২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
নিয়ন্ত্রণের বাইরে বাজারদর

সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

-

দেশে বেশ কয়েক মাস ধরেই নিত্যপণ্যের দাম চড়া। নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে বাজার। জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে ঘোর দুর্দিন। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে খবর বের হচ্ছে; কিন্তু সরকারের তরফ থেকে কার্যকর বা দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে নাগরিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।
নিত্যপণ্যসহ সব জিনিসের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে জাতীয় সংসদে গত মঙ্গলবার তোপের মুখে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিরোধী দলের সদস্যরা। তারা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। দামের ঊর্ধ্বগতির পেছনে যে চক্র কাজ করছে, একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হয়েও বাণিজ্যমন্ত্রী তা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। জাতীয় সংসদে ‘বাণিজ্য সংগঠন বিল-২০২২’ পাসের আলোচনায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি-দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘গ্যাসের দাম, তেলের দাম, সব বাড়ানো হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। এ ক্ষেত্রে কিছু উদ্যোগ সরকার নিয়েছে; কিন্তু সেখানে স্বচ্ছতার অভাব আছে। ক্ষমতার বলয়ে থেকে সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।’ একই দলের অন্য সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সিন্ডিকেট হলো সরকার। সরকার আর সিন্ডিকেটের মধ্যে পার্থক্য নেই।’
সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সিন্ডিকেট মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে না- এমন কথা বলেছেন জাপার মহাসচিব এমপি মুজিবুল হক। ওই দলের আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘সিন্ডিকেট করে তেলের দাম বাড়িয়ে হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে, কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি মন্ত্রী।’ অন্য দিকে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, ‘সরকার দাবি করে, তারা ব্যবসাবান্ধব; যে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী একজন ব্যবসায়ী, সেই সরকার জনবান্ধব নয়; ব্যবসাবান্ধব হওয়াই স্বাভাবিক।’
যদিও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে যুদ্ধকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। যেসব পণ্য পরে আমদানি করা হয়, সেগুলোর দাম বাড়তে পারে; কিন্তু যেগুলো যুদ্ধের আগে আমদানি করা হয়েছে এবং যেগুলো দেশী পণ্য, সেগুলোর দাম কেন বাড়বে? এর কোনো সদুত্তর মিলছে না। দেখা গেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী চক্র বেশ কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতার পকেট থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ভোজ্যতেলের কথা। খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের তথ্য, মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের বাজার থেকে ভোক্তাদের পকেট থেকে হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে ব্যবসায়ী চক্র।
বাস্তবে সরকার যখন যে পণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনায় শিথিলতা দেখায়, তখন তার দাম বেড়ে যায়। এ ছাড়া বাজারে একটি পণ্যের দাম কমলে আরেকটির দাম বাড়ে, এটি একটি লুকোচুরি খেলার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময় যত গড়াচ্ছে দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে নীরব অভাব ও হাহাকার তত তীব্রতর হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ কথা ঠিক যে, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার; কিন্তু তাতে সহনীয় পর্যায়ে না এসে বাজারে পণ্যের দাম প্রকৃতপক্ষে কমেনি। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, এমন পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষজন এখন টিকে থাকার তাগিদে প্রয়োজনীয় খাবারের চেয়ে কম গ্রহণ করছেন। খাদ্যের পুষ্টিমানের সাথে আপস করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। সঙ্গত কারণে সবার মতো আমরাও মনে করি, বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পাশাপশি প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জোগাড় হলো না বাজারের টাকা, লাশ হয়ে ফিরলেন তুহিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তির মৃত্যু ব্যাটে-বলে ভালো খেলেও দলকে জেতাতে পারলেন না সাকিব ভারতে নারী সামরিক অফিসারদের নিয়ে নেতিবাচক রিপোর্ট ভারতে নলকূপ থেকে পানি নেয়ায় দলিত যুবককে পিটিয়ে হত্যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি : পাকিস্তানকে ৫৯১ রুপি দিয়ে সমাধানের ভাবনা আইসিসির এবার লিভারপুলের কাছে আটকে গেল রিয়াল মাদ্রিদ উত্তরসূরী হিসেবে রাউহির নাম ঘোষণা করলেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করতে প্রস্তুত আইসিসি’ এশিয়া ডেমোক্রেসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পুরস্কার পেল অধিকার মারবা? পারবা না।

সকল