প্রয়োজন নিরাপদ বাসের নিশ্চয়তা
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিশ্ববাসী সঠিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারের পক্ষেও কেউ কার্যকরভাবে দাঁড়াননি। ফলে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের গোড়াপত্তনের পর থেকে একচেটিয়া নিজ বাসভূমি থেকে উৎখাত হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনিদের ওপর নতুন করে গণহত্যা শুরু করে ইসরাইল। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের সাথে সাথে যুদ্ধবিরতি হলেও গাজা থেকে অধিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পরবর্তীতে নানামুখী চাপে এ ঘোষণা থেকে কিছুটা সরে এলেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি ট্রাম্প ও আমেরিকার নির্মম মনোভাব স্পষ্ট। তারা ওই এলাকার মানুষদের জোর করে সরিয়ে দিয়ে আগ্রাসী ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বেশি আগ্রহী।
ট্রাম্প এমন এক সময় গাজার লোকদের সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা করলেন; যখন ১৫ মাসের সামরিক হামলায় এলাকাটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। ২০২৩ সালের অক্টোবরে আক্রমণের আগের এবং বর্তমান গাজার ধারণকৃত ছবির তুলনা থেকে তা স্পষ্ট। হামলার প্রথম ছয় মাসে গাজার ৯০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। হাসপাতালের নথি বলছে, গাজায় ৪৬ হাজার ৭৮৮ জন মানুষ মারা গেছেন। প্রকৃত সংখ্যা ৭০ হাজার হতে পারে । আহত হয়েছেন এক লাখ ১০ হাজারের বেশি। তাদের মধ্যে ২৫ শতাংশ খোঁড়া পঙ্গু কিংবা শারীরিক অবস্থা এতটা অবনতি হয়েছে যে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন না তারা।
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর গাজার বাস্তুহারারা আবার ফিরছেন। তাদের মধ্যে নতুন করে বেঁচে থাকার উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় সফররত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আরবসহ বিশ্বনেতাদের অনেকে নিন্দা জানিয়েছেন। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। সমাধান খুঁজতে গিয়ে সমস্যা আরো জটিল না করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের নিজ দলের লোকেরাও এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তারা দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তীব্র সমালোচনার মুখে ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা সুর পাল্টে ফেলেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও দাবি করেছেন, সাময়িক সময়ের জন্য গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মূলত পুনর্গঠন ও ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে এ প্রস্তাব করা হয়। অথচ ট্রাম্পের প্রস্তাব ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেছিলেন, গাজা খালি করার পর সেখানে অবকাশ যাপন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণের সাথে মার্কিন নেতৃত্ব সরাসরি জড়িত। ইসলাইল যতবার মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে ততবার মার্কিন প্রশাসন তাদের সমর্থন দিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘে নিন্দা প্রস্তাবও আনা যায় না যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে।
অপরাপর বৈশ্বিক শক্তি কখনো ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষায় শক্ত অবস্থান নেয়নি। ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয় পরিচয় আরো বেশি অসহায় করে তুলেছে। অথচ মুসলিম বিশ্বও তাদের অধিকার আদায়ে একাট্টা হতে পারেনি। আরব জাতীয়তাবাদী পরিচয়ও নিজেদের রক্ষায় কাজে আসছে না। অন্যদিকে ইহুদি পরিচয়বাদী ইসরাইলকে এককভাবে আশকারা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে আরব মুসলিম দেশগুলোর একাট্টা হওয়া প্রয়োজন। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়ন নয়, তাদের সেখানে নিরাপদে বসবাসের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা