কেন আজো নেই সংযোগ সড়ক?
- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:২১
শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের নমকান্দি গ্রামের রাস্তার একটি খালের উপর সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এর উভয় পাশে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। আজো তা তৈরি না করায় কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না জনসাধারণের। ফলে সরকারিভাবে জনগণের অর্থে নির্মিত সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘ দিন। একটি জাতীয় দৈনিকে এর শরীয়তপুর প্রতিনিধির পাঠানো খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সাথে ছাপানো ছবিতে দেখা যায়, সংযোগ সড়কের অভাবে মানুষ বাধ্য হয়ে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে সেতুসংলগ্ন গভীর খাদ পার হচ্ছে। স্কুলের শিশু ছাত্রছাত্রীকেও এভাবে পারাপার হতে হয়।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, উদ্বোধন করার পর ছয়টি বছর অতিক্রান্ত হলেও এ সেতুর কোনো সুফল আজ পর্যন্ত লাভ করা যায়নি। উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস জানিয়েছিল, ‘শিগগিরই’ সেতুটির কার্যকারিতার জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেয়া হবে। কিন্তু এরপর দুই বছরেও জরুরি কাজটি না করায় ছয়টি গ্রামের শত শত বাসিন্দা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর দফতর সূত্রে প্রকাশ, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এক কোটি ৬০ লাখ টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত হলেও সংযোগের অভাবে তাতে জনগণের কোনো উপকার হয়নি। দুই বছর আগে প্রবল বর্ষণের দরুন পদ্মার পানির তোড়ে সেতুর উভয় পাশের সংযোগ সড়কই ভেঙে গিয়েছিল। এর কারণস্বরূপ অভিযোগে জানা যায়, সঠিক তদারকি না থাকায় বালু দিয়ে দায়সারা হয়েছিল এ ক্ষেত্রে। সেতুর পশ্চিম পাশে বিস্তীর্ণ চরের আবাদি জমি এবং সেখানে কয়েক শ’ পরিবারেও বাস করছে। তাদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য আসতে হয় সেতুটির পূর্ব পাশের প্রাইমারি ও হাইস্কুলে। শিক্ষার্থী ও অসুস্থসহ হাজার মানুষ পথটি দিয়ে চলাচল করে থাকে। অথচ তাদের ব্যবহার করতে হয় বিপজ্জনক বাঁশের সেতু, যার কোনো রেলিং বা নিরাপত্তা নেই। যান্ত্রিক যানবাহন এটা ব্যবহার করতে পারে না। এলাকার কৃষিজীবীদের বক্তব্য, আমাদের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই কৃষক। ফসল বিক্রির জন্য উপজেলা ও জেলা সদরে নিয়ে যেতে হয়। তবে এখনো এ সেতু ব্যবহার করা সম্ভব হয় না বিধায় ঘুরে যেতে হয় ১০ কিলোমিটার পথ। ফলে সময় আর অর্থ গচ্চা দিতে মানুষজন বাধ্য হচ্ছে। এতে ফসলের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। এত কষ্ট করা সত্ত্বেও ফসলের দাম সে অনুপাতে কম। তাই কৃষিজীবীরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন, দু’বার সেতুটির এক পাশে ব্যক্তিগত খরচে সাঁকো বানিয়ে দিয়েছি। তবে অতিবর্ষণে মাটি সরে যাওয়ায় সেতুর দু’পাশের অবস্থা শোচনীয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যান জানেন। এলজিইডির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানান, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জানেন। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে লিখিতভাবে বলা হবে।
উন্নয়ন জনগণের জন্য। তাই অপচয়-অনিয়মসহ সব ধরনের দুর্নীতি বন্ধ করে সর্বত্র অবকাঠামো এমনভাবে নির্মাণ করা উচিত যাতে তা মানুষের কাজে লাগে। না হয়, উন্নয়ন কাগজকলমে সীমাবদ্ধ থাকবে এবং দেশের সাধারণ মানুষ এর কোনো সুফল পাবে না। আলোচ্য সেতুর সংযোগ সড়ক দু’পাশেই অবিলম্বে তৈরি করা হোক। প্রকৃত উন্নয়নের স্বার্থে সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সমন্বয় নিশ্চিত হবে বলেই সবার প্রত্যাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা