‘সাগরচুরি’র দেশে যেন এটাই স্বাভাবিক
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন এবং এ ক্ষেত্রে বিশেষত মহাপ্রকল্প বাস্তবায়ন লক্ষণীয়। তবে নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও আত্মসাতের কবল থেকে আমরা আজো বের হয়ে আসতে পারিনি। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে পুকুরচুরি, নদীচুরি- এমনকি সাগরচুরির মতো অঘটনও।
নয়া দিগন্তের বরগুনা সংবাদদাতার এক রিপোর্টে এ জেলায় বেতাগীতে রাস্তা সংস্কারে পুকুরচুরির অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে এবার। সাথে প্রকাশিত ছবিতে রাস্তা বা সড়কের সংস্কার কার্যক্রমে ব্যবহৃত নিম্নমানের কিছু সামগ্রীর ছবি দেয়া হয়। উল্লেখ করা হয়েছে, বেতাগী উপজেলাতে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের মধ্যে যোগসাজশে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এসেছে। সরেজমিন অনুসন্ধানে এ অভিযোগের ‘সত্যতার প্রমাণ মিলেছে’ বলে দাবি করা হয়। উল্লেখ করা দরকার, এলজিইডির অধীনে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বয়াতি বাড়ি পুলঘাট থেকে বাঁধঘাট বাজার অবধি দুই হাজার ৬০০ মিটার দীর্ঘ সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। দরপত্রের প্রাক্কলন মোতাবেক ৮৯ লাখ টাকার অনিয়ম হয় বলে জানা যায়। এর পরিমাণ বেশিও হওয়া অসম্ভব নয়। এদিকে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, রাস্তা সংস্কারের ঠিকাদারি পেয়েছে বরগুনার একটি প্রতিষ্ঠান। তারা আবার এ কাজটার উপ-ঠিকাদারি দিয়েছে উপজেলা যুবলীগের একজন নেতার কাছে। ওই ঠিকাদারের সাথে এলজিইডির কোনো কোনো প্রকৌশলীর ‘চরম’ সখ্য আছে বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ মনে করে, এ কাজ মানসম্মত নয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন বলেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপর দিকে বরগুনার উল্লিখিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কথা, চুক্তির ভিত্তিতে কাজটি বিক্রি করা হয়েছে। এ দিকে শুরু থেকেই এলজিইডি কাজটির তদারক করছে দায়সারা গোছের- এমন অভিযোগ উঠেছে। রাস্তার কাজ নামেমাত্র হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, দু’দিকের সাপোর্ট হিসেবে রাস্তার পাশের মাটির কাজে বরাদ্দ পাঁচ লাখ ১৮ হাজার ১৫৬ টাকা। তবে অভিযোগ, মাটির কাজ হয়নি পাঁচ হাজার টাকারও। শর্ত মোতাবেক, দু’পাশে ইজিং ইট পাঁচ ইঞ্চি করে প্রস্থে বসানোর কথা। অথচ গোটা রাস্তায় তা মাত্র তিন ইঞ্চি। রোড সেফটি ওয়ার্ক ১১ জায়গায় ঢালাই বাবদ এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা খরচ করার কথা। কিন্তু তা স্থানীয় বালুতে পূর্ণ করা হয়েছে।
এসব ব্যাপারে এলজিইডির অভিযুক্ত প্রকৌশলী বলেন, ‘আমার নিজের তদারকির সময়ে তেমন কোনো অনিয়ম ঘটেনি।’ অভিযুক্ত ঠিকাদার বলেছেন, ‘লাইসেন্স দ্বারা পাওয়া কাজটি চুক্তির ভিত্তিতে বিক্রি করা হয়েছে। এরপর কাজের সব দায় উপ-ঠিকাদারের।’ তিনি স্বীকার করেন, তাদের বিক্রীত কাজটি পেয়েছেন যুবলীগের একজন পদধারী নেতা। ক্ষমতাসীন দলের বেতাগী উপজেলা যুব সংগঠনের অর্থ সম্পাদকের দাবি, ‘আমার কাজ শতভাগ সঠিক। কোনো ধরনের অনিয়ম করিনি।’ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলীর বক্তব্য, ‘রাস্তার কাজ আমরা দেখেছি। অনিয়ম থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ তবে বেতাগীর ইউএনও বলেন, ‘অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। উপঠিকাদার এ অফিসে এসে ভালো কাজের ওয়াদা করে গেছেন। তার অনিয়মের ওপর প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে।’
ছোট-বড় সব দুর্নীতি কঠোরভাবে দমন করা না হলে জাতি হিসেবে আমাদের ইমেজ উন্নত হবে না। চুরি মানে, চুরিই। সেটা পুকুর বা খাল, নদী বা সাগর যা-ই হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা