২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ শাবান ১৪৪৬
`
জামালপুরের তিনটি বৃহৎ রুগ্ণ শিল্প

দরকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

-

দেশে চার শতাধিক শিল্পকারখানা বন্ধ। ২০২৪ সালের জুন মাসে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানান। এর পরও বেশ কিছু গার্মেন্ট ও চামড়াশিল্প প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের কল-কারখানা বন্ধ হয়েছে মূলত স্বৈরাচারী সরকারের শিল্পবিরোধী নীতি এবং নির্বিচার লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে। বেকার হয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পুরোপুরি ব্যর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনকালে কার্যত শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিয়ে পুরো দেশকেই পরনির্ভরশীল করে তোলার একটি সুপরিকল্পিত গোপন ষড়যন্ত্র চালানো হয়েছে। তার প্রমাণ নানা সময়ে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। বাংলাদেশে পাটশিল্প যখন পুরোপুরি ধ্বংসের পথে তখন প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত এলাকায় একের পর এক পাটশিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার ঘটনা বাংলাদেশের মানুষকে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করেছে; কিন্তু সরকার দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসেনি। বরং জাতিকে পঙ্গু ও পরনির্ভর করার সবরকম চেষ্টা চালিয়েছে।
গতকাল নয়া দিগন্তের এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এক জামালপুর জেলাতেই তিনটি বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ অথবা দুস্থ অবস্থায় চলছে। এর মধ্যে একটি হলো এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি। দ্বিতীয়টি সরিষাবাড়ীর আলহাজ জুটমিল, যেটি দেশের অন্যতম বৃহৎ পাটকল। তৃতীয়টি দেওয়ানগঞ্জের জিলবাংলা চিনিকল। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন মিলটি দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল। বিগত সরকার চালু করলেও মিলের কাঁচামাল তথা আখের সরবরাহ পাওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে এ মিলের উৎপাদন সম্ভবত দুই-এক দিনের মধ্যে আবারো বন্ধ হয়ে যাবে। এমনই তথ্য জানা গেল স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীর কাছ থেকে। মিলটির শ্রমিক সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। আর চিনি পরিবহন থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট আরো প্রায় হাজারখানেক মানুষ জীবিকার জন্য এই মিলের ওপর নির্ভরশীল।

আলহাজ জুটমিল বন্ধ থাকায় বেকার হয়েছেন পাঁচ হাজার শ্রমিক। বেকার হয়ে পড়েছে পাট কেনাবেচা, পরিবহন, সরবরাহ ও কারিগরি নানা কাজে জড়িত বিরাট সংখ্যক মানুষ। একই অবস্থা আড়াই হাজার শ্রমিকের যমুনা ফার্টিলাইজারেরও। এই মিল ঘিরে সরিষাবাড়ীর তারাকান্দি এলাকার যমুনার চরাঞ্চল পুরোদস্তুর শিল্পনগরে পরিণত হয়। ১৩ মাস বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি চালু হলেও মিলটি চলছে ধুঁকে ধুঁকে। এখনো এটি প্রায় রুগ্ণ, সমস্যাজর্জর। মিলের উৎপাদন সক্ষমতা আড়াই হাজার মেট্রিক টন থেকে কমে এখন এক হাজার ২০০ টনে নেমেছে। অথচ দেশে ইউরিয়ার চাহিদা কমেনি; বরং দিন দিন বাড়ছে। আওয়ামী আমলে বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার অধীন কারখানাগুলোর অব্যবস্থাপনা অনিয়ম কিংবদন্তির মতো। সারের চালানসহ পরিবহন ঠিকাদারের ট্রাক গায়েব হয়ে গেলেও কর্মকর্তাদের হুঁশ হয়নি। যে গোডাউনে বিপুল পরিমাণ সার থাকার কথা, দেখা গেছে সেটি শূন্য। কারখানার পরিচালনাও হয়েছে এভাবেই।
আওয়ামী স্বৈরাচারের পতনের পর এখন সবকিছু শৃঙ্খলার সাথে পরিচালনা করা হবে এই আশাবাদ জনগণের। শিল্প-কারখানায় যোগ্য ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হলে সেগুলো আবারো লাভজনক করে তোলা সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস। সরকার প্রতিটি খাতে যোগ্য ও দক্ষ লোকদের নিয়োগ দেবে এটিই কাম্য।


আরো সংবাদ



premium cement
ইংল্যান্ডের বিদায়, আশায় আফগানিস্তান পাটজাত পণ্যে ভারতের অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্কের সমাধান চায় বিজেএসএ আমরা ক্ষমতায় গেলে পুঁজিবাজারকে ধারণ করব : আমীর খসরু প্রহসনের কোনো নির্বাচনে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ অংশ নেয়নি : আব্দুল আজিজ হাওলাদার ১-৩ গোলে হার বাংলাদেশের ব্যাংকে কত টাকা আছে জানালেন নাহিদ ইসলাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের বিক্ষোভ আজ ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে রাখাইনে স্বীকৃতি পেতে পারে আরাকান আর্মি ভোরে পুলিশের টহল কার্যক্রম পরিদর্শন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ছাত্রদের নতুন কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা বেসরকারি শিক্ষার্থীদের ইংল্যান্ডকে বিদায় করে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল আফগানিস্তান

সকল