২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর

অবিলম্বে সুরাহা করতে হবে

-

নয়া দিগন্তের রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধির পাঠানো খবর, সীমান্তে ভূমি জটিলতায় রামগড় স্থলবন্দর থমকে আছে। জানা যায়, এই বন্দরের অবকাঠামোর কাজ থেমে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জটিলতা এবং সংশ্লিষ্ট নকশার অনুমোদন না পাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ে আজো বন্দর কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো কাজ আরম্ভই করতে পারেনি।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সরকার ২০১৭ সালে প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচে রামগড় স্থলবন্দর নির্মাণের অনুমতি দেয়। গত নভেম্বরে এখানে এসে পরের মাস থেকেই নির্মাণকাজ পুরোপুরি শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান স্বয়ং। সে মোতাবেক আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল ভবন নির্মিত হওয়ার কথা। এর মধ্যেই বিজিবি বা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের চেকপোস্ট, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন প্রভৃতি কার্যালয় থাকবে। ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ নীতিতে একই ভবনে সব চেকিংয়ের পর যাত্রীরা বহির্গমন করবেন অথবা এ দেশে প্রবেশ করবেন। তদুপরি পণ্য সংরক্ষণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা বিশিষ্ট ওয়্যারহাউজ, কোল্ড স্টোরেজ, লোড ও আনলোড করার ইয়ার্ড, ট্রানশিপমেন্ট শেড, স্ক্যানিং ও প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থা, ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন প্রভৃতি থাকবে। পরে এখানে ভারত ও বাংলাদেশের ১০০টি করে ট্রাকের জন্য পার্কিং ইয়ার্ড তৈরি করা হবে।
রামগড় বিজিবির লে. কর্নেল আনোয়ারুল মাজহার (জোনাল কমান্ডার) বলেন, সীমান্ত জটিলতায় কাজ কিছু থমকে আছে। নিয়মমাফিক দুই দেশের সীমান্তের দেড় শ’ গজের মধ্যে স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করতে হলে উভয় রাষ্ট্রের সীমান্ত রক্ষীর অনুমোদন প্রয়োজন। তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিজিবি দিয়ে ভারতের বিএসএফের কাছে থেকে নকশার অনুমোদন নেয়নি। এটা হয়ে গেলে নির্মাণকাজ শুরু হতে সময় লাগবে না।
রামগড় জেলা প্রশাসন জানায়, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসারসমেত বিভিন্ন লক্ষ্যে সেতুর এ দেশীয় অংশে রামগড় স্থলবন্দর হওয়ার কথা, এ জন্য ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৬ একর জমি অধিগ্রহণ সত্ত্বেও বন্দরটির নির্মাণ কাগজ-কলমে সীমিত। রামগড় পৌর মেয়র জানান, বন্দর নির্মাণ শেষ করার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। করোনা মহামারী, ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা এবং দু’দেশের সীমান্ত হওয়ার কারণে নকশা অনুমোদন করাতে দফায় দফায় বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক হচ্ছে। এজন্য পূর্বনির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেছেন, মৈত্রী সেতু-১ দিয়ে উ: পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের (৭ রাজ্য) বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে বাংলাদেশের সাথে। ভূমি জটিলতা মিটে গেলে ‘খুব দ্রুত’ স্থলবন্দরের কাজ শুরু হবে।’ তবে উপজেলা চেয়ারম্যান জানাননি, কবে সীমান্তের ভূমি জটিলতা মিটবে কিংবা কখন বন্দরের নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে। এ দিকে রিজিওন্যাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ জানান, ঠিকাদার প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিলেও কিছু জটিলতায় পুরোদমে কাজ করা যাচ্ছে না। এখানে চারতলা টার্মিনাল ও বন্দর ভবনসহ নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। প্রথম পর্যায়ে সরকারের নিজ অর্থায়নে ১০ একর এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভূমি উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে।
নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গত মাসে মৈত্রী সেতু ও অধিগ্রহণকৃত এলাকা দেখে গেছেন। তখন তিনি বলেছেন, অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, স্থলবন্দরের কাছে সেতুটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আমাদের আশা, এ স্থলবন্দর নির্মাণ করা হবে অবিলম্বে সব জটিলতা নিরসন করে। সর্বশেষ উল্লেখ্য, নির্ধারিত সময়ে তা চালু করা চাই।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement