দুর্নীতি রোধ করা গেলে স্বস্তি মিলতে পারে
- ২১ মার্চ ২০২২, ০০:০০
বাজারে নিত্যপণ্যের উত্তাপে ভোক্তারা অসহায়। সবধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম আগে থেকে বেশি। কোভিডের পর অর্থনৈতিক দুরবস্থায় রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন একে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এ দিকে সরকার নির্দিষ্ট কয়েকটি ভোগ্যপণ্য ভর্তুকি মূল্যে এক কোটি পরিবারের কাছ পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তালিকা তৈরি করেছে প্রশাসন ও এর সাথে জড়িত দলীয় লোকজন। সরকারি সহযোগিতা উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানের ক্ষেত্রে বড় বাধা দুর্নীতি। আগেও করোনাকালে ত্রাণ বিতরণের সময় প্রশাসন ও দলীয় লোকেরা কাজটি সঠিকভাবে করেননি। ফলে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেয়ে ওই সব ত্রাণ কার্যক্রমে আখের গুছিয়ে নিয়েছেন সুযোগসন্ধানীরা। এবার সাহায্যপ্রার্থীদের তালিকাটি আরো বড় করা হয়েছে। এ কার্যক্রমও দুর্নীতিমুক্ত করা না গেলে সুফল মেলা ভার।
করোনাকালে ৫০ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষকে আড়াই হাজার টাকা দিতে গিয়ে কেলেঙ্কারির শেষ ছিল না। এবার তালিকাটি বাড়িয়ে এক কোটি করা হয়েছে। ধরা হয়েছে পরিবারপ্রতি পাঁচ সদস্য হলে পাঁচ কোটি মানুষ এতে উপকৃত হবে। ইতিবাচক দিকটি হলোÑ জনসমষ্টির বিপুল একটি অংশ সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য পেতে যাচ্ছে। যদিও মাত্র পাঁচটি ভোগ্যপণ্য এর মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। ১১০ টাকা লিটার দরে দুই লিটার সয়াবিন তেল, ৫৫ টাকা দরে দুই কেজি চিনি, ৩০ টাকা দরে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ ও ৬৫ টাকা দরে দুই কেজি মসুর ডাল একজন কার্ডধারী পাবেন। দ্বিতীয় ধাপে তারা এর সাথে পাবেন ৫০ টাকা দরে দুই কেজি ছোলা। এটা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ নয়। বাজারের উচ্চমূল্য থেকে কিছুটা কম দামে কয়েকটা পণ্য তারা কিনতে পারবেন। একজন কার্ডধারী প্রথম ধাপে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত এবং ৩ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ধাপে টিসিবির কাছ থেকে এসব পণ্য পাবেন। সাধারণ মানুষকে বেঁচে থাকতে দৈনন্দিন আরো বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্য প্রতিদিন কিনতে হয়। তার পরও নিম্ন আয়ের কিছু মানুষের জন্য এর দ্বারা কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করছে সঠিকভাবে তালিকা প্রণয়ন ও তাদের কাছে সত্যিকার অর্থে এগুলো পৌঁছানোর ওপর।
দরদ্রি ও সীমিত আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করা যদি সরকারের লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে এ কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবার সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন রয়েছে বৈকি। এবারের তালিকায় করোনাকালে করা আগের ৩০ লাখ মানুষকে রাখা হয়েছে। সাথে স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় লোকেরা মিলে ৫৭ লাখ ১০ হাজার নতুন মুখ যোগ করেছেন। এরাই করোনাকালে বিতর্কিত তালিকাটি করেছিলেন। খবরে প্রকাশ, যারা সরকারের ২৩ ধরনের ভাতার সুবিধা পাচ্ছেন না, শুধু তারাই টিসিবির এ ফ্যামিলি কার্ডের সুবিধা পাচ্ছেন। তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রক্ষা করা হলে অর্থাৎ সরকারি অন্য সুবিধাপ্রাপ্তরা যদি এতে নতুন করে তালিকাভুক্ত না হন; তাহলে বেশিসংখ্যক মানুষ সাহায্য তালিকার আওতায় আসবেন। বঞ্চিত মানুষের সংখ্যা কমবে আশা করা যায়।
ইতোমধ্যে ভর্তুকি মূল্যের পণ্য জেলাগুলোতে চাহিদামাফিক পৌঁছে গেছে বলে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে। তিন হাজার এক শ’ ডিলারের মাধ্যমে এটি বণ্টিত হবে। যেসব এলাকায় ডিলার নেই; সেখানে পাশর এলাকা থেকে ডিলার এনে কর্মসূচি চালানো হবে। তবে কার্ডধারী ব্যক্তি যাতে সত্যিকারার্থে পেতে পারেন সে জন্য কড়াকড়ি নিয়ম পালন করা হচ্ছে। ডিলার পণ্য দেয়ার পর কার্ডে স্বাক্ষর করবেন। অন্য দিকে কার্ডধারীও পণ্য পেয়েছেন বলে নির্ধারিত ফর্মে স্বাক্ষর করবেন। এ কর্মসূচি সঠিকভাবে পালিত হলে রমজানে উচ্চমূল্যের বাজারে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। নিম্ন আয়ের মানুষেরও কিছুটা স্বস্তি মিলবে। আমরা আশা করব সবাই যাতে নিজের জায়গা থেকে দায়িত্বটি যথাযথভাবে পালন করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা