দুর্নীতিবাজ চক্র শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিন
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
শুধু অর্থ উপার্জন করাই ছিল পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের ক্ষমতায় থাকার উদ্দেশ্য। ফলে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ নেয়। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, তারা মসজিদ বানানোর নামে অবৈধ অর্থ হাতানোর এক উপায় করে নিয়েছিল। এ খাতে সৌদি সরকার বিপুল অর্থ অনুদান দিতে রাজি হয়েছিল। তবে হাসিনা সরকারের অর্থ কামানোর বিষয়টি টের পেয়ে প্রকল্প থেকে সরে যায় রিয়াদ। এর পরও স্বৈরাচারের দোসররা দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
২০১৪ সালের ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ‘মডেল মসজিদ’ নির্মাণের প্রস্তাব করে। নির্বাচন-উত্তর হাসিনা সরকার ৮৪২ কোটি টাকার তহবিল অনুমোদন করে। সহযোগী একটি দৈনিক জানাচ্ছে, পরে বরাদ্দ বাড়িয়ে প্রথম দফায় আট হাজার ৭২২ কোটি ও দ্বিতীয় দফায় ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। একপর্যায়ে হাসিনা সরকার এর সাথে সৌদি সরকারকে যুক্ত করার উদ্যোগ নেয়। রিয়াদ সফরকালে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলে তাতে সায় দিয়ে আট হাজার ১৭০ কোটি টাকা অনুদান দিতে রাজি হন সৌদি বাদশা। ততদিনে হাসিনা সরকারের দুর্নীতির দুর্নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। রিয়াদ প্রকল্প ব্যয় যাচাইয়ে নিজস্ব সূত্রের ওপর নির্ভর করে। এতে টের পেয়ে যায় মূলত সরকারঘনিষ্ঠদের অবৈধ অর্থ উপার্জনে সুবিধা করে দিতে বাংলাদেশে সরকার যেসব প্রকল্প নিচ্ছে ‘মডেল মসজিদ’-এর একটি। তাই রিয়াদ প্রকল্প থেকে সরে যায়। এর পরও হাসিনা সরকার প্রকল্পটি এগিয়ে নিতে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ জোগান দিতে থাকে। প্রকল্পের অধীনে ৫৬৪টি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ইতোমধ্যে ৩০০ মসজিদ উদ্বোধন হয়েছে, ৫০টি উদ্বোধনের অপেক্ষায়। নির্মাণ চলছে ১৮০টির। ৩৪টির নির্মাণ স্থগিত রয়েছে।
মসজিদকেন্দ্রিক একটি সমাজ গড়ার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তাই মসজিদের স্থান নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি কেনার নামে অর্থ হাতিয়ে নিতে একটি দুর্নীতিবাজ চক্র যেখানে সেখানে স্থান নির্ধারণ করে। জেলা-উপজেলা শহরের কেন্দ্রে উপযুক্ত জায়গার বদলে যেখানে জমির দাম কম ও দুর্গম এলাকাকে স্থান হিসেবে বেছে নেয়া হয়। এমন জায়গাও নির্ধারণ করা হয়, যেখানে রাস্তাও নেই। যেমন- স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নিজের জমি বেশি দামে বিক্রি করতে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ১০০ গজের মধ্যে মডেল মসজিদের স্থান নির্ধারণ করেন। স্থানীয়রা এর বিরোধিতা করলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। বিভিন্ন জেলায় এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়া হলেও মসজিদ নির্মাণের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। প্রকল্পের অর্থ হাতিয়ে নিতে বহু জায়গায় দ্রুত সময়ে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নির্মিত কিছু মসজিদের ইতোমধ্যে পলেস্তারা খসে পড়েছে, কিছু মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ইতোমধ্যে কিছু মসজিদ খানিকটা অবস্থায় রয়েছে।
সংসদ সদস্য উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রশাসনের একটি চক্র মিলেমিশে এই দুর্নীতি করেছে। মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের দুর্নীতির বিষয়ে বিস্তৃত তদন্ত হোক। জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা