২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
কিশোর অপরাধের আরেক বলি

অনলাইন গেম সম্পূর্ণ বন্ধ হোক

-

ক্রমবর্ধমান কিশোর অপরাধের ডিজিটাল রূপের সহিংসতার ধরন সবার মাঝে ভীতি ও উদ্বেগ সঞ্চার করছে। মুঠোফোনে পাবজি খেলা নিয়ে কেবল ঝগড়াই নয়, এর পরিণতিতে মানিকগঞ্জে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার অভিযুক্ত কিশোরের সিঙ্গাইর উপজেলার বাড়ি ঘেরাও করেছেন নিহতের স্বজনসহ গ্রামের লোকজন। জাতীয় পত্রপত্রিকার খবরে এ কথা জানা যায়।
এ দিকে, উল্লিখিত বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টায় পুলিশ বাধা দিয়েছে। এতে গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ফলে তিনজন পুলিশ আহত হওয়ার অভিযোগ এসেছে। অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা জানানো হয়েছে। অবশ্য দু’জন স্বজনসমেত অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করা হয়েছে। নিহত রাজুর বয়স ১৪ বছর। হত্যাকারী হিসেবে আটক কিশোর একই গ্রামের ছেলে। নিহত কিশোর কেজি স্কুলে পড়ত বলে জানা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুঠো ফোনে পাবজি খেলা নিয়ে দুই কিশোরের ঝগড়ার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার সাঁঝের বেলায় নিহত কিশোর রাজুকে সুকৌশলে তার গ্রামের পাশে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রূপারচর নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগে প্রকাশ, সেখানে কালিগঙ্গা নদীতীরের কাশবনে রাজুকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয়া হলে সে লুটিয়ে পড়ে। তখন ঘাতক কিশোর তাড়াতাড়ি চলে যায় সেখান থেকে।
অপর দিকে, নানা স্থানে খোঁজ করেও রাজুকে না পাওয়া গেলে তার স্বজনরা অবশেষে সেই কিশোরের বাড়ি যান। তবে সেখানেও রাজুর কোনো সন্ধান মেলেনি। এ দিকে, এলাকাবাসী রাত ৯টায় রাজুকে অচেতন দেখে তাকে প্রথমে স্থানীয় ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাসপাতালে এবং অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার সকালে সে প্রাণ ত্যাগ করে। এটা জেনে আত্মীয়স্বজনসহ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দুপুরে বহুলোক অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করে। খবর পেয়ে ছুটে যান অতিরিক্ত এসপি এবং স্থানীয় ওসিসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ সূত্রের খবর : পাবজি খেলা কেন্দ্র করে কিশোরটিকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
এবার মহামারীর দরুন দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে না পেরে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র নানা ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে ডিজিটাল অপরাধে মেতে ওঠার ব্যাপারে আগেই হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অবশেষে সেপ্টেম্বর মাসে খুলে দেয়া সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, এ প্রবণতার অবসান হয়নি। কিশোর অপরাধের ইতি টানতে হলে পাবজিসমেত সব ধরনের অনলাইন গেম পুরো বন্ধ করে দেয়া উচিত বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত।


আরো সংবাদ



premium cement