোধী দল বিএনপির ২৪ নেতাকর্মীকে ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এক নম্বর আসামি করা হয়েছে নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে। আরো রয়েছেন নিউমার্কেট থানা যুবদলের আহ্বায়ক আমির হোসেন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিজান। নিউমার্কেটে দোকান মালিক কিন্তু চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে একটি ইউনিয়ন বিএনপির এক যুগ্ম আহ্বায়ককেও আসামি করা হয়েছে। কৌতূহলোদ্দীপক হলো- টিপু নামের এক ছাত্রদল নেতার নামও রয়েছে। জানা যাচ্ছে, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে লন্ডনে। এ ছাড়া এমন ব্যক্তিও আসামির তালিকায় রয়েছেন যাদের বিএনপির রাজনীতির সাথে সংযোগ রয়েছে। কিন্তু নিউমার্কেট এলাকা কিংবা সেখানে ব্যবসায় বাণিজ্য করার কোনো তথ্য নেই। এতে মনে হ্েচ্ছ- প্রস্তুত করা কোনো একটি তালিকা থেকে একনাগাড়ে কিছু নাম বসিয়ে দেয়া হয়েছে। সাধারণত তালিকার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাছবিচার না করে এভাবে নাম বসিয়ে দেয়ায় এমন অযৌক্তিক আষাঢ়ে ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ভুতুড়ে মামলা আমরা বিগত একযুগে বহু দেখেছি। এমনকি ঘটনার সময় কারাগারে রয়েছেন এমন লোকদেরও সন্ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় আসামি করা হয়েছে। এই অমার্জনীয় ভুল করার পরও পুলিশের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। কিংবা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে তাদের হয়রানিও কমেনি। আমাদের আইনি প্রক্রিয়ার এই অন্ধত্ব দীর্ঘদিন ধরে চলছে। আবার বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলামের মতো মানুষদের বিরুদ্ধে রাস্তায় ঢিল ছোড়ার মামলা দেয়া হয়েছে। বিরোধী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে এই সরকারের আমলে এ ধরনের অদ্ভুত ভুতুড়ে মামলা করে হয়রানি একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
নিউমার্কেট ঘটনায় একদল ছাত্র নামধারী অন্যায়ভাবে সুযোগ নিতে চেয়েছেন, সেখান থেকে ঘটনার সূত্রপাত। সময়মতো প্রশাসন পদক্ষেপ না নেয়ায় সোমবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া ঘটনা পরদিন মঙ্গলবার দিনভর গড়িয়েছে। এখানে কার কতটুকু অপরাধ সুষ্ঠু তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। ঘটনার হোতাদের চিহ্নিত করা দুরূহ নয়। ওই এলাকায় ঢাকা কলেজ ছাত্র নামধারী বনাম নিউমার্কেট দোকানি মালিক-কর্মচারী বিরোধ দীর্ঘদিনের। মূল অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। জানমালের ক্ষতি হচ্ছে। এবারো পুলিশের করা মামলা থেকে অনুমিত যে, অপরাধীদের আড়াল করতে চায় পুলিশ। এমন একটি অমানবিক ঘটনা থেকেও বিরোধীদের দমানোর সুযোগ নিতে চায় তারা। দীর্ঘদিন ধরে দেশে এমন চর্চাই হয়ে আসছে। আমরা মনে করি, সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী ও চাঁদাবাজির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। সেখানে যে দলের লোকজনই জড়িত থাকুন না কেন; তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা