বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে
- ০১ মার্চ ২০২২, ০০:০০
সরকারদলীয় কিছু নেতার সহযোগিতায় এবং স্থানীয় প্রশাসনের কয়েকজনের সাথে আঁতাত করে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর তীরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বর্ষাকালে প্রতি বছর নদীতীরবর্তী জনপদ ভাঙনের শিকার হচ্ছে। প্রতি বছর বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঘরবাড়ি, মসজিদ-মন্দির, আঞ্চলিক সড়ক ও স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বহু মানুষ বাপ-দাদার বসতভিটা হারিয়ে ছিন্নমূল হয়ে যাচ্ছেন। লক্ষণীয়, বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছরই পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেললেও ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয় না। নয়া দিগন্তের ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতার পাঠানো এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুকনো মৌসুমে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা জমি থেকে দিন-রাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। স্থানীয় প্রশাসন নীরব থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জমির মালিকরা। হুমকিতে পড়েছে যমুনা ফার্টিলাইজারের সার পরিবহনে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক। হুমকিতে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর সড়কের গোবিন্দাসী কুকাদাইর পর্যন্ত সেতু রক্ষাবাঁধ এবং বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস গাইড বাঁধ।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, যমুনা তীরবর্তী ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনে অর্জুনা ইউনিয়নের জগৎপুরা গ্রামের ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি অবৈধ বালুর ঘাট বন্ধে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি বলেছেন, জগৎপুরা এলাকায় রাতে বেআইনিভাবে বালু মাটি কাটা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক। অথচ ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসংলগ্ন উপজেলার অর্জুনা ইউনিয়নের কুঠিবয়ড়া থেকে নলীন বাজার পর্যন্ত সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েক শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইড বাঁধ নির্মাণ করেছে। কিন্তু সেই বাঁধের কাছ থেকে ভেকু (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে অবাধে বালু কাটা হচ্ছে। জগৎপুরা এলাকার ৫০০ মিটারের মধ্যে পাঁচটি বালুর ঘাট বসেছে। যমুনায় বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। এর মধ্যে প্রভাবশালীরা বাঁধের কাছ থেকে বালু তুলছেন। কিছু বলতে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় লোকজনকে মারধর করতে আসেন তারা। বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শুধু লোকদেখানো অভিযান চালানো হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অবস্থা এমন যে, নদীতে নতুন-পুরনো জেগে ওঠা চরে জোর করে বালু-মাটি কেটে নিচ্ছে একটি চক্র। বাধা দিতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয় তারা। প্রশাসনের দাবি, বালুর ঘাটে অভিযান চালানো হয়; পরে আবার বালুর ঘাট চালু করে স্থানীয় চক্র।
সবার জানা, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর যমুনা তীরবর্তী এলাকা এমনিতেই ভাঙনকবলিত একটি জনপদ। তার ওপর নদী থেকে ব্যাপকভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীভাঙন আরো তীব্রভাবে দেখা দিচ্ছে। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডও বলছে, এখানকার নদীভাঙন এবং নদীপাড়ের মাটি ক্ষয়ের অন্যতম কারণ বালু উত্তোলন। স্থানীয় অধিবাসীদের মতো আমাদেরও প্রত্যাশা, যমুনার সংশ্লিষ্ট এলাকায় উল্লিখিত বাঁধ ও স্থাপনা রক্ষায় নদীভাঙন রোধে স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের অন্যতম কারণ অবৈধ বালু উত্তোলন চক্র ভেঙে দিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবে। তা হলে প্রতি বছর নদীভাঙনের শিকার হওয়া থেকে স্থানীয় অধিবাসীরা রক্ষা পাবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা