‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ রক্ষা করতে হবে
- ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
বাংলাদেশের সুন্দরবন কেবল বিশ্বখ্যাত রয়েলবেঙ্গল টাইগারের আবাস নয়; এটা বিশ্ব ঐতিহ্য বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজও। একে বাঁচানো সবার কর্তব্য। সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এটি দেশের প্রাণ এবং এই বন বিভিন্ন সঙ্কটে কোটি প্রাণকে আগলে রাখছে যা বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বারবার প্রমাণিত হয়। লোনা পরিবেশের এই অসাধারণ সম্পদকে অবিলম্বে না বাঁচালে এ দেশ বাঁচবে না; জাতি বিপুলভাবে ক্ষতির শিকার হবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলের পাঁচটি জেলার অধিবাসীরা ২০০১ সাল থেকে এ বছরেও ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’রূপে পালন করে আসছে।
নয়া দিগন্তের পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতার এক প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সুন্দরবন তার বুক পেতে দেয়। আর সে এভাবে বাঁচিয়ে রাখে তার ‘সন্তান’দের। তবে এখন বনটি নিজেই ‘ভালো নেই’। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পানি বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক পরিবেশের দূষণ এবং চোরা শিকারি ও কাঠচোরদের কারণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বা প্রাণবৈচিত্র্য আজ বিপন্ন। সরকারের বন বিভাগ এই প্রেক্ষাপটে জানায়, আধুনিক প্রযুক্তিসহ টহল বনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। এ জন্য তারা ‘যথাসাধ্য’ চেষ্টা করছেন।
কর্তৃপক্ষের মতে, ২০০১ থেকে আজ পর্যন্ত সুন্দরবনে ৫৫টি রয়েলবেঙ্গল টাইগার মারা পড়েছে। এদের মাত্র ১৭টির মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলা চলে। চোরাগোপ্তা পন্থায় বাঘ মারা যেন সেখানে নিত্যকার ঘটনা। এ দিকে কিছু মৎস্যজীবী এ বনের মাছের সম্পদকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা একে তো অতিরিক্ত মাছ আহরণ করছে, তদুপরি সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ মারতে তৎপর। অপর দিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বৈরী প্রভাব পড়েছে গত কয়েক বছরে। উজানের মিঠা পানি কমে গেছে। অথচ ভাটিতে লোনা পানি বেড়েছে। তাই পূর্ণিমা ও অমাবস্যার সময়ে জোয়ারে সুন্দরবনের সর্বাধিক উঁচু স্থান, করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রেও ২-৩ ফুট পানি ওঠে। ফলে কয়েক প্রজাতির প্রাণীর ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষীয় সূত্র জানায়, কুমিরসহ নানা প্রকার বন্যপ্রাণী ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে বংশবিস্তার করে থাকে। কিছু জোয়ারের পানিতে তাদের প্রজনন বিঘিœত হয়।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেছেন, সুন্দরবনে পর্যটকদের চাপ হ্রাসসহ ‘সঙ্কটাপন্ন পরিবেশ’ভুক্ত এলাকায় নতুন কারখানা স্থাপন বন্ধ করা চাই। এ বনে লোকবল ও নৌযান বৃদ্ধি, বনের ওপর নির্ভরশীল এলাকার মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং চোরা শিকারি, পাচারকারী ও লুণ্ঠনকারীদের দমনের কঠোর ব্যবস্থা সুন্দরবন অনেকাংশে বাঁচাবে। অপর দিকে কর্তৃপক্ষ জানান, ‘আধুনিক স্মার্ট পেট্রোলিংসহ এ বনের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় সর্বাত্মক প্রয়াস চলছে। তা ছাড়া ১৫৭ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের আওতায় দ্রুত সব বন্যপ্রাণীর জরিপ আরম্ভ করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর পানির চাহিদা পূরণার্থে আগামী জুন মাসের মধ্যে ৮৪টি পুকুর খনন ও পুনরায় খনন শুরু হয়ে যাবে। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাঁটাতারের সাহায্যে বেড়া দেয়া হবে।’
দেশবাসীর সাথে আমাদেরও আশা, সুন্দরবন রক্ষায় যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে আর দ্বিধা বা কার্পণ্য করা হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা