২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`
স্বামীকে গুম করে স্ত্রীকে পণবন্দী বানিয়ে ধর্ষণ

এমন নরপিশাচদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

-


জবাবদিহি ছাড়া সঙ্গতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। কাজ যত গুরুত্বপূর্ণ তার জবাবদিহি তত বেশি। পতিত স্বৈরাচারী সরকারের নীতি ছিল এর বিপরীত। ক্ষমতা নিষ্কণ্টক করতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরঙ্কুশ আনুগত্য চাইত। বিনিময়ে অনিয়ম দুর্নীতি ও অনাচার করতে অবাধ সুযোগ করে দেয়া হতো। সব বিভাগে একটি শ্রেণী গড়ে উঠেছিল সরকারের প্রতি অনুগত কিন্তু নিজের কাজকর্মের প্রতি স্বেচ্ছাচারী। আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর মধ্যে এদের দৌরাত্ম্য ছিল সবচেয়ে বেশি। বাস্তবতা হলো- ফ্যাসিবাদী জমানায় গুম খুনসহ সীমাহীন পীড়ন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল।

এ গ্রুপের সদস্যরা আয়নাঘর গোপন কারাগার সৃষ্টি করে। সেখানে বন্দী করে মানুষের ওপর নৃশংস নির্যাতন চালানোর বহু খবর হাসিনা পালানোর পর প্রকাশ পেয়েছে। এবার জানা গেল এক অনাচারকারী র্যাব সদস্যের কথা। স্বামীকে গুম করে পণবন্দী বানিয়ে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করতো এই নরপিশাচ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, আলেপ নামের এ কর্মকর্তা ওই নারীকে রোজাদার অবস্থায় ধর্ষণের মতো নির্মমতা চালায়।

সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া গোপন কারাগারে দেখা গেছে, মানসিক পীড়নে তাদের যেমন ছিল নানা কৌশল, তেমনি শারীরিক নির্যাতনে ছিল অভিনব সব যন্ত্রপাতি। বর্ণবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল এবং স্বাধীনতাকামী কাশ্মিরিদের ওপর বর্বরতার যে অপকৌশল অবলম্বন করা হয়, এখানেও তেমন অনুসরণ করা হতো। ইলেকট্রিক শক, উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা, দিনের পর দিন চোখ বেঁধে রেখে বন্দীদের শারীরিক মানসিকভাবে নিঃশেষ করে দেয়া হতো। এসবের সাথে জড়িতরা যাকে তাকে ধরার স্বাধীনতা ভোগ করত। আলেপের মতো একটি গ্রুপ সব বাহিনীতে তৈরি হয়েছিল। তারা সরকারবিরোধীদের গুম খুন হত্যার অবাধ স্বাধীনতা পেয়েছিল। এ সুযোগ নিজেদের খেয়ালখুশি চরিতার্থে কাজে লাগিয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের। যে কারণে পুলিশ ও র্যাবে কাজ করা কর্মকর্তাদের অনেকের কাছে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

কুখ্যাত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এ সুযোগে অপরাধীরা মিশে গেছে সাধারণের মাঝে। র্যাবের আলেপও ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টে পুলিশে পদ বাগিয়ে নেয়। সাড়ে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতায় ছিল। এ সময়ে অগণিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ জড়িত। আলেপের মতো যারা গুম খুন ও ধর্ষণের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত তাদের সংখ্যাও শত শত। সামাজিকমাধ্যমে এদের পীড়ন কর্মকাণ্ডের বহু প্রমাণ ঘুরে বেড়ালেও তাদের বিচারের আওতায় আনায় ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। এদের মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে দিলে দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় এরা হুমকি হয়ে উঠবে।
স্বামীকে গুম করে রোজাদার স্ত্রীকে ধর্ষণকারী আলেপকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একইসাথে গুম খুনসহ মানবতার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর যারা গুরুতর অপরাধ করেছে; তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দ্রুততার সাথে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করার সুপারিশ গণঅভ্যুত্থানকে হাইজ্যাক করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা চলছে : আমীর খসরু বাকৃবিতে ধারালো অস্ত্রসহ আটক ৫ চুয়াডাঙ্গা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ইমাম নিহত জমি পাহারার মতো ভোটকেন্দ্রও পাহারা দিতে হবে : সিইসি ঈশ্বরগঞ্জে নবগঠিত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মিটির বিরোধীতা করে মশাল মিছিল সরকারে থেকে কিংস পার্টি করলে দেশের মানুষ মেনে নেবে না : ফজলুর রহমান সোনাগাজীতে যুবদলের সাথে যুবলীগের সংঘর্ষে আহত ১০ সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেফতার আরো ৭৬৯ মানিকগঞ্জে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু, আহত ১ অনিয়ন্ত্রিত কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ জরুরি

সকল