যথাযথভাবে তদন্ত করুন
- ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
দেশে এখন কর্তাব্যক্তিরা দিনকে রাত বললেও কেউ আর বিতর্কে জড়াতে চান না। কথাটা বলতে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে জেব্রার গণমৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের দেয়া ব্যাখ্যা জানার পর। মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ৯টি জেব্রার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ড বলেছে, চারটি জেব্রা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে এবং পাঁচটি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে মারা গেছে।
চারটি জেব্রা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছে- এই বক্তব্য আদৌ বিশ্বাসযোগ্য কি না সে প্রশ্ন এরই মধ্যে উঠেছে। প্রাণিবিদ্যার একজন অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ একটি জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, সাফারি পার্কে জেব্রাগুলো একটি নির্দিষ্ট বেষ্টনীর ভেতর থাকে। বেষ্টনীতে থাকা জেব্রারা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়ায় না। তিনি আরো বলেছেন, জেব্রার শিং নেই। তাই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হলেও গুরুতর আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা নেই। বেষ্টনীতে থাকা জেব্রার নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যুরও কোনো রেকর্ড নেই।
জেব্রাসহ বন্যপ্রাণীর জীবনাচরণ সম্পর্কিত বেশ কিছু ডকুমেন্টারি প্রায়ই দেখানো হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে। সেগুলো দেখলে বিশেষজ্ঞ ছাড়াও যেকোনো সাধারণ দর্শকও জানতে পারেন, তরুণ বন্য জেব্রাগুলো মাঝে মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নিজের প্রজননসঙ্গী বাছাই বা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য। এ সময় তারা পরস্পরকে কামড়ে দেয়, শরীর ও ঘাড় দিয়ে আঘাত করে, পেছনের পায়ে জোড়া লাথি মারে। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী জেব্রা জোরালো আঘাত পেতে পারে, জখম হতে পারে। কিন্তু সে আঘাত কখনোই গুরুতর হয় না। জেব্রাদের সঙ্ঘাতে মৃত্যুর ঘটনা বিশ্বে এই বাংলাদেশে প্রথম শোনা গেল। এই অস্বাভাবিক দাবি নিয়ে সাধারণ মানুষের কী বলার থাকতে পারে! আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে, এত কম সময়ের মধ্যে নয়টি জেব্রার মৃত্যু যেমন, তেমনি নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যুর দাবি, উভয়টিই রহস্যজনক। এ রহস্যের কিনারা হওয়া জরুরি।
খবরে জানা যায়, সবকটি জেব্রার মৃত্যুর কারণ জানতে বিভিন্ন গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষা চলছে। খাদ্যে বিষক্রিয়া বা বাইরে থেকে বিষ প্রয়োগের মতো বিভিন্ন সম্ভাব্যতা নিয়ে কর্তৃপক্ষের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ আছে বলে দাবি করা হয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো কিছু ঘটার আশঙ্কা করেছেন অনেকে। এসব বিষয় দ্রুত তদন্ত করে নিশ্চিত হওয়া উচিত। নিরাপত্তা বা খাবার পরিবেশনে কারো কোনো অবহেলাজনিত ত্রুটি আছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করবে বলে জানিয়েছে। এটি তাৎক্ষণিকভাবেই গঠন করা ও দ্রুত তদন্ত করা দরকার ছিল। বোঝা যাচ্ছে, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের কাছে খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি।
গত আট বছরে বাঘ, জিরাফ, ক্যাঙ্গারু, জেব্রা এবং দুর্লভ কিছু পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী মারা গেছে। একটি বাঘের মৃত্যু হয় গুইসাপ খেয়ে। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর একটি সাদা সিংহের মৃত্যুর কারণ দেখানো হয় অতিরিক্ত গরম। এর আগেও নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ ও রোগাক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকটি জিরাফের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এসব ঘটনা সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যুর সাথে একধরনের রহস্যময়তা জড়িয়ে আছে বলে মনে করার সঙ্গত কারণ আছে। অনুপুঙ্খ তদন্ত করে রহস্যটা ভেদ করা হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা